আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পদ্মা রিসোর্ট

কদিন আগে পদ্মা রিসোর্টে একটা ট্যুর দিলাম। কোথাও বেড়াতে যাবার আগে আজকাল ব্লগ খুঁজি, পুরো ভ্রমণটা অনেক সহজ হয়ে যায়। পদ্মা রিসোর্ট নিয়ে তেমন কিছু না পাওয়ায় ফিরতে ফিরতে চিন্তা করলাম যা যা দেখলাম লিখে ফেলি। বাসে যেতে হলেঃ গুলিস্তান থেকে মাওয়া-র দিকে অনেক বাস আছে, সবগুলোই মনে হয় ভাঙ্গাচোরা। আমি গেছি গাংচিল পরিবহনে, কারণ পদ্মা রিসোর্ট পর্যন্ত যায় কেবল এটাই।

এই বাস মনে হইলো আবার দুই কোয়ালিটির, পুরান বাস আর ১০:১ অনুপাতে নতুন বাস আর, যদিও ভাড়া একই। সিএনজি ড্রাইভার এর ভাষ্যমতে এই রুটে বাসের রাজা ইলিশ, কিন্তু বাইরে থেকে দেখতে কোনমতেই লোকাল বাসের চেয়ে ভালো মনে হলো না। এইগুলাতে মনে হয় মাওয়া পর্যন্ত গিয়ে বাকীটা সিএনজি/বাসে আসতে হয়। গাবতলী থেকে ঢাকার জ্যাম পার হওয়া এবং লৌহজং পৌছায় রিসোর্ট এর ঘাটে ওদের স্পেশাল (এবং ফ্রী) ট্রলার এর জন্য অপেক্ষা করা --- এই সব মিলায় মোট আড়াই ঘন্টার জার্নি ধরে নেয়াই ভাল। ভাড়াঃ সকাল-সন্ধ্যা বা সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত কটেজ প্রতি ২৫০০।

পুরো একদিন হলে ৩৫০০। প্রতি কটেজে দুই তলা মিলায় মোট তিনটে সিঙ্গেল বেড, অবশ্য মাটিতে কম্বল বিছায়ও আরো তিন-চার জন থাকা যেতে পারে। বৃহস্পতি, শুক্র, শনি এই তিন দিন রিসোর্ট প্রায় ভর্তি থাকে, তাই অবশ্যই পান্থপথের মোড়ে ওদের অফিসে(কনসেপ্ট টাওয়ার) গিয়ে বুকিং দিয়ে আসা উচিত। আমার সাথে ৬-৭ জনের একদল এসে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে ফিরে গেছে, কোন রুমই ফাঁকা পায় নাই। আশেপাশে আসলে আর তেমন কোন ঘোরার জায়গা নেই, রিসোর্টেই মোটামুটি সারাটা সময় কাটাতে হবে।

কটেজে টিভি নাই দেখে প্রথমে আঁতকে উঠেছিলাম, অবশ্য পরে বুঝছি টিভি না থাকায় ভালই হইছে। কারণ বাড়িগুলো কাঠের হওয়ায় টিভির ব্যবস্থা থাকলে হয়তো এই শুনশান নীরব পরিবেশের বারটা বাজায় দিত লোকজন। খাওয়া দাওয়াঃ এককথায় গলাকাটা। লাঞ্চ/ডিনার ৩৫০, সকালের নাস্তা ১০০। অথচ আহামরি কিছু না আর বিরক্তিকর ব্যাপার হলো ফিক্সড মেনু, চাইলেও অন্য কিছু পাওয়া যায় না।

অন্য মেনু ( যেমন খিচুড়ি/চাইনিজ/বার-বি-কিউ) নিতে হলে ঢাকা থেকে আসার সময় অর্ডার দিতে হয়(বার-বি-কিউ প্রতি কেজি ৫০০)। আমি নদী পার হয়ে আশেপাশে অন্য কিছু খুঁজলাম, কিন্তু মোটামুটি মানের কোন দোকানও পেলাম না। স্থানীয় একজনের ভাষ্যমতে, পদ্মা রিসোর্ট থেকে রিকশা দিয়ে যেতে প্রায় ঘন্টাখানেক দূরে উপজেলা। সেইখানে মনে হয় অপেক্ষাকৃত ভালো হোটেল আছে। গাড়ি নিয়ে ১০-১৫ জনের গ্রুপে গেলে তিন চার হাজার টাকার মোটামুটি লাঞ্চ এর বদলে ওইদিকে ঢুঁ মারা যেতে পারে।

সব মিলায় ভালোই ... সবচাইতে অসাধারণ লাগছে সন্ধ্যার পর হু হু বাতাসের মধ্যে পা উঠিয়ে বারান্দায় বসে থাকতে ... শুধু এই একটি কারণেই ট্যুর সার্থক। আমার তাই মনে হইছে গরম থাকবেনা এই রকম সময় পদ্মা রিসোর্ট ভ্রমণ ভাল লাগবে। ২৪ ঘন্টার বদলে আধবেলার ট্যুর দিতে চাইলে সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত প্ল্যান করা সবচাইতে অপটিমাম। আমি আবার কখনো গেলে কমপক্ষে ৮-১০ জন নিয়ে যাবার ইচ্ছে, ২৪ ঘন্টার প্ল্যান করতে না পারলে বিকালের মধ্যে পৌছাব, সন্ধ্যায় সাম্পান ভ্রমণ (১০ জন হলে ঘন্টা প্রতি ১০০০ টাকা মোটেও বেশী না), তারপর রাতের খাবার শেষে বর্ষাকাল হলে নদীর ধারে বসে আর শুকনা মৌসুম হলে আশেপাশে হাঁটাহাঁটি করে রাত পার করে পরদিন আবার এই কোলাহলের নগরীতে ... । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.