ক্রিকেট বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এখন আবার চরম এক চক্রান্তের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। এর প্রকাশ পাচ্ছে চক্রান্তকারীদের দ্বারা একটা সুপরিকল্পিত দলীয় সভাপতির চারপাশে একটা ব্যূহ তৈয়ার, চরম তৈল মর্দন ও দলের কিছু নিস্বার্থ কর্মীদের দৃশ্যপট থেকে দূরেসরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে। এদের চক্রান্তে কিছু আওয়ামীলীগাররা না জেনে, না বুঝে অথবা নিজের স্বার্থউশুল নিয়ে ব্যাস্ত সদস্যরা ব্যবহৃত হচ্ছে। এই চক্রান্তের সূচনাটা শুরু হয়েছিল এই সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের আগে থেকে। চক্রান্তকারীরা বুঝতে পেরেছিল এই মেয়াদে কারা সরকার গঠন করতে যাচ্ছে, তাই তাদের ছাউনির নিচে এসে তাদের জায়গা পাকাপোক্ত করতে শুরু করে ভোটের আগে থেকে।
আর সময়ের সদ্ব্যবহার করার একটা সুযোগও মিলে যায় কিছু বিশেষ ও বর্ষীয়ান লীগের রাজনীতিবিদের ভুলের কারণে।
আওয়ামীলিগের কিছু বর্ষীয়ান নেতার সুপরিচিতিকে জনগণ থেকে শুরু করে এমনকি বিরোধী দলও মেনে নেয়। জলিল-তোফায়েল-রাজ্জাক-আমু-সুরঞ্জিত এই পাঁচজনের গায়ে যে কালিমাই লাগুক না কেন, এতটুকু আমাদের বলতে দ্বিধা করা উচিত নয় যে, তারা দেশের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞ ও বর্ষীয়ান ডেমোক্র্যাট। আমি আরোকিছু লীগের বর্ষীয়ান ডেমোক্র্যাটের নাম বাদ রেখেছি – যেমন প্রয়াত জিল্লুর রহমান এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। এই পাঁচজন আওয়ামীলীয়ের সভাপতিমন্ডলী পদ থেকে উপদেষ্টা পরিষদে জায়গা পান এই সরকারের মেয়াদে।
তাদের মধ্যে জলিল ও রাজ্জাক সাহেবকে আমরা কিছুদিন আগে হারিয়েছি। এবার আসা যাক আসল সন্দেহবাতিকের কথায়।
স্বভাবতই সংস্কারবাদ নিয়ে একটা ধোয়াশার জালে আচ্ছাদিত হয়ে এই সরকারের প্রথম থেকে এই নেতারা সভাপতির থেকে অনেক দূরে সরে যায়। কিন্তু এতদিনের সংগ্রামের গড়ে তোলা দলের এইরকম ভেঙ্গেপরা কে চুপ করে বসে বসে দেখতে পারে? এবার কিছু সাধারণ সন্দেহের কথায় আসাযাক। এগুলোর কোন সত্যাতাই আমার কাছে নেই।
তবে সন্দেহের বাতিকে এই লেখা, না লিখে থাকতে পারতেছিলাম না।
প্রথমেই আসি সুরঞ্জিতের সেনের কথায়। এই লোকের গালকাটা স্বভাব কে না জানে। আমার জানামতে এই লোকের কথার খোঁচার জুতসই জবাব আজ পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি- এমনকি আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিজেও। আর একারণে স্বভাবতই তার উপর কমবেশি সবাই একটু বিরক্ত ছিল।
এটার বহিঃ প্রকাশ ঘটে তার রেলের ঘুষ কেলেঙ্কারীর পরে। এটা আমার কাছে পুরোটাই আওয়ামীলীগের সেই চক্রান্তকারীদের দ্বারা সাজানো একটা ফাঁদ বলে মনে হয়। কারণ তারমত একজনের তীক্ষ্ণ বুদ্ধির একজন লোকের এমন সস্তা একটা দৃশ্যপটের নাটকে ধরাশায়ী করাটা আমার কাছে অনেকটা বাংলা সিনেমার একটা চিরাচয়িত সিনের কথা মনে করিয়ে দেয়- নায়ক যখন কোন কারণ ছারাই খুনের পাশে পরে থাকা ছুরিটি হাতে তুলে নিবে এবং তখনই পুলিশের আগমন। শুত্রুবারের দুপুরের এই সিন দেখে আমারা বড় হয়েছি- স্বাভাবিক ভাবেই তাই আমরা সুরঞ্জিতকে দোষী বলতে পারি। এটা মাস্টার প্লানের কত তম কাজছিল জানি না, তবে জলিল-রাজ্জাক-আমু-তোফায়েলের পর অবশেষে সুরঞ্জিতকেও আওয়ামীলীগের লাইম লাইট থেকে দূরে সরালো এই চক্রান্তকারীরা।
মাঝের ঘটোনা থেকে এবার লাফ দিয়ে ইদানিং কালের কিছু নিয়ে বলাযাক। কিছুদিন আগে গোলাম মাওলা রনি সাহেব আরেকটা কেসে ধরা খাইলেন। এই রনি সাহেবও রীতিমত গালকাটা স্বভাবের। তাই ধরাটা এমন সময়ে খেয়েছে, যেখান থেকে তাকে আর বাঁচানোর উপায় নেই। স্থানীয়ভাবে তাকে অসমর্থিত প্রমাণ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সামনে।
আর রনির প্রধান ঢাল ছিল মিডিয়ার সকলস্তর। এবার সুকৌশলে তার সেই ঢালকেই তার প্রতিপক্ষ বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আমি মনে করি, চক্রান্তকারীদের পাতা ফাঁদে রনি পা দেওয়াটা মোটেও ঠিক হয়নি।
এবার আমার আশঙ্কার কথা বলি। বিশেষ কিছু কথা-কাজ ও মিডিয়ার সংবাদের কারণে ওবায়েদুল কাদেরের খুব ভাল একটা ইমেজ মানুষের সামনে উঠে এসেছে।
আর তিনি এইসব চক্রান্তকারীদেরকেও ভাল করে চেনেন ও জানেন। আশঙ্কাটা এখানেই, কিছুদিনের মধ্যে এই ওবায়েদুল কাদের সাহেব যদি চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে আরো সোচ্চার হন, তবে কিছুদিনের মধ্যে তাকেও কোন একটা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে লাইম লাইট থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।
আর একজন আওয়ামীলীগের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে স্বাভাবিক ভাবেই সন্দেহটা আওয়ামীলীগের কিছু নব্য গজিয়েওঠা প্রগতিশীলদের উপর। আওয়ামীলীয়ের সভাপতিমন্ডলীর অন্যতম সদস্য জনাব লেলিন সাহেব। চরম বামপন্থি দিকভ্রষ্ট হয়ে অবশেষে এখন আওয়ামীলীগে এসে জুটেছে।
এদের মত লোকের সাপোর্ট, আওয়ামীলীগ দলের বাইরে থেকে পাওয়াকে আশীর্বাদ মনে করে, কিন্তু দলের মধ্যে ঢুকিয়ে দেখাযাচ্ছে এরা তাদের দিকভ্রষ্টতার পুথি নতুন ভাবে ফিরিস্তি দিতে শুরু করেছে। আমাদের এক স্যার বলতেন, নরমাল ভাত পচে গেলে যে দুর্গন্ধ বের হয় দামি পোলও পচে গেলে তারচেয়ে হাজারগুণ পচা দুর্গন্ধ ছরায়। আওয়ামীলীগের দলে এখন সব দামী পোলাওবর্গীয় লোকজন নীতি নির্ধারক পর্যায়ে আছেন- যা এখন পচতে শুরু করেছে।
কামারুল-গহর রিজভী- সালমাল এফ রহমান দের মত লোকদেরকে আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এখনও চিনতে পারেননি, তাদের আসল রূপটা বুঝতে আপনাকে আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।