আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সালাউদ্দিনের পক্ষে শেষ সাফাই মঙ্গলবার

রোববার বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেষ সুযোগ হিসেবে মঙ্গলবার সাফাই সাক্ষ্যের দিন ঠিক করেন।
এদিন তৃতীয় সাক্ষীর জেরা শেষে পরবর্তী সাক্ষ্য নেয়ার কথা থাকলেও আসামি পক্ষ সাক্ষী উপস্থিত করতে না পারায় শেষ বারের মতো এ সুযোগ দেয়া হয়।
সালাউদ্দিন কাদেরের পক্ষে তালিকাভুক্ত পাঁচ সাফাই সাক্ষীর মধ্যে ইতোমধ্যে তিন জন সাক্ষ্য দিয়েছেন; তিনি নিজে, তার বন্ধু নিজাম আহমেদ এবং এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও তার খালাতো ভাই কাইয়ুম রেজা চৌধুরী।
তালিকায় থাকা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক শামীম হাসনাইনকে এখনো আদালতে হাজির করেনি আসামি পক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালের আদেশে বলা হয়, রোববার পরবর্তী সাক্ষী হাজির না করলে আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষ্য নেয়া শেষ বলে ঘোষণা করা হবে।


কিন্তু রোববার দ্বিতীয় দিনে কাইয়ুম রেজার জেরা শেষ হলেও আর কোনো সাক্ষী হাজির করেনি আসামি পক্ষ। এমনকি আসামী পক্ষের আইনজীবীরা সময় চেয়েও কোনো আবেদন করেননি।
তাই সাক্ষ্যগ্রহণে আসামি পক্ষকে আর কোনো সুযোগ না দেয়ার পক্ষে মত দেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম।
তখন ট্রাইব্যুনাল আসামি পক্ষের কাছে চতুর্থ সাফাই সাক্ষীকে হাজির না করার এবং সময় চেয়ে কোনো আবেদন না করার কারণ জানতে চান।
সালাউদ্দিনের আইনজীবী ফখরুল ইসলাম দুদিনের সময় চেয়ে মৌখিক আবেদন করলে লিখিত আবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়ে মঙ্গলবার পর‌্যন্ত সময় দেয় ট্রাইব্যুনাল।


এর আগে প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন তৃতীয় সাফাই কাইয়ুম রেজার জেরা শেষ করার পর ফখরুল ইসলাম ৫৫টি নথি দাখিল করেন।
নথিগুলোর মধ্যে সালাউদ্দিনের শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সনদের নকল, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যক্তির দেয়া হলফনামা, ছবি, বই এবং তিনটি সাধারণ ডায়েরির কপি রয়েছে।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আসামিপক্ষের দাখিল করা নথিগুলো গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল। শুনানিতে অংশ নেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম এবং আসামি পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম।
জেরায় কাইউম রেজার উদ্দেশ্যে সুলতান মাহমুদ সীমন বলেন, “সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ১১ দফার আন্দোলনে অংশগ্রহণ নিয়ে আপনি যা বলেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য।


কিন্তু সাক্ষী নিজের বক্তব্যকে সত্য বলে দাবি করেন।
এছাড়াও ১৯৬৯ গণআন্দোলনে শহীদ আসাদ কোন ছাত্র সংগঠনের সদস্য ছিল তা বলতে না পারায় প্রসিকিউটর দাবি করেন, সাক্ষী তার জবানবন্দিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার বিষয়ে যা বলেছে তা অসত্য, ভিত্তিহীন।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে কাইউম রেজা বলেন, “তবে আমাদের সামনেই সে (আসাদ) মারা গেছে। ”
এর আগে তিনি তার সাক্ষ্যে বলেছিলেন, “শহীদ আসাদকে যখন গুলি করা হয় তখন আমি, সালমান এফ রহমান ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী একটি গাছের পেছনে, নিজাম আহম্মেদ শহীদ আসাদের দুই ফিট দূরে এবং খায়রুল বাশার সেইসময় রায়ট ভ্যানের উপরে ছিল। ”
তবে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী কী কী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে তা জানেন না বলে জেরায় বলেন কাইউম রেজা।


এর আগে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ প্রসিকিউশনের ৪১ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেয়।
এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার কাছে অন্য চার সাক্ষী মৃত জ্যোৎস্না পাল চৌধুরী, মৃত জানতি বালা চৌধুরী ও মৃত আবুল বশর এবং ভারতে থাকা বাদল বিশ্বাসের দেয়া জবানবন্দিকেই সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
২০১০ সালের ২৬ জুন হরতালের আগের দিন রাজধানীর মগবাজার এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করা হয়। ওই মামলায়ই ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভোরে বনানীর এক বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে ১৯ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে গ্রেপ্তার দেখানোর পর ৩০ ডিসেম্বর তাকে প্রথমবারের মতো আদালতে হাজির করা হয়।


গতবছরের ৪ এপ্রিল সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সুনির্দিষ্ট ৭২টি ঘটনায় ২৩টি অভিযোগ আনা হয়। ওই বছরের ১৪ মে থেকে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।