বর্তমান সময়ে অন্যতম আলোচিত নাম রিমান্ড। পত্রিকা খুলেই চোখে পরে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন। এটি যতটা না হচ্ছে ন্যায় বিচার নিশ্চত করার জন্য হয় তার চেয়ে বেশী ব্যবহৄত হচ্ছে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে অথবা পুলিশ এর অসৎ কোন উদ্দেশ্যে। বিরোধী দলের নেতদের রিমান্ডে নেয়ার প্রবণতা বিগত বছর গুলোতে রাজনৈতিক সংস্কৄতিতে পরিনত হয়েছে। রিমান্ডে নেওয়ার জন্য পুলিশ এই মর্মে প্রাথনা করেন যে, আসামী আমলযগ্য অপরাধ এর সঙ্গে জড়িত বিধায় রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন।
যদিও ফৌজদারী কাযবিধি ১৬৭(২) ধারা অনুসারে এ ধরনের জিজ্ঞাসাবাদের কথা উল্লেখ নাই। তারপরও এটা প্রথাতে পরিনত হয়েছে। কখন ম্যাজিট্রেট রিমান্ড প্রার্থনা মঞ্জুর করবেন বা কখন তা প্রত্যাখান করবেন তার জন্য সঠিক দিক নিদেশনা না থাকায় ম্যাজিট্রেট ও পুলিশ উভয়ই তা অপব্যাবহারের সুযোগ পান। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ নির্বাহী বিভাগ বা কোন ব্যাক্তি বিশেষের মাধ্যমে অতি উৎসাহিত হয়ে ১৬৭ এর অধীনে অপ্রয়োজনীয় রিমান্ড প্রার্থনা করেন।
“ব্লাষ্ট” এর মামলায় হাই কোর্ট বিভাগ বলেন যে রিমান্ড সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭,৩০,৩১,৩২,৩৩ এবং ৩৫ এর পরিপন্তি।
বিশেষত আমাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৫(৪) এ খুব স্পট করেই বলা আছে যে “অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যাক্তিকে নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা যাবে না”। সু্তরাং রিমান্ডে নিয়ে অত্যাচার, আঘাত বা অমানবিক নির্যাতন সংবিধান পরিপন্তি। কোর্ট আর বলেন যে, জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতে পারে শুধু জেলহাজতে, কোন পুলিশ হেফাজতে নয়। রিমান্ড মঞ্জুরের পূর্বে অবশ্যই তাকে সরকারি ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে এবং রিমান্ড শেষ হওয়ার পর আসামী যদি নির্যাতনের অভিযোগ করেন তাহলে ম্যাজিট্রেট পুনরায় ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করাবেন। অভিযোগ সত্য হলে দন্ডবিধি আইনের ৩৩০ ধারা মোতাবেক রিমান্ড আবেদন কারির শাস্তি দেওয়া যাবে।
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ অবশ্যই কোন কাচের দেয়াল বিশিষ্ট, যার এক দিকে গ্রীল থাকবে এমন ঘরে করতে হবে(৫৫ DLR ৩৭৫)। এই মামলাটি বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে। ন্যায় বিচার নিশ্চত করা ও অপরাধ তদন্তের জন্য রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ অবশ্যই দরকার, কিন্তু তা ব্যাক্তি বা গোয্ঠী বিশেষের স্বার্থে ব্যবহৄত হবে তা কারো কাম্য নয়। সভ্য সমাজে সংবিধান বিরোধী এ পুলিশি নিযাতন বন্ধে সরকার আন্তরিক ভূমিকা পালন করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।