যা লিখি, হয়ত কিছুই লিখি না। যা লিখব হয়ত অনেককিছুই লিখব। আসল কথা হলো, গল্প ছাড়া কিছুই লিখতে পারি না সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে?এই প্রশ্নটি হুমায়ূন আজাদ স্যার বহুদিন আগেই আমাদের সামনে উথাপন করেছিলেন। সেই নষ্ট আসলে কারা, কিভাবেই বা তাদের অধিকারে যাবে, আমি আমার ক্ষুদ্র মস্তিস্ক দিয়ে বুঝে উঠতে পারতাম না, এখনো পারি না; তবে বোধশক্তি আগের থেকে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন অনেক কিছুই বুঝতে পারি, তারপর মনে হয় যদি বোধজ্ঞানহীন হলেই ভালো করতাম; দূষিত পরিবেশে কষ্টদায়ক মুহূর্তগুলো পার করার হাত থেকে বেঁচে যেতাম।
ঘটনা #১#- সম্প্রতি ঘটে যাওয়া রুমানা মঞ্জুরের বর্বোরচিত ঘটনার নায়ক কিংবা খলনায়ক সাইদকে বাঁচানোর জন্য একশ্রেনির মানুষ উঠেপড়ে লেগে যায় এবং সাইদের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র। আমি তখন খুব ছোট্ট একটা জরিপ চালাই। আমার চারপাশের মানুষের উপর। মোট, ২৭ জনকে আমি এক-ই প্রশ্ন করি।
প্রশ্নটা ছিল, রুমানা ম্যাডামের হাজবেন্ডের কী শাস্তি হবে? কি উচিত?
উত্তরে অপশন দিয়েছিলাম-
১# সর্বোচ্চ শাস্তি, ফাঁসি।
২# পাব্লিকের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত।
৩#ঘটনার আরো বিচার বিশ্লেষণ প্রয়োজন।
৪# দুজনের শাস্তি হওয়া উচিত।
এবার দেখি উত্তর
১# এর পক্ষে ৫ জন।
২# এর পক্ষে ১ জন
৩# এর পক্ষে১৫ জন
৪#৬ জন।
যাদের প্রশ্ন করেছিলাম তারা ঢাকা মেডিকেল, ভার্সিটি, বুয়েট, চিটাগাং মেডিকেলের কিছু ছেলে।
তারা কাগজে-কলমে দেশের সবচেয়ে মেধাবী ছেলে!
আমাদের দেশটা তবে কাদের হাতে যাচ্ছে?
তখন মিডিয়ার ভূমিকা আপনাদের মনে আছে? মিডিয়া ব্যস্ত ছিল পরকীয়ার রসালো কাহিনি তৈরীতে।
ঘটনা-২#
টোকাইদের হরতাল।
নিশ্চয় ভুলে যাননি, আমাদের ভেতর কেউ কেউ দলীয় চামচামিতে ব্যস্ত ছিল? মনে আছে নিশ্চয় মিডিয়ার এককোণে অবহেলিত হয়ে পড়েছিল? আর বিরোধী দল কী করেছিল? কিছুই করেনি কিন্তু ঠিক ক'দিন পর ভ্রান্ত ইস্যুতে ডেকেছিল হরতাল।
এরাই নাকি মেধাবী? এরাই নাকি শিক্ষিত? হুমায়ূন আজাদ স্যারের কথা কী তবে ভুল ছিল।
না, ভুল ছিল না।
ঘটনা ৩#
পরিমল যিনি শিক্ষক হিসেবে ধর্ষণ নামক কর্মকান্ডে উৎসাহ বোধ করে।
হোসনে আরা- আমরা জানতে পারি তিনি একজন মিউচুয়াল সেক্স বিশেষজ্ঞ। আরো জানতে পারি, তার হাত অনেক লম্বা। এত লম্বা হাত মানুষের থাকে না।
যেটা প্রমান করে দেয়, তিনি আসলে মানুষ না, পশু না, তিনি একজন জঘন্য দানব!
আর মিডিয়া! কি চমৎকার খেল দেখাল। অবশেষে বুঝে ফেলি হুমায়ূন আজাদ স্যার ঠিক বলেছিলেন, সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাচ্ছে।
পরিশিষ্টঃ
আমি গল্প লিখি, স্যাটায়ার পারি না। বিক্ষিপ্ত মনে কিছু কথা বলে ফেললাম। এখন শুধু মনে হচ্ছে, এদেশে রাজনৈতিক নয়, মানসিকতার বিপ্লব দরকার।
শুদ্ধ মানসিকতার বিপ্লব। এদেশে এমন ঘটনা যখন অহরহ ঘটছে অন্যদিকে কিছু মানুষ স্বাধীনতাবিরোধী দালালদের চামচামি করে যাচ্ছে।
এ দেশে গাড়ির চালকেরা মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে কথা বলতে বলতে মেরে ফেলে নিষ্প্রান শিশুদের।
আর, আমরা এগোতে থাকি অন্ধকার থেকে অন্ধকারের পথে। আমরা ব্যস্ত অপরাধ জাস্টিফাই করারা কাজে।
আমরা বেঁচে থাকি অপরের কুৎসা রটনার কাজে। আমরা সুযোগ পেলে হয়ে যাই দুর্নীতিবাজ, সুযোগ পেলে হয়ে উঠি বিশাল সমাজ সেবক। আমরা আসলে কী? কেউ কি অবুঝ গল্পকারকে বলতে পারবেন?
আবার মনে হয়, এতকিছু বুঝে কী লাভ? নিজের মতো পড়াশোনা করে বেচে থাকতে অসুবিধে কী? আমরা মানুষেরা এমন-ই। আমরা নষ্টদের অধিকারে চলে গেছি। চলে গেছি, ডুবে গেছি, হারিয়ে গেছি।
আমরা চাঁদের সৌন্দর্যে সন্দিহান অথচ অমাবস্যায় কৃত্রিম আলো জ্বালিয়ে প্রগতির মিথ্যা ভান করি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।