সারাদিন কষ্ট করে রোজা রাখার পর, ইফতারে মুখরোচক ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া হয়। মজা লাগলেও এ ধরনের খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো না। এ ব্যাপারে একটু সতর্ক হওয়া দরকার। রমজানের এই মাসে কী রকম খাবার খাওয়া উচিত বা উচিত না-- এ সম্পর্কে জানিয়েছেন বারডেম হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ ও খাদ্যবিদ্যাবিশারদ শামসুন নাহার নাহিদ।
সর্বপ্রথম এ সময় বেশি করে পানি খেতে হবে।
সারাদিন যেহেতু খাওয়া হচ্ছে না তাই রোজা খোলার পর থেকে সেহরি পর্যন্ত আড়াই থেকে তিন লিটার পানি সবার জন্য প্রযোজ্য। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের শরবত, বাজারের বিভিন্ন ফলের গুঁড়া জুস গুলিয়ে কিংবা বিভিন্ন ধরনের বোতলের জুস, লেবুর শরবত, লাচ্ছি, বোরহানি, মিল্কশেইক পান করা ভালো।
এখন আমের সময়। তাই ম্যাংগোশেইক খেতে পারেন। তবে বোতলজাত বিভিন্ন ধরনের লাল পানীয় খাওয়া থেকে দূরে থাকুন।
এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য একদম ঠিক না।
এবার ইফতারের ভারী খাবারের পর্বে আসা যাক। মনে রাখবেন, এই সময় যত কম তৈলাক্ত আর লবণাক্ত খাবার খাওয়া যায় ততই ভালো। ইফতারের জন্য অনেক ভাজাপোড়া তৈরি করা হয়। যারা এসব খেতে খুব বেশি পছন্দ করেন তাদের জন্য উপদেশ হচ্ছে সবকিছু পরিমাণমতো খান।
বেশি খাওয়াটা স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক না। কয়েকটি পদ থেকে অল্প অল্প করে খাওয়া ভালো। যেমন বেগুনি, পেঁয়াজু ২-৩টি। চপ ১টি। আর ছোলা-মুড়ি পরিমাণ মতো।
যাদের অতিরিক্ত ওজন তারা ইফতারে জুস, লাচ্ছি, বোরহানি ইত্যাদি তরল খাবার খান। আর স্যুপ, টক-মিষ্টি দই, চিঁড়া, মুড়ি, ফ্রুটসালাদ-- এ ধরনের খাবার খাওয়া উচিত। তাদের জন্য তো ভাজাপোড়া বলা যায় একদমই বাদ।
অনেকে আছেন যারা ইফতারে ভাত, রুটি খেতে পছন্দ করেন। এতেও কোনো সমস্যা নেই।
তবে অনেক না খেয়ে পরিমাণ মতো খান। গুরুপাক বা অতিরিক্ত তেল মসলাযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো।
বেশিরভাগই ইফতারের পর রাতে ভাত খেয়ে থাকেন। তাদের জন্য পরামর্শ হল-- ইফতারি একটু হালকা করে খান। ঘণ্টা দুই পরে ভাত খেয়ে নিন।
ইফতারে ভরপেট খেয়ে আবার রাতে ভাত খেলে নিজেই অস্বস্তি বোধ করবেন। আর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার ২ থেকে ৩ ঘণ্টা আগে খেয়ে ফেলা ভালো।
সেহরিতে ভাত, রুটি, দুধ-চিঁড়া, মুড়ি বা ভাত-মাছ-সবজি খাওয়া যেতে পারে। ইফতারের পর রাতের খাবার বেশি খেয়ে ফেললে সেহরিতে ভারী কিছু না খেয়ে দুধ-কলা-চিঁড়া এসব খেতে পারেন।
যাদের স্থুলদেহ বা যারা হৃদরোগ, গাউট বা কিডনি রোগে ভুগছেন-- তাদের খাওয়ার ব্যাপারে বেশ সতর্ক থাকা উচিত।
বিশেষ করে যারা গাউট বা কিডনি রোগে ভুগছেন তারা তৈলাক্ত খাবার, ডাল, হালিম বা বেসন দেওয়া খাবার একদমই খাবেন না।
তবে চালের গুঁড়া কিংবা আটাজাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে।
ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য একটাই উপদেশ, রোজার আগে যেভাবে কিংবা যেসব খাবার খেতেন রোজার সময়ও একই রকম খেতে হবে। অনেকে মনে করেন রোজা আছি তাই ইফাতারে একটু বেশি মিষ্টি শরবত বা একটু বেশি খাবার খাই। এটা করা খুবই খারাপ।
তাদের জন্য সবসময় একই রকম নিয়মই চলবে।
রোজার সময় খাবারের ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকলে সুস্থ থাকে দেহ। আর শরীর ভালো থাকলে সুন্দরভাবে পুরো মাস সিয়াম সাধনা করতে পারবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।