হতাশা আর দু;খ ব্যাথা যাদের দেখে থমকে দাঁড়ায় আজকে তাদের খুব প্রয়োজন, বিশ্ব এসে দু হাত বাড়ায়।
আমার ছোট বোন তখন টু কি থ্রী তে পড়ে। পরীক্ষায় প্রশ্ন এসেছে পুলিশের কাজ কি? সে লিখে এসেছিল চুরি-ডাকাতি করা। বই এর পরিভাষায় এর উত্তর হওয়ার কথা ছিল চোর-ডাকাত ধরা। এটা নিয়ে আমরা খুব হাসাহাসি করলাম, শুধু তাই নয় অনেক দিন পর্যন্ত এটা বলে ক্ষেপানো হত তাকে।
কিন্তু আজ নতুন করে জানতে ইচ্ছা করে আসলেই পুলিশের কাজ কি?
একজন পিকেটার এর বুকের উপর পুলিশের পা দেখে অনেকেই খুশীতে বাগ বাগ। জামাত কে এভাবেই শাস্তি দিতে হবে। শুধু ব্যাক্তি বিশেষের মন্তব্য বা মতামত নয়, এর পক্ষে সাফাই গেয়ে প্রতিবেদনও এসেছে কোন কোন পত্রিকায়।
তবে এর পরিণতি কি? ফ্রাংকেস্টাইনের গল্প অনেকেই জানেন। আস্কারা দিয়ে এই পুলিশ কে গুন্ডা বাহিনীতে পরিণত করলে তার ফল ভোগ করতে হবে সবাই কে।
কদিন আগে সাভারে যে ছয়জন ছাত্র কে পিটিয়ে মেরে ফেলা হল সেখানে পুলিশ চাইলে তাদের বাচাতে পারত। পুলিশ তা করেনি। মিলন নামে নির্দোষ তরুন কে ধরে জনতাকে দিয়ে নির্বিকারে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। লিমনের পায়ে গুলি করে তাকে চির জীবনের জন্য পংগু করে দেয়া হয়েছে। বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ জয়নুল আবেদীন ফারুক যেভাবে পিটিয়েছে পুলিশ তা সভ্যতার কোন মানদন্ডে পড়ে?
এরা কেউই তো জামাত/শিবির ছিল না।
তাহলে এরা কেন পুলিশের আক্রোশের শিকার হলো?
আপনি যে রাজনৈতিক মতেরই হোন না কেন, আসুন এই ঘটনা প্রতিবাদ করি। আজ যদি আপনি/আমি এদের প্রতিবাদ না করেন, একদিন আপনার/আমার কাছের কেউ পুলিশি নির্মমতার শিকার হবে না এটা নিশ্চত করে বলতে পারেন?
পুলিশের ব্যাবহার একটি দেশের সভ্যতার মানদন্ড। আর বর্তমান সময়ে মিডিয়ার কল্যাণে বিশ্বব্যাপী সবাই তা দেখতে পাচ্ছে। বিশ্ববাসী এই সব দেখে আমাদের জাতিকে কিভাবে মুল্যায়ন করবে তা কখনো ভেবেছেন? এই গ্লোবালাইজেশনের যুগে বিশ্বের সামনে আমাদের পজিটিভ ইমেজ খুব দরকার। পুলিশের এই ব্যাবহার আমাদের উলটো চিত্র তৈরি করছে।
অবশ্য এর দায় পুরোটায় পুলিশের নিজের উপর নয়। এর দায় বর্তায় সরকারের উপর, আরো বিশেষ ভাবে বললে সরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপর।
পুলিশ আবশ্যই যে কোন অরাজকতা দমন করবে, জান-মালের নিরাপত্তা বিধান করবে তবে অহেতুক বাড়াবাড়ি করবে না। আমরা চাই, এমন একটি সুসভ্য পুলিশ বাহিনী, যার উপর দেশের ধনী-গরীব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, শহরের-গ্রামের সবাই আস্থা রাখতে পারবে, বিপদে নির্দিধায় যেতে পারবে পুলিশের কাছে। মানুষের জীবন হবে নিরাপদ।
এই সিদ্ধান্ত আমাদেরই নিতে হবে যে আমরা কি সভ্যতার দিকে এগুবো না পিছনের দিকে যাব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।