লগ ইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন

আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হুশিয়ারি এবং কোটা বিরোধী আন্দোলন

নিরপেক্ষ নই,সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে । পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারলাম বিসিএস পরীক্ষাসহ সব পরীক্ষায় কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সব ধরনের চাকরি থেকে অযোগ্য করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । তিনি বলেন, ‘যারা ভাঙচুর করছে, তারা কখনোই চাকরি পাবে না। এদের ছবি তুলে ভিডিও করে পিএসসিতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। ভাইভা পরীক্ষার সময় ভিডিও ফুটেজ ও ছবি দেখে তাদের শনাক্ত করে ডিসকোয়ালিফাই করতে বলে দিয়েছি ।

এদের যেন চাকরি দেয়া না হয় পিএসপিকে তা বলে দিচ্ছি । সরকারি কিংবা অন্য কোনো ধরনের চাকরিতে যেন এরা ঢুকতে না পারে সে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। এরা সরকারি চাকরি পাওয়ার অধিকারও রাখে না। ` মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এর দ্বারা কি বুঝালেন, তার মানে এই যে পিএসসির মত একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চলে । আর কাগজে কলমে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হলে বাস্তবে পিএসসি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনা ।

প্রশাসনকে দলীয়করন করার জন্য পিএসসির মাধ্যমে দলীয় ক্যাডারদের নিয়োগ দেওয়া হয় । তাইতো বলি পিএসসির কর্মকর্তারা সব আওয়ামী দলীয় কেন । কোটা বিরোধী আন্দোলন হঠাৎ করে একদিনে হয়নি । এই আন্দোলন বঞ্চিতদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ মাত্র । দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি, নিয়োগ পরিক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, লিখিত পরিক্ষায় উত্তীর্ন হওয়ার পরও দুর্নীতির কারনে ভাইভা থেকে বাদ পরা, ৩২তম স্পেশাল বিসিএস,সোনালী ব্যাংক ,কৃষি ব্যাংক,আইসিবিসহ বিভিন্ন সরকারি চাকরিতে একতরফা ভাবে শুধু কোটাধারীদের আবেদন করার সুযোগ রেখে মেধাবীদের বঞ্চিত করা, বিসিএসসহ সব সরকারি চাকরিতে মেধার চেয়ে কোটা থেকে অধিক হারে নিয়োগ দেওয়া ইত্যাদি ।

এইসব কারনে ৩৪তম বিসিএসের ফলাফল প্রকাশের পর থেকে ন্যায দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয় বঞ্চিত মেধাবীরা । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের অভিবাবক । উনার উচিত ছিল আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলা । তাদের দাবি-দাওয়া গুলো কি তা শোনা । কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বঞ্চিত মেধাবীদের কথা না শোনেই তাদেরকে ভাঙচুরের দায়ে অভিযোগক্ত করে সরকারি কিংবা অন্য কোনো ধরনের চাকরিতে যেন এরা ঢুকতে না পারে সে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন ।

প্রধানমন্ত্রীর মতে এরা সরকারি চাকরি পাওয়ার অধিকারও রাখে না । এটা কি অভিবাবক সুলব আচরণ হল ? ন্যায দাবি আদায়ের আন্দোলনকারী মেধাবীদের যদি সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত করা হয় তাহলে ছাত্রলীগের যারা বোমাবাজি,টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, হত্যা-খুন,লোটপাটসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত তারা কিভাবে সরকারি চাকরি পায় ? ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্তা নেয়া হয়না ? জানি এই প্রশ্নের উত্তর পাবনা । শাসক গোষ্টির কাছে এইসব প্রশ্নের উত্তর চাইতে নেই । তাহলে উনারা মাইন্ড করেন। উনারা মাইন্ড করলে তো বিপদ ! গত নির্বাচনের সময় আওয়ামীলীগ যুব সমাজকে প্রভাবিত করার জন্য বিভিন্ন রকম প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার মধ্য ছিল বেকার মুক্ত করা এবং প্রতি ঘরে একজন করে সরকারি চাকরি দেওয়া ।

এই প্রতিশ্রুতির কতটুকু তারা বাস্তবায়ন করতে পেরেছে তা আগামী নির্বাচনে অবশ্যই যুব সমাজ বিচার করবে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে মনে রাখা উচিত সাধারণ মানুষের ভোটে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেছে । আবার ক্ষমতায় আসতে হলে সাধারণ মানুষেগুলোর ভোট দরকার হবে । আর বঞ্চিত মেধাবীরা কিন্তু এই সাধারণ মানুষগুলোর কারো ভাই,কারো সন্তান । অতএব কাউকে চাকরি থেকে বঞ্চিত করার কথা বলার আগে একবার ভেবে দেখা উচিত ।

পরিশেষে একটা কথাই বলবো, ৭১ সালে মহান স্বানতাযুদ্ধে জাতির বীরসন্তান মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য । বাংলাদেশ এগিয়ে নিতে হলে সবার আগে দরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনুযায়ী একটি বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্তা । আর কল্যাণমূলক উন্নত আধুনিক রাষ্ট্র হিশাবে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে দাড় করাতে চাইলে অবশ্যই একটি দুর্নীতি মুক্ত দক্ষ প্রশাসন দরকার । আর দক্ষ প্রশাসনের জন্য দরকার মেধাবীদের মুল্যায়ন । দেশের মঙ্গলের স্বার্থে কোটা প্রথার বাতিল করা প্রয়োজন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.