ডায়াবেটিস কি?
আমরা বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিন যে খাবার খেয়ে থাকি তার সিংহভাগ পরিপাকের পর গ্লুকোজ হিসেবে রক্তে প্রবেশ করে। আর দেহের কোষগুলি তাদের প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ রক্ত থেকে শুষে নেয়। রক্তে গ্লুকোজ এর পরিমান কয়েকটি হরমোনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই হরমোন গুলোর মধ্যে প্রধান ভূমিকা পালন করে ইনসুলিন।
ইনসুলিন আমাদের দেহের প্যানক্রিয়াস থেকে উৎপন্ন ও নিঃসৃত হয়।
রক্ত থেকে কোষে গ্লুকোজ প্রবেশের সময় ইনসুলিন পরিবাহকের (Transporter) ভূকিকা পালন করে। ইনসুলিনের পরিমান কমে গেলে বা ইনসুলিন অকার্যকর হলে কোষ গুলো রক্ত থেকে গ্লুকোজ নিতে পারে না, সে কারনে কোষে গ্লুকোজের অভাব এবং রক্তে গ্লুকোজের পরিমান বেড়ে যায়। আর ইনসুলিনের সমস্যাজনিত রোগকেই বলা হয় ডায়াবেটিস মালাইটাস।
যাহেতু প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ রক্ত থেকে কোষে প্রবেশ করতে পারে না তাই গ্লুকোজ রক্তেই থেকে যায়। আর প্রয়োজনীয় শক্তির (গ্লুকোজ) অভাবে দেহের কোষ গুলো ক্ষতিগ্রস্হ হয় অন্যদিকে অতিরিক্ত গ্লুকোজ বিভিন্ন টিস্যু বা অঙ্গের (Organ) ক্ষতি করতে পারে।
ডায়াবেটিস কয় ধরনের হয়ে থাকে?
ডায়াবেটিস প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে-
টাইপ ১ ডায়াবেটিস মালাইটাস: এ ক্ষেত্রে রোগীর দেহে পর্যাপ্ত পরিমানে ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস মালাইটাস: এ ক্ষেত্রে রোগীর দেহে উৎপন্ন ইনসুলিন ঠিক মত কাজ করতে পারে না অথবা প্রয়োজনীয় পরিমান ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না। প্রায় ৯০% ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত রোগী এই শ্রেনির হয়ে থাকেন।
গর্ভকালীন সময়ে (second half of pregnancy) সাময়িক ভাবে ডায়াবেটিসের লক্ষন দেখা দিতে পারে, যা কি না সন্তান জন্ম দেওয়ার পর আপনা আপনি চলে যায়।
এ ছাড়াও প্রি-ডায়াবেটিস নামে আর একটি ভাগ আছে।
এ ক্ষেত্রে আক্রান্তদের দেহে গ্লুকোজের পরিমান স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে কিন্তু ডায়াবেটিস আক্রান্তদের চেয়ে কম থেকে। যা পরবর্তিতে টাইপ ২ ডায়াবেটিস মালাইটাস ও অন্যান্য ধরনের উপস্বর্গ ও রোগ তৈরী করতে পারে।
লক্ষন
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
- বেশি বেশি পিপাসা লাগা
- ক্ষুধার পরিমান বেড়ে যাওয়া
- ওজন কমে যাওয়া
- দুর্বলতা অনূভব করা
- যে কোন ও ক্ষত শুকাতে দেরী হওয়া
- চোখে কম দেখা
কি করবেন?
উপরের লক্ষন গুলো থাকলে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিৎ। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসক আপনার ডায়াবেটিস আছে নাকি তা নিশ্চিত করার জন্য ডায়াবেটিস পরিক্ষা করতে বলবেন।
বিভিন্ন অবস্হায় রোগীর রক্তে গ্লুকোজের পরিমান নির্নয় করা হয়।
গ্লুকোজের পরিমান নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করলে ঐ ব্যাক্তিকে ডায়াবেটিস রোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
কেন হয়?
ডায়াবেটিস ছোঁযাচে বা সংক্রামক রোগ নয়। এটি প্রধানত বংশগত তাছাড়া পরিবেশের ও কিছুটা প্রভাব আছে।
কোন ও কারনে যদি প্যানক্রিয়াসের বিটা কোষ নষ্ট হরে যায় তাহলে ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ডায়াবেটিস হয়। তাছাড়া খাধ্যাভ্যাস ও একটি ভূমিকা পালন করে থাকে।
চলবে...... ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।