আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অবহেলা আর দায়সারাভাবে বার্ডে উদযাপিত হল কিংবদন্তী পুরুষ ও পল্লী উন্নয়নের স্বপ্নদ্রষ্টা ড. আখতার হামিদ খানের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী

সময়কে কাধে নিয়ে চলো বন্ধু বিস্তারিত- কুমিল্লা নিউজ ২৪ডট কম কুমিল্লার আপামর মানুষের আবেগ অনুভূতি যে প্রতিষ্ঠানটির সাথে জড়িত সেটি কুমিল্লা বার্ড। কুমিল্লার মেহনতী মানুষের বন্ধু ড. আখতার হামিদ খানের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী আজ। এই উৎসবকে ঘিরে মানুষের মাঝে কৌতুহল থাকলেও বার্ডের অবহেলা ও দায়সারা ভাব হতবাক করেছে কুমিল্লার সচেতন প্রতিটি মানুষকে। দিবসটি উদযাপনে বার্ড একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে বার্ড অডিটরিয়ামে। আলোচনা সভায় উপসি’তি ছিল খুবই নগন্য।

অডিটরিয়ামের অর্ধেক অংশই ছিল দর্শক শূণ্য। অনুষ্ঠানে বার্ডের মহাপরিচালক মোঃ আতাউর রহমানের অনুপস্থিতি দিবস উদযাপনে বার্ডের অবস্থানকে পরিস্কার করেছে। এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে সেখানে কর্মরত অনেক গৃহীত ও অবহেলিত। সূত্র জানায়, সকাল ১০টায় বার্ড অডিটরিয়ামে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে বার্ড। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বার্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীর কাশেম।

অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন কুমিল্লার প্রবীন রাজনৈতিক এডভোকেট আহম্মদ আলী, কেটিসিসিএ ও দিদার সমিতির সভাপতিবৃন্দ। দুপুরে বাদ জুমা বার্ড মসজিদে মিলাদ অনুষ্ঠিত হয় তার স্মরণে। বার্ড এর প্রতিষ্ঠাতা যিনি তার আজ জন্মদিনটিতে দুটি ফরমাল অনুষ্ঠান থাকলেও এসব আয়োজনে বার্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অধিকাংশই ছিলেন অনুপস্থিত। বার্ডের যে কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অডিটরিয়াম পরিপূর্ণ থাকলেও আজ সেখানে ছিল শূণশান নীরবতা। বার্ডে ঢুকে তার মনে হয়নি আজ এপ্রতিষ্ঠানটির জনকের জন্মদিবস।

কোথাও ব্যানার, সাজসজ্জা নেই। নেই আলোক প্রজ্জলন। অথচ যে কোন জাতীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানেই বার্ড তা করে থাকে। ড. খানের জন্মবার্ষিকীকে ঘিরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হতে পারতো। শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্কণ, সাধারনজ্ঞান প্রতিযোগিতা, কিশোর তরুণদের জন্য রচনা ও বার্ডের বিভিন্ন সামাজিক ও সমবায়ী কার্যক্রম নিয়ে বক্তৃতা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা, বর্ণাঢ্য র‌্যালী, ড. খানের জন্য স্মারকগ্রন্থ ইত্যাদি।

অনুষ্ঠানে বার্ডের মহাপরিচালকের অনুপস্থিতি সবাইকে হতাশ করেছে। আজকের এ দিবসটিকে ব্যাপকভাবে উদযাপনে কেন এতো অবহেলা তার সঠিক কোন উত্তর দিতে পারেননি বার্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীর কাশেম। তিনি বলেন, বার্ড যথাযথ মর্যাদার সাথে ড. খানকে স্মরনে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে। বার্ডের এক কর্মচারী জানান, বার্ডে প্রতি জুমার নামাজের পর মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়, ড. খানকে স্মরণ করে আজকের মিলাদ বিশেষ তাৎপর্য রাখে না। বিশিষ্টজনদের মতে বার্ড তার আদর্শ হারিয়ে ফেলেছে।

যে মিশন ও ভিশনকে সামনে রেখে বার্ড প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ড. আখতার হামিদ খান আজ বার্ড এর অপরিপক্ক ও অদূরদর্শী নের্তৃত্বের ফলে তা আজ লাইনচ্যুত। মাইক্রোক্রেডিটের সূতিকাগার বার্ড, এ প্রতিষ্ঠানেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ড. ইউনুস। কিন্তু বার্ড এ সত্যটিকে প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে মাইক্রোক্রেডিটের জনকের কৃতিত্বটি নিয়েছেন ড. ইউনুস। বার্ডের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও বিভিন্ন আয়োজনে ড. খানকে অবহেলা এখন বার্ড কর্তৃপক্ষের নিকট খুব স্বাভাবিক।

ড. খানের বানী কুমিল্লার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের অফিসে সাজানো থাকলেও বার্ডে তা চোখে পড়ার মতো নয়। বার্ডের শিশুরা জানেনা আজ ড. খানের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। কে এই ড. আখতার হামিদ খান? তাকে কি নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। নতুন প্রজন্ম হয়তো কিছুদিন পর এ উপলব্দিই করবে। বার্ড ড. আখতার হামিদ খানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করলে বার্ডের সমবায় ও অন্যান্য কার্যক্রম যেমন গতিশীল হতো তেমনি ড. আখতার হামিদ খানের অসামান্য অবদানের এ বার্ড পেত বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্মীকৃতি ও পুরস্কার।

অতীতে যা পেয়েছে তা অতীতের কার্যক্রমে বর্তমানে বার্ডের ২/১টি প্রকল্প ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোন অবদান নেই। গত ২৭মে বার্ডের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীও পালিত হয় সাদামাটাভাবে। কেন এতো অবহেলা তা জানতে চায় কুমিল্লাবাসী। যে মানুষটি অফিস শেষে সাইকেল চেপে ঘুরে বেড়াতেন কুমিল্লার বিভিন্ন পাড়াগায়ে, খোজতেন মানুষের দারিদ্রতার কারন, ফসলের মাঠের খবর নিতেন, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার সেই কিংবদন্তী মানুষটি ড. আখতার হামিদ খান। বার্ডের সুন্দর সাজানো প্রাকৃতিক পরিবেশ যার নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখতে বার্ড পরিদর্শনে আসে হাজারো মানুষ সে প্রতিষ্ঠানটির যা অর্জন তার পুরোটাই ড. খানের মেধা ও মননের ফসল।

বর্তমান অনুষদ সদস্যরাই কতটুকু জানেন ড. খান সম্পর্কে তা নিয়ে আজ যথেষ্ট সন্দেহ সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। বার্ডের প্রকল্প নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা না থাকলেও প্রতিদিন বিভিন্ন কোর্সের ক্লাস নিয়ে মাথা ব্যাথা চরমে। বিশ্লেষকদের মতে এ অবস্থা চলতে থাকলে হয়তো কোন এক সময় বার্ড থাকবে কিন্তু মুছে যাবে ড. আখতার হামিদ খানের অসামান্য অবদান। অথচ বার্ড ভূমিকা নিলে এ মানুষটি পেতে পারতো নোবেল পুরস্কারের মতো আন্তর্জাতিক সম্মান। বার্ড তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতিবছর গুনীজন সংবর্ধনা দিতে পারতো সমবায় ও সামাজিক স্বীকৃতির জন্য।

কুমিল্লাবাসীর প্রত্যাশা বার্ড ড. খানকে যথাযথ মর্যাদা দিবে এবং বার্ডের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।