তরুণ নামের জয়মুকুট শুধু তাহার, বিপুল যাহার আশা, অটল যাহার সাধনা প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অনেক কিছুই হয়তো আমরা জানি না। মাত্র কয়েক বছরের কাব্যসাধনায় যে কবি বাংলা সাহিত্যে প্রাণের জোয়ার বইয়ে দিলেন, তার ব্যক্তিগত স্বভাব চরিত্র ও অনেক কিছুই ছিল ব্যতিক্রমী।
কবিতায় তা যে সত্ত্বা আমরা দেখতে পাই, এর সাথে অনেক পার্থক্য ছিল তার খেয়াল খুশীর। আজ থেকে চেষ্টা করবো সেসব সম্পর্কে আপনাদের জানাতে।
যারা আরও বেশী জানেন, তারা সংযুক্তি জানাতে পারেন মন্তব্যে।
মোসলেম ভারত নামের একটি পত্রিকায় নজরুল লিখতেন। সেকালে পত্রিকাটির জনপ্রিয়তা ছিল আকাশছোঁয়া। কলকাতার এক বাদ্যযন্ত্র ব্যবসায়ী কবি নজরুলের কাছে এসে বায়না ধরল একটি বিজ্ঞাপন লিখে দিতে। কোম্পানিটির নাম ডোয়াকিন এন্ড সন্স।
তাদের নির্মিত হারমোনিয়ামের জন্য কবি নজরুল তখনই কাগজ কলম নিয়ে বসে লিখে ফেললেন এই বিজ্ঞাপনটি-
কি চান? ভাল হারমোনী??
কাজ কি গিয়ে- জার্মানী?
আসুন দেখুন এই খানে,
যেই সুর যেই গানে,
গান না কেন, দিব্যি তাই,
মিলবে আসুন এই হেথাই,
কিননি কিন, ডোয়ার কিন..
কলকাতার পার্কসার্কাস এলাকায় আরেকটি কোম্পানী ছিল, বাহাদুর কোম্পানী। এটিও বাদ্যযন্ত্র হারমোনিয়ামের ব্যবসা করত। পত্রিকায় ডোয়াকিন কোম্পানীর বিজ্ঞাপন দেখে তারাও ছুটে এল কবি নজরুলের কাছে। তাদেরও দাবী, আমাদের জন্যও লিখে দিন এমন একটি বিজ্ঞাপন। কী আর করা? কবি আবারও লিখে ফেললেন,
মিষ্টি বাহা বাহা সুর,
চান তো কিনুন ‘বাহাদুর’।
দুদিন পর বলবেনা কেউ- ‘দূর দূর’,
যতই বাজান ততই মধুর মধুর সুর!!
করতে চান কি মনের প্রাণের আহা দূর?
একটি বার ভাই দেখুন তবে ‘বাহাদুর’,
যেমন মোহন দেখতে তেমনি শিরীন ভরাট,
বাহা সুর, চিনুন, কিনুন বাহাদুর।
এরপর কয়েক মাস ধরে একই পত্রিকায় এ দুটো বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছিল এক সাথে। কোম্পানীও ব্যবসা করেছিল দেদারসে।
পরে মাথার চুলের জন্যও তিনি লিখেছিলেন একটি সুন্দর বিজ্ঞাপন। খেয়ালী নজরুল থেকে এভাবে কতো ব্যক্তি ও কোম্পানী যে উপকৃত হয়েছে, তার হিসেব নেই।
কুইজঃ কাজী নজরুল তার আনন্দ প্রকাশ করার জন্য কোন কথাটি বলে সবাইকে চমকে দিতেন?
উত্তরঃ দে গরুর গা ধুইয়ে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।