স্কুলছাত্রী জানায়, অপরাধ করল বখাটে রাসেল আর সাজা ভোগ করতে হলো আমাকে। স্যাররা আমাকে স্কুলে যাইতে নিষেধ করছে। তাই স্কুলে যাই না। এলাকায় মুখ দেখাতে পারি না। সারাদিন ঘরের মধ্যে বসে থাকি।
নির্যাতিত স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, গরিব ও দুর্বল লোক হওয়ায় সালিসদাররা এ রকম অন্যায় করছে। আমি এ অন্যায়ের বিচার চাই।
শ্লীলতাহানি চেষ্টার গ্রাম্য সালিসের ফতোয়ায় শিবচরের চরাঞ্চলে নির্যাতিত ছাত্রীকে দোররা মেরে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার চরজানাজাত ইউনিয়নের ইলিয়াছ আহম্মেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে পার্শ্ববর্তী দিপু গাছির বখাটে ছেলে রাসেল গাছি প্রেম নিবেদনসহ কু-প্রস্তাব দিত। গত ৯ জুন স্কুলে যাওয়ার পথে বখাটে রাসেল ছাত্রীকে আবারও কুপ্রস্তাব দেয়।
এতে সে রাজি না হওয়ায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখিয়ে একটি পাট খেতে নিয়ে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। স্কুলছাত্রীর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে রাসেল পালিয়ে যায়। বিষয়টি স্কুলছাত্রীর পিতা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. সুলতান মাহমুদকে জানান। প্রধান শিক্ষক বেশ কয়েকদিন পর গত ২২ জুন বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে বিচার ডাকেন।
গত ২২ জুন দুপুরে স্কুলের লাইব্রেরিতে প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে বিচার সালিস বৈঠক বসে।
এ সময় স্কুলছাত্রীকে চরিত্রহীনসহ বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে দোষী সাব্যস্ত বানানোর চেষ্টা করে বখাটের পক্ষ। উভয়পক্ষের সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বখাটে ও স্কুলছাত্রীকে ৫০টি করে বেত দিয়ে দোররা মারার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। তাছাড়া মেয়েটিকে স্কুলে যেতেও নিষেধ করা হয় এ বৈঠকে।
মেয়েটির পিতা প্রথমে রাজি না হলেও একপর্যায়ে দোররা মারে। এভাবেই বিষয়টির সুরাহা টানা হয়।
গত ২৮ জুন সন্ধ্যায় এ ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মেয়েটির বাবা। স্কুলছাত্রী জানায়, অপরাধ করল ও (বখাটে রাসেল) আর সাজা ভোগ করতে হলো আমাকে। স্যাররা আমাকে স্কুলে যাইতে নিষেধ করছে। তাই স্কুলে যাই না। এলাকায় মুখ দেখাতে পারি না।
সারাদিন ঘরের মধ্যে বসে থাকি।
নির্যাতিত স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, গরিব ও দুর্বল লোক হওয়ায় সালিসদাররা এ রকম অন্যায় করছে। আমি এ অন্যায়ের বিচার চাই। থানায় অভিযোগ করার পর থেকে রাসেলের পরিবার বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
দোররার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, সালিসদাররা রাসেল ও ছাত্রীটিকে বেত মারার সিদ্ধান্ত দেয়।
সে মোতাবেক চৌকিদার রাসেলকে ও মেয়েটির মা মেয়েকে কয়েকটা বেত মেরেছে। বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় সবার সম্মতিতে ছাত্রীটিকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এখনো টিসি দেইনি। অভিযোগটির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আহম্মদ আলী বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে আমি বখাটের উত্ত্যক্তপনার সত্যতা পেয়েছি। মেয়ের বাবার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
কিন্তু দীর্ঘদিন হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি জটিল হয়ে পড়েছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।