আমি একজন সাধারন মানুষ। তাই সব সময় সাধারন ভাবে চলা ফেরা করতে পচ্ছন্দ করি। এবং আশা করি মানুষ আমার ব্লগ দেখে তার শাররিক সমস্যাগুলোকে সমাধারন করতে পারবে।
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য রক্তের শর্করা মাপা হলো প্রচলিত নিয়ম। কিন্তু কাউকে যদি বলা হয়, সকালে খালি পেটে এসে রক্ত দেবেন বা আরেকটি নমুনা নেব সকালের নাশতার দুই ঘণ্টা পর, তাহলে দেখা যায়, অনেকেই নানা অজুহাতে বা ব্যস্ততার কারণে ভুলে গিয়ে রক্তের নমুনা দেয়-ই না।
এভাবে রক্তে শর্করার মান বেশি থাকলেও তা আড়ালে থেকে যায়।
তাই বিজ্ঞানীরা অনেক দিন ধরে ভাবছিলেন, ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য আরও সহজ কোনো পরীক্ষা বের করা যায় কি না। বিশেষজ্ঞরা বললেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে রক্তে শর্করার গড় মান কত আছে, তা জানতে পারলে কাজটি অনেক সহজ হয়।
টেস্টটি হলো এওয়ানসি (A1C) টেস্ট। এই টেস্ট করার জন্য রক্তের নমুনা দেওয়া যায় যেকোনো সময়।
রোগীকে উপবাসে থাকতে হয় না, খালি পেটে রক্ত দেওয়ার ঝামেলাও নেই। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন, ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন ও ইউরোপিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর ডায়াবেটিসও একমত, এওয়ানসি টেস্ট হলো ডায়াবেটিস নির্ণয়ের শ্রেষ্ঠ ও সহজতম উপায়।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের ডা. ডেভিড নাথান বলেন, ‘৩০ বছর ধরে আমরা যে পদ্ধতিতে ডায়াবেটিস নির্ণয় করছি, বর্তমান সিদ্ধান্ত হলো একটি বড় রকমের অগ্রগতি। আমাদের লোহিত কণিকার মধ্যে থাকে যে রক্তবর্ণ হিমোগ্লোবিন, এটি যে পরিমাণ রক্তে বহমান শর্করা ধরে রাখে, এরই পরিমাপ হলো এইচবিএওয়ানসি (HbA1C)। হিমোগ্লোবিন এওয়ানসির মান পাঁচের নিচে হলে স্বাভাবিক।
গবেষকেরা বলেন, এইচবিএওয়ানসির মান ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বা এর বেশি হলে ডায়াবেটিস নির্ণয় হয়েছে বলা যায়।
বেশির ভাগ চিকিত্সকই ডায়াবেটিস নির্ণয়ে রক্তের দুটো পরীক্ষার একটি ব্যবহার করেন। খালি পেটে রক্তের নমুনা নিয়ে শর্করা পরিমাপ বা গ্লুকোজ দ্রবণ পান করে দুই ঘণ্টা পর রক্তের নমুনা নিয়ে শর্করা পরিমাপ।
এওয়ানসি টেস্টের জন্য স্বল্প পরিমাণ রক্তের নমুনা প্রয়োজন হয়। ডা. নাথান বলেন, যেসব রোগীর খালি পেটে রক্তের নমুনা বা গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্টের জন্য নমুনা নেওয়ার প্রয়োজন হবে না, তাদের জন্য এইচবিএওয়ানসি টেস্ট অবশ্যই সুবিধাজনক ও সহজ।
আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের পরামর্শ হলো, সব পূর্ণবয়স্ক লোক, যাদের দেহের ওজন বেশি এবং যাদের বাড়তি ঝুঁকি উপাদান, যেমন যাদের ডায়াবেটিসের পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে, উচ্চরক্তচাপ বা উচ্চমান কোলেস্টেরল বা ট্রাইগ্লিসারাইড রয়েছে, এদের প্রত্যেকের ডায়াবেটিসের জন্য স্ক্রিনিং করা ভালো।
এ ছাড়া এসব ঝুঁকি না থাকলেও পঁয়তাল্লিশোর্ধ্ব সবার স্ক্রিনিং করা উচিত। পৃথিবীজুড়ে বাড়ছে ডায়াবেটিস। এটা বাড়ার হার বেশি উন্নয়নশীল বিশ্বে। এ রোগের জটিলতা থেকে হতে পারে হূদরোগ, অন্ধত্ব, কিডনির রোগ এবং অঙ্গচ্ছেদের মতো পরিণতি।
বেশির ভাগ ডায়াবেটিস হলো টাইপ-২ ডায়াবেটিস। শরীরচর্চা যারা করে না, সুমিত খাদ্য যারা খাদ্য গ্রহণ করে না, তাদের মধ্যে এ ধরনের ডায়াবেটিস বেশি হতে দেখা যায়।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরীর কলম থেকে
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম হাসপাতাল
সাম্মানিক অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ২০, ২০১০
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।