আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বন্দে আলী মিয়া : যত লেখালেখি

শফিকুল ইসলাম শিবলী ‘কবি বন্দে আলী মিয়া’-এ নামেই তিনি খ্যাত। পরিচিত বা অপরিচিত জনদের কাছে। এবং আজকের বাস্তবতায় প্রায় বিস্মৃত এক ব্যক্তিত্ব। কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, গীতিকার এবং শিশু সাহিত্যিক। তাঁকে নিয়েই আজকের লেখালেখি।

তাঁকে নিয়ে তাঁর জীবদ্দশায় অথবা পরবর্তীতে যাঁরা লেখালেখি করেছেন, তাঁদের লেখালেখির সূত্র ধরেই আজকের লেখাচারিতা। শ্লাঘার বিষয় এই যে, কবি বন্দে আলী মিয়ার গোটা জীবন আবর্তিত হয়েছে লেখালেখিকে উপজীব্য করে। কলম, কখনোবা রং-তুলি ও শিক্ষকতা তাঁর রুজি রোজগারের প্রধান উপকরণ। গ্রামোফোন কোম্পানী বা রেডিও-তে কণ্ঠদানেও তাঁর বাড়তি আয় যে আসেনি, এমন নয়। তবুও সব আয়ের ধান্ধায় মন্দা আক্রান্ত হ’য়ার লক্ষণ যে থাকেনা, এমনতো নয়।

পাবনার সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দের ২৪ আগস্টে বিক্রয় দলিলক্রম ৭২০৮-তে দেখা যায়, জনৈক শেখ বন্দে আলী মিয়া, পিতা শেখ উমেদ আলী মিয়া, সাকিন নারায়ণপুর, থানা ও জেলা-পাবনা পনেরশ’ টাকায় কিছু জমি বিক্রি করেছেন। জমিটি কেনা হয়েছিল একই সাব রেজিস্ট্রার অফিসের ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ৩০ অক্টোবরে রেজিস্ট্রিকৃত বিক্রয় দলিলক্রম ১৮২৪ মাধ্যমে। কেনার সময় ঐ জমির দাম ছিল তিনশ’ টাকা। আঠাশ বছর পরে জমি বিক্রির কারণ যাই হোক না কেন, দলিলে উল্লেখ করা হয়েছে যে, “আমার টাকার বিশেষ প্রয়োজন হওয়ায় আমার স্বত্ত্ব দখলীয় নিু তফশীল সম্পত্তি বিক্রয়ের ঘোষণা দেওয়ায়, আপনি সর্বোচ্চ বাজার মূল্য”.... ইত্যাদি ইত্যাদি। দলিল রেজিস্ট্রি’র তারিখ দু’টি আমাদেরকে কবি বন্দে আলী মিয়ার যাপিত জীবনের উপার্জনের দিক নিয়ে কিছুটা ভাবিত করে বৈকি! ক’লকাতার কর্পোরেশন স্কুলে শিক্ষকতা, বই প্রকাশজনিত প্রাপ্ত রয়্যালিটি, ছবি আঁকা বাবদে ‘উপযুক্ত পারিশ্রমিক’, পত্র-পত্রিকায় কবিতা-গল্প ইত্যাদি প্রকাশ বাবদ কিঞ্চিৎ সম্মানী ইত্যাদি যোগ দিয়ে দিয়ে সংসার নির্বাহের ব্যয় সংকুলান করে স্বদেশ-ভূমিতে যৎকিঞ্চিৎ পরিমাণে জমি কেনার সামর্থ-সঙ্গতির বাস্তবতা কবির জীবনে এসেছিল।

আবার রেডিও পাকিস্তান, রাজশাহী কেন্দ্রে স্ক্রিপ্ট রাইটার পদে যোগদানের আগে এবং এমন কি প্রেসিডেন্ট পুরস্কার পাওয়ার আগ্ পর্যন্ত নিয়মিত উপার্জনের উৎস হিসাবে লেখালেখির বাজারের মন্দার বিষয়টি বিবেচনার যোগ্য বলে মনে হয়। অন্য কোন কারণ উদঘাটিত না হওয়া অবধি ‘কবির অনটন’ বিষয়ক জটিলতার ইতি এখানেই টানা যেতে পারে। যদিও দলিল সম্পাদনকারী হিসাবে নামের আগে ব্যবহৃত ও উল্লিখিত ‘শেখ’ পদবীটির ব্যবহার সারা জীবন কেন উপেক্ষনীয় থেকে গেছে, সে জটিলতার উন্মোচন সহজ সাধ্য নয় বলেই অনুমেয়। কবি নিজেই যখন তাঁর নামের আগে বা পরে পদবী ব্যবহারের সনাতন রীতির বিপরীতে নির্ভার ‘মিয়া’তে সন্তুষ্ট থেকেছেন, তখন ব্রাত্যজনের পক্ষে কহতব্য বিষয় আর অবশিষ্ট থাকে কি? তবে কবির জন্মতারিখ (জন্মদিন নয়) নিয়ে যে এ অবসরে কিছু বলাবলির অবকাশ নেই, এমন নয়। শুধু যে জন্ম তারিখ নিয়ে, তাই বা বলি কি করে? মৃত্যুর তারিখটি নিয়েও নানা জটিলতার সৃষ্টি করেছে।

এমন কি বাংলা সাহিত্যের সর্বোচ্চ মহাজন ‘বাংলা একাডেমী’র প্রকাশনাতে যখন এই ভুল চোখে পড়ে, তখন ফুটপাতের লেখক ফিরিওয়ালাদেরও আক্কেল গুড়–ম হতে বাকি থাকেনা। সুতরাং বেআক্কেলের মত শুরুতেই কবি’র পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর সমাধি ফলকে জন্ম ও মৃত্যুর যে তারিখ দু’টি উল্লেখ করা হয়েছে, সে সম্পর্কে জেনে নেয়া যেতে পারে। জীবিতকালে নিজ বাসভূমি ‘কবিকুঞ্জে’র সামনের আঙিনায় অবস্থিত কবি’র সমাধিস্থ ফলক অনুযায়ী কবির জন্ম ১৭ জানুয়ারি, ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ এবং মৃত্যু ২৭ জুন, ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দ। বন্দে আলী মিয়ার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ময়নামতির চর (১৯৩২) পাঠ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখলেন : তোমার ময়নামতির চর কাব্যখানিতে পদ্মচরের দৃশ্য এবং তার জীবন যাত্রার প্রত্যক্ষ ছবি দেখা গেল। পড়ে বিশেষ আনন্দ পেয়েছি।

তোমার রচনা সহজ এবং স্পষ্ট, কোথাও ফাঁকি নেই। সমস্ত মনের অনুরাগ দিয়ে তুমিে দখেছ এবং কলমের অনায়াস ভঙ্গিতে লিখেচ। তোমার সুপরিচিত প্রাদেশিক শব্দগুলি যথাস্থানে ব্যবহার করতে তুমি কুন্ঠিত হওনি তাতে করে কবিতাগুলি আরো সরস হয়ে উঠেছে। পদ্মা তীরের পাড়াগাঁয়ের এমন নিকট স্পর্শ বাংলাভাষায় আর কোনো কবিতায় পেয়েছি বলে আমার মনে পড়ছে না। বাংলা সাহিত্যে তুমি আপন বিশেষ স্থানটি অধিকার করতে পেরেছ বলে আমি মনে করি।

২৬ জুলাই ১৯৩২। মহাজনদের প্রকাশনা দিয়েই শুরু করা যাক। বাংলা একাডেমী কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করেছেন ‘বন্দে আলী মিয়া রচনাবলী’। চারটি খণ্ড ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। সুস্মিত-প্রাজ্ঞজন আলাউদ্দিন আল আজাদ সম্পাদনা করেছেন উভয় খণ্ড।

১ম খণ্ডটি প্রকাশিত হয়েছে জুন, ১৯৯৭-তে। দ্বিতীয় খণ্ডটি জানুয়ারি, ১৯৯৮-তে। সম্পাদকীয় ভূমিকা’র পরের পৃষ্ঠায় কবি ‘বন্দে আলী মিয়া’র একটি ছবি ছাপা হয়েছে। কবির নামের নীচে লেখা রয়েছে “জন্ম : ১৫ ডিসেম্বর ১৯০৬, মৃত্যু : ১৭ জুন ১৯৭৯। ” অবশ্য রচনাবলীর ৬২৯ পৃষ্ঠায় ‘জীবন পঞ্জি’তে ‘ইন্তেকাল’ প্রসঙ্গে ১৯৭৯-র ‘২৭শে জুন বুধবার ১১-১০ মিনিট’ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

বাংলা একাডেমী’র এই ভ্রান্তি কেবল বন্দে আলী মিয়া রচনাবলীতে সীমাবদ্ধ এমন নয়। ‘অমর একুশে বাংলা একাডেমীর নিবেদন ঃ ১৯৮৮’তে সিরিজ জীবনী গ্রন্থমালায় প্রকাশিত হয়েছে ‘বন্দে আলী মিয়া’। জীবনী গ্রন্থটির রচয়িতা (প্রফেসর ড.) গোলাম সাক্লায়েন। প্রথম প্রকাশ ১১ ফেব্র“য়ারি, ১৯৮৮। এ জীবনী গ্রন্থে কবির জন্ম তারিখ ১৫ ডিসেম্বর, ১৯০৬ উল্লিখিত হয়েছে।

বাংলা একাডেমী থেকে জুন ১৯৮৫-তে প্রকাশিত বাএ-৩৫০১ চরিতাভিধানে’র ২৪৪ পৃষ্ঠায় (’৯৭ সংস্করণ) একই জন্ম তারিখ অনুসরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমী থেকে প্রকাশিত (প্র.প্র. সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭। বা শি এ ৩৯৭) শিশু বিশ্বকোষ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৫৭-৫৮ তে অভিন্ন জন্ম তারিখের উল্লেখ রয়েছে। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে মার্চ ২০০৩-এ প্রকাশিত বাংলা পিডিয়ার ৬ষ্ঠ খণ্ডের ২৮০ পৃষ্ঠায় বন্দে আলী মিয়ার জন্ম তারিখ উল্লিখিত হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর, ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে। রাজশাহীর ব্যতিক্রম প্রকাশনী থেকে ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয় ‘শিশু সাহিত্যে বন্দে আলী মিয়া’ শিরোনামে একটি মূল্যবান গ্রন্থ।

এটির রচয়িতা তসিকুল ইসলাম। এ গ্রন্থের নাম-পত্র ইত্যাদির পরেই ছাপা হয়েছে কবির একটি ছবি। নীচে ‘জন্ম ঃ ১৪ই ডিসেম্বর, ১৯০৬। মৃত্যু ঃ ২৭শে জুন, ১৯৭৯’ উল্লেখ করা হয়েছে। রাজশাহী’র ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত কবি বন্দে আলী মিয়া স্মারক গ্রন্থ (গোলাম সাকলায়েন ও তসিকুল ইসলাম সম্পাদিত), বেতার বাংলা জুলাই, দ্বিতীয় পক্ষ, ১৯৭৯, (সম্পাদক ঃ এ টি এম মফিজুল হক), রাজশাহীর উত্তরা সাহিত্য মজলিশ থেকে প্রকাশিত ‘প্রতীতি’ ইত্যাদিতেও জন্ম-মৃত্যুর তারিখ নিয়ে নানা বিভ্রান্তি রয়েছে।

এমনকি হাল জামানার তথ্য প্রযুক্তির সফলতায় প্রতিষ্ঠিত ওয়েব সাইট যঃঃঢ়://িি.িঢ়ধনহধ.হবঃ/নসরধ.যঃস-তে কবির জন্ম ও মৃত্যু তারিখ প্রসঙ্গের উল্লেখ করা হয়েছে ঃ চড়বঃ ইধহফব অষর গরধ (১৭-০১-১৯০৬ূ২৭-০৬-১৯৮২)। কবির জন্ম ও মৃত্যু তারিখ ‘আবিষ্কার’-এর মধ্য দিয়ে একটি মহৎ নজির সৃষ্টিতে কেউ পেছপা নন। প্রাসঙ্গিকভাবে ঢাকা থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন দৈনিকের ভিন্ন ভিন্ন তারিখ অনুসরণের দৃষ্টান্ত না আনাই ভাল। কবি’র শেষ শয়ানের শিথানে স্থাপিত সমাধি ফলকের সন-তারিখটিই শুদ্ধ হিসাবে আমরা মেনে নেব। কবিকে নিয়ে তাঁর জীবদ্দশায় রাজশাহীর উত্তরা সাহিত্য মজলিশ চমৎকার একটি কাজ করেছিল।

তাঁরা কবিকে সংবর্ধনা দান করেছিলেন। কবির প্রতি সম্মান জানিয়ে তাঁরা মজলিশের মুখপত্র ‘প্রতীতি’-এর একটি সংখ্যা ‘কবি বন্দে আলী সম্বর্ধনা সংখ্যা’ হিসাবে প্রকাশ করেন। এটি ১৯৭৮ এর ঘটনা। তাঁর মৃত্যুর পরে পরেই রেডিও বাংলাদেশ-এর মুখপত্র ‘বেতার বাংলা’র জুলাই দ্বিতীয় পক্ষের অনুষ্ঠান সূচিকে ‘কবি বন্দে আলী মিয়া স্মরণী’ সংখ্যা হিসাবে প্রকাশ করা হয়। তার পরেই প্রকাশিত হয় ‘কবি বন্দে আলী মিয়া স্মারক গ্রন্থ’।

অতঃপর ‘শিশু সাহিত্যে বন্দে আলী মিয়া’। পরবর্তীতে বাংলা একাডেমী প্রকাশ করে তাঁর জীবনী এবং সব শেষে রচনাবলী। এর বাইরে দেশের নানাস্থান থেকে প্রকাশিত হয়েছে নানা সাময়িকী, পত্র-পত্রিকা। সেখানেও কবির জীবন ও সাহিত্য সাধনা নিয়ে লেখালেখি করা হয়েছে। বিচ্ছিন্ন এসব প্রয়াস পরিমাপে খুউব ছোট হলেও, প্রয়াত গুণীন জনের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা ও প্রগাঢ় ভালবাসায় সিক্ত স্মারণিক রচনা মূল্যবান।

সুতরাং এরাঁ সবাই ধন্যবাদার্হ। বাংলা একাডেমীর প্রকাশনা দিয়েই শুরু করা যাক্। বন্দে আলী মিয়া রচনাবলী। প্রথম খণ্ড। ‘কবিতা প্রবন্ধ স্মৃতিকথা’ স্থান পেয়েছে এ খণ্ডে।

আলাউদ্দিন আল আজাদ সম্পাদিত এ খণ্ডটি প্রকাশিত হয়েছে জুন, ১৯৯৭-তে। বাএ ৩৫৫৪। প্রকাশক ঃ আশফাক-উল আলম, পরিচালক, গবেষণা সংকলন ও ফোকলোর বিভাগ, বাংলা একাডেমী, ঢাকা। মুদ্রক ঃ ওবায়দুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক, বাংলা একাডেমী প্রেস। প্রচ্ছদ ঃ সমরজিৎ রায় চৌধুরী।

মূল্য ঃ দুই শত টাকা। ডিমাই ১/৮ আকার। বোর্ড বাঁধাই। পৃষ্ঠা সংখ্যা ঃ ৬২৯+২০। ওঝইঘ ৯৮৪-০৭-৩৫৬৩-৭।

প্রথম খণ্ডে প্রকাশিত কবিতার বইগুলি ঃ ময়নামতীর চর, অনুরাগ, মধুমতীর চর, দক্ষিণ দিগন্ত, কাহিনী ও কথিকা, ধরিত্রী এবং কলগীতি (গীতি সংকলন)। এছাড়া স্মৃতি কথা ‘জীবনের দিনগুলি’ এবং প্রবন্ধ ‘জীবনশিল্পী নজরুল’ (চরিত কথা ও সাহিত্য পরিচয়)। পরিশিষ্ট, গ্রন্থ পরিচয়, রচনা পঞ্জি, জীবনপঞ্জি ও প্রাসঙ্গিক পাঠ। বন্দে আলী মিয়া রচনাবলী। দ্বিতীয় খণ্ড।

উপন্যাস গল্প নাটক-নাটিকা স্থান পেয়েছে এ খণ্ডে। আলাউদ্দিন আল আজাদ সম্পাদিত এ খণ্ডটি প্রকাশিত হয় জানুয়ারি, ১৯৯৮-তে। বাএ ৩৭০৭। মূল্য ঃ দুই শত টাকা। আকার ডিমাই ১/৮।

বোর্ড বাঁধাই। পৃষ্ঠা সংখ্যা ঃ ৬৭৫+১২। ওঝইঘ ৯৮৪-০৭-৩৭১৬-৩। উপন্যাস-এর মধ্যে রয়েছে ‘বসন্ত জাগ্রত দ্বারে’, ‘ঘূর্ণি হাওয়া’, ‘মনের ময়ূর’, ‘দিবা স্বপ্ন’ ও ‘অরণ্য গোধূলি’। গল্পগ্রন্থ দু’টি ‘নারী কলঙ্কময়ী’ ও ‘তাসের ঘর’।

প্রথমটির গল্পগুলি যথাক্রমে হাসপাতাল, অন্নের দাম, অভিনয়, উপসংহার, নারী কলঙ্কময়ী, অপরাধী, প্রতারণা, মহাযুদ্ধের ইতিহাস, অসতর্ক মূহুর্তে, এবং তাসের ঘর, ঝড়ে ভেঙেছে নীড়, তুঁহু মম জীবন, অপত্য, দিনের পর দিন, ও অভিশপ্ত। নাটক-নাটিকা উপ-শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে ‘উদয় প্রভাত’, ‘জোয়ার ভাটা’ ও ‘বৌদিদি রেস্টুরেন্ট’। বৌদিদি রেস্টুরেন্টে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে যথাক্রমে বৌদিদি রেস্টুরেন্ট, বাঞ্ছারাম ঢ্যাং, গাধা হাকিম, সতী ও লক্ষ্মীহারা। এছাড়া যথারীতি পরিশিষ্ট ইত্যাদি। বন্দে আলী মিয়া রচনাবলী।

তৃতীয় খণ্ড। ছড়া-কবিতা, গীতিনাট্য, রূপকথা উপকথা গল্প ও নাটক স্থান পেয়েছে এখণ্ডে। আলাউদ্দিন আল আজাদ সম্পাদিত এ খণ্ডটি প্রকাশিত হয় ফেব্রুয়ারি ২০০৯-এ। বাএ ৪৭২০। মূল্য চারশত টাকা মাত্র।

আকার ডিমাই ১/৮। বোর্ড বাঁধাই। পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৫৫২+১২। ওঝইঘ ৯৮৪-০৭-৪৭২৯-০। যথারীতি প্রচ্ছদ এঁকেছেন সমরজিৎ রায় চৌধুরী।

ছড়া ও কবিতার মধ্যে চোর জামাই, কচিপাতা, বনের ফুল, ও শরৎ বরণ গ্রন্থগুলি স্থান পেয়েছে। বনের ফুল গীতি নাট্য। এর পরে রূপকথা উপকথা গল্প। এতে স্থান পেয়েছে মৃগপরী, সোনার হরিণ, রাজকন্যা মানিকমালা, ফুলপরীর দেশে, রাজকন্যা কাঞ্চনমালা, নকল রাজা, চালাকি, গল্পের আসর, বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা, অতি চালাকীর বিপদ, শঠে শ্যাঠাং, যাদুর পাগড়ী, অতিলোভের ফল, বোকা জামাই, রীতিমতো কাণ্ড, ভুতুরে কাণ্ড, গল্পের মজলিস, পিতাপুত্র, গরীবের ছেলে। নাটক : টো টো কোম্পানীর ম্যানেজার, লতিবুদ্ধি, খোঁকশিয়ালের দাওয়াত, বিচার, অহেতুক, চিৎপটাং, আলাদীন ও বঙ্গ-বীরাঙ্গনা- মোট আটটি নাটক।

বাংলা একাডেমী থেকে জীবনী গ্রন্থমালা সিরিজে প্রকাশিত হয়েছে বন্দে আলী মিয়া। রচনা গোলাম সাকলায়েন। প্রথম প্রকাশ ১১ ফেব্র“য়ারি, ১৯৮৮। বাএ ২০৫৮। প্রকাশক ঃ শামসুজ্জামান খান, পরিচালক, গবেষণা সংকলন ও ফোকলোর বিভাগ, বাংলা একাডেমী, ঢাকা।

প্রচ্ছদ ঃ সমর মজুমদার, মুদ্রণ ঃ ওবায়দুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক, বাংলা একাডেমী প্রেস ঢাকা। মূল্য পনের টাকা। ডিমাই ১/৮ আকার। বোর্ড বাঁধাই। পৃষ্ঠা সংখ্যা ঃ ১০৭।

সূচিপত্র বিন্যস্ত হয়েছে যেভাবে ঃ জন্ম ও বংশ পরিচয় ৯, শিক্ষা জীবন ১২, কর্ম জীবন ১৩, সাহিত্য জীবন ১৬, পত্র পত্রিকা সম্পাদনা ২৪, চরিত্র বৈশিষ্ট্য ৩১, রচনাপঞ্জি পরিচিতি ৪১, জীবন দর্শন ও সাহিত্য বৈশিষ্ট্য ৬৬ ও তথ্য সংকেত ৯২। প্রসঙ্গ-কথা লিখেছেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামাল। অপ্রাসঙ্গিক হলেও, বন্দে আলী মিয়া, তাঁর জীবনী লেখক প্রফেসর ড. গোলাম সাক্লায়েন এবং প্রকাশনা সংস্থা বাংলা একাডেমীর তৎকালীন কর্ণধার ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল-তিন জনই বৃহত্তর পাবনা জেলার কৃতী সন্তান, উল্লেখ বাহুল্য হবে না বলেই মনে করা যেতে পারে। কবি বন্দে আলী মিয়ার পঞ্চদশ মৃত্যু বর্ষ উপলক্ষে জাতীয় যাদুঘর শিশু মিলনায়তনে ১৯৯৪-র ২৭জুন অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও আবৃত্তি অনুষ্ঠান। এ উপলক্ষে প্রকাশিত হয় ৪০ পৃষ্ঠার একটি স্মরণিকা।

সম্পাদনা করেন মোহাম্মদ আবদুল হাই। আকার ডিমাই ১/৮। ৫টি কবিতা ও ১০টি নিবন্ধ, স্মৃতিকথার এ স্মরণিকার বিষয়সূচি নীচে দেয়া গেল। ড. গোলাম সাক্লায়েন’র বন্দে আলী মিয়া স্মরণে, আসাদুল হক’র গ্রামোফোন রেকর্ডে বন্দে আলী মিয়া, রশীদ হায়দার’র শুধু দেখা, কাজী সালাহউদ্দীন’র কবি বন্দে আলী মিয়া সমীক্ষা, বন্দে আলী মিয়ার জীবনের দিনগুলি, রোকেয়া সাব্বির’র আব্বাকে যেমন দেখেছি, মোঃ ফরিদুল ইসলাম’র প্রসঙ্গ ঃ ময়নামতীর চর ও বন্দে আলী মিয়া, মোহাম্মদ আব্দুল হাই’র শিশু সাহিত্যে বন্দে আলী মিয়া (এ লেখাটি রেডিও বাংলাদেশ, ঢাকা কেন্দ্র থেকে প্রচারিত), বন্দে আলী মিয়ার শিশুতোষ রচনাবলীর তালিকা, আমাদের গাঁ শীর্ষক কবির স্বহস্ত লেখনের চিত্র, এবং কবিতাসমূহ মাহমুদ উল্লাহ্র স্মৃতি আছে বন্দে আলীর, সৈয়দ হায়দর’র বন্দে আলী মিয়া, সৈয়দ শামসুল হুদা’র তুমিতো ভালবাসা, আবদুল বারী হাওলাদার’র ভুলবোনা কোন দিন এবং সুমন সরদার’র ফিরে আসে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ড. গোলাম সাক্লায়েন।

শিশু সাহিত্যে বন্দে আলী মিয়া শিরোনামীয় সমালোচনা সাহিত্যের এ বইটি লিখেছেন (ড.) তসিকুল ইসলাম। প্রকাশক খোন্দকার গোলাম মোস্তফা, ব্যতিক্রম প্রকাশনী, নওদা পাড়া, সপুরা, রাজশাহী। গ্রন্থস্বত্ত্ব ঃ হোসনে আরা বেগম ডেইজী, বি-৬ বি, হেলেনাবাদ, রাজশাহী। ডিমাই ১/৮ আকার। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৭৬+১৬।

বোর্ড বাঁধাই। প্রচ্ছদ ঃ সৈয়দ লুৎফুল হক। মূল্য ঃ বাইশ টাকা মাত্র। উৎসর্গ বিশিষ্ট সমাজ সেবক এডভোকেট মহসীন খান শ্রদ্ধাষ্পদেষু। ভূমিকা লিখেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মজির উদ্দীন।

ভূমিকায় এম এ শেষ পর্বে গবেষণাপত্র হিসাবে গৃহীত বিষয়টি মুদ্রিতাকারে প্রকাশিত হওয়ায় øেহবরের প্রতি আশিস জানান হয়। পাঁচটি অধ্যায়ে বিভক্ত এ গ্রন্থের সূচিপত্র এমন ঃ বাংলা শিশু সাহিত্যের ধারা ও বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা-১, রচনা পরিসংখ্যান, পরিধি ও শ্রেণী বিন্যাস পৃষ্ঠা-১৬, রচনা পর্যালোচনা পৃষ্ঠা-৩৫, শিশুতোষ চিত্রাবলী পৃষ্ঠা-৫৫, চেতনা ও শৈলী ঃ মূল্যায়নের দৃষ্টিতে পৃষ্ঠা-৬২। এছাড়া পরিশিষ্ট অংশে জীবন তথ্য ও শিশুতোষ রচনাবলীর তালিকা (তালিকাটি বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত জীবনী বন্দে আলী মিয়া গ্রন্থে পুনর্মুদ্রিত হয়েছে) রয়েছে। কবি বন্দে আলী মিয়ার রচনা সম্পর্কিত বিষয় নির্ভর আলোচনা প্রকাশনার ক্ষেত্রে এটিই প্রথম উদ্যোগ একথা বলাইবাহুল্য। কবির চতুর্থ মৃত্যু বর্ষে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর।

কবি বন্দে আলী মিয়া স্মারক গ্রন্থ’র সম্পাদনা করেছেন গোলাম সাকলায়েন। যুগ্ম-সম্পাদক তসিকুল ইসলাম। প্রকাশক ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, রাজশাহীর পক্ষে মাসুদ আলী। ইসাকের প্রকাশনা নম্বর ৪২। ইফা প্রকাশনা নম্বর ৮৪৬।

ডিমাই ১/৮ আকার। পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৭৫+৪। দাম ঃ বার টাকা। প্রকাশিত হয় ১ বৈশাখ, ১৩৮৭ বঙ্গাব্দে। দু’টি কথা, সম্পাদকের কথা ছাড়াও কবির জীবন স্মৃতি ও সাহিত্য সাধনার মূল্যায়নে সমৃদ্ধ এ স্মারক গ্রন্থটির সূচিপত্রের নিরিখে লেখক তালিকায় রয়েছেন ২০জন।

যাঁদের রচনায় সমৃদ্ধ হয়েছে, তাঁরা হলেন আবুল ফজল- সাহিত্য সাধক বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা- ৯। আবদুল কাদির- আমার বন্ধু কবি বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা- ১১। কাজী কাদের নওয়াজ- কবি বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা- ২৫। আশুতোষ ভট্টাচার্য- ইরানে দোতার গান পৃষ্ঠা- ২৮। কে এম শমসের আলী- কবি বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা- ৩৩।

আবদুস সাত্তার- মিয়া ভাই পৃষ্ঠা- ৩৯। মুহম্মদ মনসুরউদ্দীন- কবি বন্দে আলী স্মরণে পৃষ্ঠা- ৪২। আবুল হাশেম- কবি বন্দে আলী মিয়ার সঙ্গে অন্তরঙ্গ কয়েকটি দিন পৃষ্ঠা- ৪৪। সুফিয়া কামাল কবি বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা- ৪৮। আজহার উদ্দীন খান- বন্দে আলী মিয়া ও বাংলা সাহিত্য পৃষ্ঠা- ৪৯।

মুহম্মদ আবু তালিব- চারণ কবি মুকুন্দ দাশের গান ঃ একটি ভিন্ন প্রেক্ষিত পৃষ্ঠা- ৬৩। মজির উদ্দীন মিয়া- নজরুল আলোচনা এবং বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা- ৭৪। রশীদুল আলম- বাংলা সাহিত্যে বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা- ১০৪। মুস্তাফিজুর রহমান- নিস্তরঙ্গ প্রতিভা পৃষ্ঠা-১৩৪। টি এইচ শিকদার- জীবনের শেষ ট্রেনে ঃ জীবন শিল্পী বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা- ১৩৮।

মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান- বন্দে আলী মিয়া ঃ জীবন ও সাহিত্য কীর্তি পৃষ্ঠা- ১৪৪। আসাদ চৌধুরী- বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা- ১৫৭। তসিকুল ইসলাম- অন্তরঙ্গ সান্নিধ্যে পৃষ্ঠা- ১৬১। রোস্তম আলী কর্ণপুরী- কবি বন্দে আলী মিয়া স্মরণে পৃষ্ঠা- ১৬৬। গোলাম সাকলায়েন- কবি সাহেব পৃষ্ঠা- ১৭০।

স্মারক গ্রন্থের আশুতোষ ভট্টাচার্য এবং মুহম্মদ আবু তালিবের সুখ পাঠ্য তথ্য সমৃদ্ধ নিবন্ধ দুটি বন্দে আলী মিয়ার সাথে সম্পর্কিত নয়। আসাদ চৌধুরীর নিবন্ধে কবির জন্ম সন ১৯০৭ উল্লিখিত হয়েছে। আবার আজহার উদ্দীন খান জন্ম সন ১৯০৮-এর পক্ষে মত দিয়েছেন। বেতার বাংলা’র বন্দে আলী মিয়া স্মরণী সংখ্যা প্রকাশিত হয় কবির তিরোধানের অব্যবহিত পরবর্তীতে ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দের জুলাইয়ের দ্বিতীয় পক্ষে। বেতার বাংলার সম্পাদক ঃ এ টি মফিজুল হক।

সহ-সম্পাদকদ্বয় ঃ আবদুল বারী হাওলাদার ও কাজী সালাহ উদ্দীন। প্রচ্ছদ ঃ মাহবুব আকন্দ। শুরুতে কবির অন্তিম শয়ানের দুটি সহ মোট পাঁচটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। কবির অঙ্কিত ছবির ফটোকপি ও মুদ্রিত হয়েছে নানা নিবন্ধের ফাঁকে ফাঁকে। কবির বিখ্যাত দুই কবিতা ‘আমাদের গ্রাম’ ও ‘কলমিলতা’ পুনঃ প্রকাশিত হয়েছে এ সংখ্যায়।

যদিও একই সংখ্যায় ইসমাইল হোসেন সিরাজী ও মহাকবি কায়কোবাদের ওপরে একাধিক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। প্রাসঙ্গিক বিধায় বেতার বাংলার ২৩টি পৃষ্ঠায় বন্দে আলী মিয়াকে নিয়ে নিবন্ধ, স্মৃতি চারণ, মূল্যায়ন ও কবিতার সূচিপত্র উল্লেখ করছি। কাজী সালাহউদ্দিন- কবি বন্দে আলী মিয়া সমীক্ষা। আসাদ চৌধুরী- বন্দে আলী মিয়া, আবুল হোসেন মিয়া -কবিকে যেমন দেখেছি। টি এইচ শিকদার- জীবন শিল্পী বন্দে আলী মিয়া।

মানসুর আল ফারুকী -অন্তরঙ্গ আলোকে কবি বন্দে আলী মিয়া। এস এম আবদুল লতিফ-কবি বন্দে আলীর জীবন ও সাহিত্য। ড. মুহম্মদ মজির উদ্দীন-কথা শিল্পী ও নাট্যকার বন্দে আলী। অধ্যাপক মাহবুব আলম বেগ- বন্দে আলী কাব্য সাধনা। তসিকুল ইসলাম- অন্তরঙ্গ সান্নিধ্যে।

বন্দে আলী মিয়া-জীবনের দিনগুলি। সৈয়দ শামসুল হুদার স্বরলিপি। বন্দে আলী মিয়ার গল্প ‘বরাত’ ও ছড়া ‘কাঠঠোকরা তবলা বাজায়’। মোশাররফ হোসেন ভূইয়াঁর কবিতা- তোমার বিদায়ে (কথাকলি অনুষ্ঠানে সম্প্রচারিত)। সম্পাদকীয়তে প্রবীণতম কবি আবদুল কাদির প্রয়াত বন্ধু বন্দে আলী মিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ করে কিছু না করা গেলে, সাহিত্য সেবায় কেউ উৎসাহিত হবে না এমন ধারণা পোষণ করা সংখ্যাটির প্রকাশনাকে প্রণোদিত করেছে উল্লিখিত হয়েছে।

রাজশাহীর ‘উত্তরা সাহিত্য মজলিস’ তাদের মুখপত্র ‘প্রতীতি’র সম্পাদক ও অন্যতম সদস্য কবি বন্দে আলী মিয়াকে সম্মাননা জানাবার সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত নেয় উত্তরা সাহিত্য মজলিস পদক-১৯৭৭ প্রদানের। সংখ্যাটি কবি বন্দে আলী সম্বর্ধনা সংখ্যা হিসাবে প্রকাশের উদ্যোগ নেয়। স্বাভাবিকভাবেই এ সংখ্যার সম্পাদনা করেন শামসুল হক কোরায়শী। ক্রাউন ১/৪ আকারের প্রতীতির ৫ম বর্ষ ৮ম সংখ্যা ১৫ মাঘ, ১৩৮৪ বঙ্গাব্দে ১১৮ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয়।

১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। এ সংখ্যার বিনিময় মূল্য তিন টাকা। প্রতীতি’র শুরুতে তিনটি বাণী মুদ্রিত হয়েছে। মজলিসের পৃষ্ঠপোষক ও রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার শফিউল আলম, মজলিসের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক যথাক্রমে এ হামিদ চৌধুরী ও আমিনুল হক এ বাণীগুলি দিয়েছেন। সম্পাদকীয়’র আগেই কবির ‘বিদায় প্রহর’ কবিতাটি পত্রস্থ হয়।

ছাপা হয় কবির ছবি। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে উৎসর্গ করা যেভাবে ঃ “কালের প্রবাহে তুমি এক/কালজয়ী স্মৃতির মিনার/তুমি যেন তারুণ্যের প্রতীক” শব্দগুচ্ছ। সূচিপত্রে সর্বমোট ৩৬ জন কবি সাহিত্যিক লিখিয়ে কবি বন্দে আলীর জীবন-সাহিত্য-সাধনা স্মৃতিময়তা-শ্রদ্ধা-ভালবাসার বাক্সময় প্রকাশ ঘটিয়েছেন। ক্রমানুসারে অধ্যাপক রশীদুল আলম’র- বাংলা সাহিত্যে বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা- ১। জাহানারা বেগম’র কবিতা- একটি গোলাপ চেয়েছিলে পৃষ্ঠা- ৩৫।

সৈয়দ শামসুল হুদা’র কবিতা- আপন সন্ধানে পৃষ্ঠা- ৩৬। মুহাম্মদ আবদুস সামাদ’র- কবিকে যেমন দেখেছি পৃষ্ঠা- ৩৮। আতাউর রহমান’র কবিতা- যাত্রী তিনি শিল্পী তিনি পৃষ্ঠা- ৩৯। শ্রীমতী রাণী চক্রবর্তী’র কবিতা- কবি বন্দে আলী ভাইকে প্রাণের বাণী পৃষ্ঠা- ৪০। নূরুল ইসলাম পাটোয়ারী’র- মাটির কবি মানুষের কবি পৃষ্ঠা- ৪১।

শামসুল হক কোরায়শী’র কবিতা- কবি বন্দে আলীকে পৃষ্ঠা- ৪২। এস এ হাসানাৎ আলী’র কবিতা- পূজনীয় পৃষ্ঠা- ৪৪। আবদুল গণি’র- রাজশাহী উত্তরা মজলিস ও কবি বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা- ৪৫। মল্লিকা সরকার’র কবিতা- কবি বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা- ৪৯। ডাঃ রাজিয়া সালাম’র- চিঠি অভিনন্দন পৃষ্ঠা- ৫০।

পূর্ণিমা রাণী দত্ত’র কবিতা- স্মরণিকা পৃষ্ঠা- ৫২। সৈয়দ রেদওয়ানুর রহমান’র- কবি ভাই পৃষ্ঠা- ৫২। আবদুল গণি চৌধুরী’র- কবিকে যেমন দেখেছি পৃষ্ঠা- ৫৫। ফজলুল হক’র- বন্দে আলী মিয়া ঃ জীবন ও সৃষ্টির প্রেক্ষাপট পৃষ্ঠা-৫৮। ড. মুহম্মদ মজির উদ্দীন মিয়া’র- বন্দে আলী মিয়ার নাট্য রচনা পরিচয় পৃষ্ঠা- ৬৩।

শ্রীরঘুনাথ দত্ত’র কবিতা- কবি বন্দে আলী মিয়াকে পৃষ্ঠা- ৬৮। রুমা’র কবিতা -লাখো সালাম পৃষ্ঠা- ৬৯। অচিন্ত্য কুমার সরকার’র- স্মৃতির স্বপ্ন পৃষ্ঠা- ৭০। মানসুর আল ফারুকী’র- অন্তরঙ্গ আলোকে কবি বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা- ৭৩। টি এইচ শিকদার’র- জীবন শিল্পী বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা - ৭৮।

অনীক মাহমুদ’র কবিতা- বাতায়নে চেয়ে রবো পৃষ্ঠা- ৮২। জাহাঙ্গীর আবদুল্লাহ্’র কবিতা- কলমিলতা চলে যাচ্ছেন পৃষ্ঠা- ৮৩। ইয়াকুতী বেগম’র- কবি নানা ঃ স্মৃতির পাপড়ি পৃষ্ঠা- ৮৪। ড. গোলাম সাকলায়েন’র- বন্দে আলী মিয়া প্রসঙ্গে পৃষ্ঠা- ৮৯। লোকমান হাকিম’র-সম্মানিত অর্জন পৃষ্ঠা- ৯৪।

কে এম শমশের আলী’র- কবি বন্দে আলী সান্নিধ্যে পৃষ্ঠা- ৯৮। জোহরা রহমান মায়া’র কবিতা- কবি দাদু আমার পৃষ্ঠা- ১০১। কাশেম আলী’র- কবি বন্দে আলী মিয়ার জীবনালেখ্য পৃষ্ঠা- ১০২। বুরহান উল ইসলাম’র- বিদায় বন্ধু পৃষ্ঠা- ১০৬। আয়েশা বেগম’র- কবিকে যেরূপে চিনেছি পৃষ্ঠা- ১০৭।

ইয়াকুতী ইসলাম বি.এ’র কবিতা- ওগো কবি পৃষ্ঠা- ১০৯। লুৎফন আরা বেগম’র- শিশু সাহিত্যে বন্দে আলী মিয়া পৃষ্ঠা- ১১০। মীর্জা আবদুর রশিদ’র- কবি বন্দে আলী মিয়াকে যেভাবে চিনেছি পৃষ্ঠা- ১১৪। মুহাম্মদ একরামুল হক’র- তুমি কি কেবলি ছবি পৃষ্ঠা- ১১৭। কবির জীবদ্দশায় প্রকাশিত এ সংখ্যায় ফজলুল হক, ড. মুহম্মদ মজির উদ্দীন মিয়া ও ড. গোলাম সাকলায়েন তাঁদের লেখায় কবির জন্ম সন-তারিখ প্রসঙ্গের উল্লেখ করেছেন যথাক্রমে ১৪/১৫ ডিসেম্বর-১৯০৬’, ‘১৯০৬’, ‘১৯০৬’, হিসাবে।

যদিও কাশেম আলীর রচনায় সেটি দাঁড়িয়েছে ১৭ জানুয়ারি ১৯০৭-এ। কবির চোখে এসব পড়েছে কিনা বা তাঁর প্রতিক্রিয়া কি ছিল, তার আভাস মেলেনি। আবার কে এম শমসের আলীর রচনায় কবির নিজ ভূমি পাবনার মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা ও সেখানে প্রতিষ্ঠাতা-অধ্যক্ষ হিসাবে তাঁর দু’বছর দায়িত্ব পালনের চমকপ্রদ উল্লেখ পাওয়া গেছে। বন্দে আলী মিয়া : কবি ও কাব্যরূপ’ নামীয় গ্রন্থটির রচয়িতা ড. আব্দুল আলীম। গতিধারা প্রকাশনী, ঢাকা থেকে গ্রন্থের প্রকাশক সিকদার আবুল বাশার।

প্রকাশ কাল : জুন ২০০৯। মূল্য ১৫০ টাকা। ডিমাই ১/৮ আকার। বোর্ড বাঁধাই। পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৪৪।

ওঝইঘ ৯৮৪-৪৬১-৩৮৭-২। সূচিপত্র দৃষ্টে : বাংলা কাব্যের ধারায় বন্দে আলী মিয়া ১১, বন্দে আলী মিয়ার কবিতার বিষয় ভাবনা ২৪, গ্রামীণ জীবন ও প্রাত্যহিকতা ২৫, লোক সংস্কৃতির রূপায়ণ ৩৫, প্রকৃতি ও সৌন্দর্য চেতনা ৪৮,সাধারণ মানুষ ৫২, ইতিহাস-ঐতিহ্য-সমকাল ৭৩, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ ৮৪, আঞ্চলিক প্রসিদ্ধি ৮৯, প্রেম চেতনা ৯৮, বন্দে আলী মিয়ার কাব্যের শিল্পরূপ ১০৮, ভাষাশৈলী ও শব্দানুষঙ্গ ১০৯, ছন্দের ব্যবহার বৈচিত্র্য ১১৭, অলঙ্কারের প্রয়োগ নৈপুণ্য ১২৩, বন্দে আলী মিয়ার জীবনী : একটি অজানা তথ্য ১৩০, রবীন্দ্রনাথের চিঠি ১৪০, কবি অঙ্কিত প্রচ্ছদ ১৪১, আলোকচিত্রে কবি ও কবির সমাধি ১৪২, বংশ পরিচয় সংবলিত দলিল ১৪৩, বংশ লতিকা ১৪৪। বন্দে আলী মিয়া জন্ম শতবর্ষ স্মারক। কবি বন্দে আলী মিয়া স্মরণ পরিষদ, পাবনা থেকে শফিকুল ইসলাম শিবলী ও ড. মো. হাবিবুল্লাহ সম্পাদিত স্মারক গ্রন্থটির আকার রয়্যাল ১/৮। প্রকাশ কাল মার্চ ০১, ২০০৫।

মূল্য : ৭০ টাকা। অন্তরঙ্গ অবলোকন, মূল্যায়ন ও নিবেদিত কবিতা উপশিরোনামে সূচিপত্র বিন্যস্ত। পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১১৬। কবি অঙ্কিত প্রচ্ছদ, ইলাসট্রেশন, হস্তলিপি ইত্যাদির দুর্লভ সংগ্রহ স্মারকটিকে সমৃদ্ধ করেছে। লেখক তালিকায় পড়ি : মুহম্মদ মনসুরউদ্দীন-কবি বন্দে আলী স্মরণে ১১, সুফিয়া কামাল-কবি বন্দে আলী মিয়া ১৩, আবুল হাসেম-কবি বন্দে আলী মিয়ার সঙ্গে অন্তরঙ্গ কয়েকটি দিন ১৪, গোলাম সাকলায়েন-কবি সাহেব ১৭, মানসুর আল ফারূকী-অন্তরঙ্গ আলোকে কবি বন্দে আলী মিয়া ২০, রশীদ হায়দার-শুধু দেখা ২৪, জয়নুল আবেদীন মাহবুব-আমার স্মৃতিতে কবি বন্দে আলী মিয়া ২৬, রোকেয়া সাব্বির-আব্বাকে যেমন দেখেছি ৩১, মো. জহুরুল ইসলাম বিশু-কবি বন্দে আলী মিয়া সড়ক ৩৪।

মূল্যায়ন পর্বে : আবুল ফজল-সাহিত্য সাধক বন্দে আলী মিয়া ৩৬, মুহম্মদ মজির উদ্দীন মিয়া-বন্দে আলী মিয়ার নাট্য পরিচয় ৩৮, রশীদুল আলম-ফুল ফোটানোর সাধনা ৪২, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান-কবি বন্দে আলী মিয়া : জন্মশতবর্ষ ও প্রাসঙ্গিক কথা ৪৫, মুহা. আবদুল আজিজ-বিচিত্র প্রতিভার অধিকারী : কবি বন্দে আলী মিয়া ৪৯, তসিকুল ইসলাম-কবি বন্দে আলী মিয়ার গ্রামীণ জীবন ৫৬, মোঃ ফরিদুল ইসলাম-প্রসঙ্গ : ময়নামতীর চর ও বন্দে আলী মিয়া ৬৮, মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন-না দেখা কাছের মানুষ ৭১, শফিক উদ্দিন আহমেদ-বন্দে আলী মিয়ার গান : বন্দে গীতি ৭৪, জান্নাতুন নওরোজ মুন্নী- সম্পাদক করকমলেষু ৭৭, মো. হাবিবুল্লাহ-বন্দে আলী মিয়ার আঁকা আঁকি ৮১, শফিকুল ইসলাম শিবলী-বন্দে আলী মিয়া : যত লেখালেখি ৮৫। নিবেদিত কবিতার কবি’রা হলেন : ওমর আলী, মনোয়ার হোসেন জাহেদী, মোসতাফা সতেজ, মুহাম্মদ নূরুজ্জামান মুসাফির, লিখন অরণ্য, ইদ্রিস আলী, আজিজুল হক ও সৈয়দ রুমী। স্বরলিপি ১০০, পরিশিষ্ট : রচনাপঞ্জি ১০৩, কবি রচিত গান ও একাঙ্কিকার তালিকা (গ্রামোফোন রেকর্ড) ১০৫, জীবনপঞ্জি ১১০। বন্দে আলী মিয়ার উপরে লেখালেখির জন্য তথ্য সমৃদ্ধ এ আকর স্মারক গ্রন্থটি সংগ্রহে রাখার মতই একটি প্রকাশনা। লেখালেখির এ পর্যায়ে এসে পাঠকের মনে যদি এ ধারণা বদ্ধমূল হয় যে, পাবনার কবি বন্দে আলী মিয়ার সম্পর্কে এর বাইরে আর কোনো আলোচনা হয়নি, সেটা হবে ভুল।

এর বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রকাশিত সাময়িকী, দৈনিক ও সাহিত্যপত্রে কবির জীবন ও সাধনার বিষয়ে মানসম্পন্ন আলোচনা প্রকাশিত হয়েছে বা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান, শিশু একাডমেী’র শিশু বিশ্বকোষ ও বাংলাপিডিয়া-তে ‘বন্দে আলী মিয়া’ অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তথ্য বিভ্রান্তি যাই থাক না কেন, স্মৃতি সংরক্ষণের এসব স্থায়ী ব্যবস্থায় তাঁর ভুক্তি আশান্বিত করে এই জেনে যে, তিনি হারিয়ে যাবেন না। তাঁর জীবন বা সাহিত্য সাধনার উপরে, গবেষণাধর্মী অনুসন্ধিৎসু লেখালেখির সংখ্যা খুবই নগণ্য। আগামীতে হয়তোবা এ অবস্থার অবসান ঘটবে, সে প্রত্যাশায় বর্তমান লেখালেখিতে মোটা দাগের তথ্য উপকরণ প্রাপ্তির সন্নিবেশ ঘটানোর চেষ্টা নেয়া হয়েছে।

ওয়েব সাইটে কবি বন্দে আলী মিয়াকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তার উল্লেখ করে এ লেখালেখির ইতি টানছি। যঃঃঢ়: //িি.ি ঢ়ধনহধ.হবঃ/নসরধ.যঃস-এ ব্রাউজ করলে স্ক্রিনে ভেসে উঠবে - চড়বঃ ইধহফব অষর গরধ (১৭-০১-১৯০৬ূ১৭-০৬-১৯৮২) ধিং ধ নরৎফ. ঐব ধিং ধধিৎফবফ চৎবংরফবহঃং ধধিৎফ ধহফ ইধহমষধ অপধফবসু ধধিৎফ. অ াবৎু ঢ়ৎড়ফঁপঃরাব ঢ়ড়বঃ ধহফ ৎিরঃবৎ. ঞরষষ যরং ফবধঃয যব ৎিড়ঃব ৮৪ নড়ড়শং, সড়ংঃ ড়ভ ঃযবস যধাব পড়ঁহঃৎুংরফব নধপশ মৎড়ঁহফ. ঐব ধিং ংপযড়ড়ষ ঃবধপযবৎ নু ঢ়ৎড়ভবংংরড়হ রহ ঈধষপঁঃঃধ (ঁহঃরষষ ১৯৪৭), ধষংড় বফরঃবফ ইরশধংয ধহফ ইযড়ৎবৎ অষড়-ঃড়ি বিষষ শহড়হি ঢ়বৎরড়ফরপধষং ধঃ ঃযধঃ ঃরসব. ঞযব ঢ়ড়বঃ ধিং ংপৎরঢ়ঃ-ৎিরঃবৎ ধঃ জধলংযধযর জধফরড় ংঃধঃরড়হ. অ ংঁপপবংংভঁষ ঢ়ঁনষরংযবৎ ঃড়ড় ... । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.