বছর চারেক আগের কথা।
তখন আমি চলতি-ফিরতি ফেইসবুকার। মানে যেখানে সেখানে মোবাইল বের করে ফেইসবুক নোটিফিকেশন চেক করি। বন্ধুদের আড্ডার মাঝখানে বসেও থাকি ফেইসবুকের নীল জগতে। চলত কমেন্ট, রিপ্লাই আর চ্যাটিং।
বন্ধুদের কেউই আমার এই ফেইসবুকপ্রীতিতে বিরক্তি প্রকাশ করত না, কেবল একজন বিদগ্ধ বন্ধু ছাড়া।
খোঁজ : দ্য সার্চ করে জানতে পারলাম, আমার এই পন্ডিত বন্ধুটির ফেইসবুক অ্যাকাউন্টই নেই। ফেইসবুক ব্যবহার করতে দেখলে বন্ধুটি এমনভাবে তাকাতো আমার দিকে, যেন তার চোখের সামনে এক স্তুপ তাজা মনুষ্য বর্জ্য! নাকে রুমাল দেওয়া ছাড়া এখন তার চলবেই না! একদিন নিজে থেকেই তাকে একটা আইডি খুলে দিব বলে প্রস্তাব রাখলাম। এতে তিনি অত্যধিক রেগে গিয়ে ঘোষণা দিলেন, তিনি জীবনেও ফেইসবুক ব্যবহার করবেন না। এবং এটা যে কত বড় বে-শরিয়তি কাজ, সেটা আমাকে বোঝাতে লাগলেন।
চুপ করে শুনেই যাচ্ছি।
তিন মাস পর আমার ফ্রেন্ড রিকুয়েস্টের পেন্ডিং লিস্টে একটা রিকুয়েস্ট দেখে চোখ আটকে গেল। আমার সেই ফেইসবুক বিদ্বেষী বন্ধুর ছবি সমেত একটা ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট! দেরি না করে আমি অ্যাকসেপ্ট করলাম। পরের আড্ডায় ফেইসবুক প্রসঙ্গ আসতেই লজ্জায় মাথা নত করে ফেলে আমার বিজ্ঞ বন্ধু বললেন, 'লজ্জার কিছু নাই। ফেইসবুককে আসলে যতটা খারাপ ভেবেছিলাম, ততটা খারাপ না।
আসলে ভালো-খারাপ নিজের কাছে। '
এক সময় তার ফেইসবুক আসক্তি দেখে আমিই ইতস্তত বোধ করতে লাগলাম। সকাল-দুপুর-বিকেল-সন্ধ্যা-নিশি স্ট্যাটাসে স্ট্যাটাসে ভরে ফেলছে বন্ধুটি।
ভাবছেন এত পুরনো কথা কেন বলছি?
আমার সেই বন্ধুটি এখন ব্লগারদের ফাঁসি চায়। ব্লগ বন্ধ করে দিতে চায়।
ব্লগ যে খুবই ফালতু একটা জায়গা, এটা তার বিভিন্ন স্ট্যাটাস না পড়লে আমি জানতেই পারতাম না! যদিও আমি অনেক পুরনো ব্লগপ্রেমী, তবু তার কাছ থেকেই আমাকে জানতে হচ্ছে, ব্লগ একটা বে-শরিয়তি জিনিস।
তবে আমি খুবই আশাবাদী। আশাবাদী কি বলছি! আমি নিশ্চিত, তিন মাসের মধ্যেই আমার এই বন্ধু ব্লগিংয়ে নেমে পড়বে। এবং আবারো লজ্জাবনত চিত্তে বলবে, 'আসলে....। ' ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।