আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হেফাজতি শফী, পরিবর্তনডটকম না সাংসদ পাপিয়ার মিথ্যাচার?

কবি হতে চেয়েছিলাম... তেঁতুলতত্ত্বের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শফী বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে দাবি করেন, নারী দেখলে পুরুষের মুখে লালা আসে তথ্যটি বিজ্ঞানসম্মত। তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত অনলাইন পত্রিকা 'ডেইলি মেইল' প্রতিবেদন থেকে। ২০ জুলাই (শনিবার) ২০১৩ সালের বাংলাদেশ প্রতিদিনে তা প্রকাশিত হয় (http://www.bd-pratidin.com/2013/07/20/6591)। ১৬ জুলাই অনলাইন সংবাদমাধ্যম পরিবর্তন ডটকম 'সুন্দরী মেয়ে দেখলে লালা ঝরবেই' শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় (Click This Link)। যাতে বলা হয়, সম্প্রতি আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক গবেষণার পর বলেছেন, 'সুন্দরী মেয়ে দেখলে লালা ঝরবেই।

' বিখ্যাত জার্নাল, ‘ইভোল্যুশন এন্ড হিউমেন বিহেভিয়্যর’ এর সাম্প্রতিক সংখ্যায় এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বলে তারা জানায়। অথচ আল্লামা শফীর দাবি, তেঁতুলতত্ত্বের বক্তব্যটি দিয়েছিলেন দেড় থেকে আড়াই বছর আগে। আর পরিবর্তন ডটকম বলছে, আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাটি হয়েছে সম্প্রতি। তাহলে মিথ্যাচার করছে কে? হেফাজতি শফী না পরিবর্তন ডটকম? মিথ্যার চিত্রনাট্যে ফাঁক থাকার মতো, আড়াই বছর আগের বক্তব্য আর সাম্প্রতিক গবেষণার গড়মিল হওয়া স্বাভাবিক। প্রথমত মিথ্যাটা বলেছে, পরিবর্তন ডটকম।

অতিচালাকির ফাঁদে পড়েছে তারা। পরিবর্তন যে ডেইলি মেইলের লেখাটির হুবহু অনুবাদ করেছে, তা ডেইলি মেইলের লেখাটি পড়লে বুঝা যায় (Click This Link)। যদিও লেখার উৎস হিসেবে ডেইলি মেইলের নাম দেয়নি পরিবর্তন। তারা ধরা খেয়েছে এখানেই। আল্লামা শফীর কথাই ঠিক, অনলাইন নিউজ পেপার ডেইলি মেইলের স্বাস্থ্য পাতায় তা আছে।

তবে লেখাটির লিঙ্কে গেলে প্রকাশের তারিখটি আসে না। আসে যেদিন খোলা হয়, সেদিনের তারিখ। তবে লেখাটিতে ‘এখন’, ‘সাম্প্রতিক’ এ ধরনের শব্দ যোগ করে লেখা হয়েছে। তাই মনে এটি এ সময়ের গবেষণা। আসলে এটি ২০০৩ সালের গবেষণা, যা তখনি ‘ইভোল্যুশন এন্ড হিউমেন বিহেভিয়্যর’-এ প্রকাশিত হয় (Click This Link)।

সহজেই আঁচ করা যায়, ডেইলি মেইল তখনি তা প্রকাশ করে। যাই হোক, মনে কিছু প্রশ্ন এসেছে, সেগুলো ঝারি এবার। ১. হেফাজতি শফী আর পরিবর্তনের সাফাই কী কাকতাল? নাকি তাদের মধ্যে কোনো যোগসাজশ আছে? থাকলে আমার কোনো সমস্যা নেই। ২. হেফাজতি শফী ১০ বছর আগে প্রকাশিত গবেষণাটি কবে দেখেছিলেন? তিন বছর আগে কী হাটহাজারীতে ইন্টারনেট সহজ ছিলো? ৮-১০ বছর আগে ঢাকায় কী ইন্টারনেট সহজ ছিলো? ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটিতে কতটুকু দক্ষ হেফাজতি শফী? ডেইলি মেইলের অনলাইনে দেখলে, তাকে অবশ্যই দেড়-আড়াই বছর আগে দেখতে হবে, কারণ তার তেঁতুলতত্ত্বের বক্তব্য তার আগের। ৩. হেফাজতি শফী বক্তব্যে যে, বিধর্মীদের গবেষণা ও পত্রিকা দেখে তেঁতুলতত্ত্ব দিচ্ছেন, তা কী শ্রোতাদের জানিয়েছিলেন? নাকি কোরান-হাদীসের আলোকে বয়ান করছিলেন? ৪. হেফাজতি শফী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'এর আগে অনেক কবি-সাহিত্যিক নারীদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে অনেক কবিতা ও গল্প লিখেছেন।

তাদের বিষয়ে কেউ মুখ খোলেনি। কিন্তু আমি উদাহরণ হিসেবে একটা কথা বলায় এটা আমার অপরাধ হয়ে গেছে! আমাকে গ্রেফতারের দাবি তুলছে। মনে হচ্ছে আমি হুজুর হয়ে একটা অপরাধ করে ফেলেছি। ' কবি-সাহিত্যিকরা কী নারীকে অবমাননাকর কিছু বলেছেন? হুজুররা কী নারীদের নিয়ে অশালীন কথা বলার বিশেষ অধিকার সংরক্ষন করেন? ৫. হেফাজতি শফী বাংলাদেশ প্রতিদিনে আকারে-ইঙ্গিতে স্বীকার করে নিয়েছেন, বর্তমানে নয়, তিনি আড়াই বছর আগে, ভিডিওতে প্রকাশিত বক্তব্যটি দিয়ে থাকতে পারেন। তাহলে মিথ্যাচার করছে কে- হেফাজতি শফী না বিএনপি সাংসদ পাপিয়া? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.