দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাপার হে, লঘি্নতে হবে রাত্রি নিশিতে যাত্রীরা হুশিয়ার সন্ধা ঘনিয়ে আসছে। শীত কাল আসতে এখনো অনেক বাকী তার পরও চারদিকে কেমন কুয়াশা কুয়াশা লাগছে। ঠিক কুয়াশা নয় ধোঁয়ার মত এক ধরনের আভা যেটা চারপাশের পরিবেশকে কেমন যেন অপার্থিব অপার্থিব ভাব করে রেখেছে। সূর্য পশ্চিমে আধ হাত উপড়ে আছে। এই সূর্যের আলোর কোন তেজ নেই।
যার গায়ে পড়ছে তার গা'ই চকচক করছে ঈশান কোনে লাল টকটকে মেঘ।
করিম সাপুড়ের আজ বিশেষ তাড়া। গাঁয়ের ধনী পরিবার গুলোর মধ্যে একটি হল লতিফ বেপাড়ী। তার ছেলেকে সাপে ছোট ছেলেকে সাপে কেটেছে। ছেলেটার নাম মনে পড়ছে না সাপুড়ের।
তার শরীর ঘামছে, পা দুটো অবশ হয়ে আসেছে। একটানা কতটা পথ হাঁটা যায়। সে আজ ৫ মাইল পথ হেঁটে এসেছে। তার মেয়ের একটি ছেলে সন্তান হয়েছে। ভারী সুন্দর দেখতে।
নামটা তারই দেবার কথা ছিল। নাম নিয়ে ভাবতে বসেই খবর গেল লতিফ বেপাড়ীর ছেলেকে সাপে কেটেছে তার জরুরী তলব। বেপাড়ী বলে কথা তার ওপর গ্রামের মাতবর সে। তার কথা না শুনলে কখন কোন বিপদে ফেলে দেয় কে জানে। নাতীর নাম ঠিক করা হল না।
খবর শুনেই দে ছুট। এ পথে বিকেলের দিকে কোন গাড়ী আসে না। দু একটা ভ্যান যা তাও আজ নেই অগত্যা হেটেই আসতে হল তাকে। গ্রামে ঢুকে প্রথম সে তার বাড়ীতে উঁকি দিয়েছিল বসেনি একদম। হাপাতে হাপাতেই আবার বের হল সে।
গ্রামের শেষ মাথায় লতিফ বেপাড়ীর বাড়ী। ঐতো ঐযে লম্বা তালগাছটা তার পরের পুকুর পাড়ের উপরেই বাড়িটা।
বাড়িতে বিশাল আয়োজন। যে ছেলেটাকে সাপে কেটেছে তার মুখে কোন কথা নাই, শব্দও করছেনা। 'এই একটু আগেও তো চোখ খোলা ছিল, এখন আবার চোখও বন্ধ খুলছে না' বলে ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল ওদের বাড়ির বৃদ্ধা।
:কি মিয়া আজ কাল তো তোমার বেশ দাম; লতিফ বেপাড়ী কন্ঠে হতচকিত সাপুড়ে।
:না মানে আমার নাতী হয়েছে তো।
: নাতী হউক আর যাই হউক আমার ছেলেটাকে সাপে কেটেছে দুপুর দু'টা আর তুমি এসেছে ভরা সন্ধায় আজ আজ আমার ছেলেটার কিছু হয়ে গেলে?
: জী হুজুর আসলে জীবন মরন তো উপড়ওলায়ার ইচ্ছায় আমি উছিলা মাত্র।
: মুখে মুখে তর্ক করবে না যাও কাজ শুরু করো
: জ্বী আচ্ছা।
করিম সাপুড়ে কাজ শুরু করার আগে চারপাশটা একবা দেখে নিল।
বাড়িতে একটা থমথমে ভাব বিরাজ করছে। কিছুক্ষণ আগে যে কান্নার শব্দ ছিল এখন আর তা নেই। শুধু কুকুরটা একটানা লেজ নাড়াতে নাড়াতে সাপুড়ের আশে পাশে ঘুড়ঘুড় করছে যেন তাকে কিছু বলতে চায়।
: খোকন খোকন; কোন সাড়া নেই দেখে সাপুড়ে হাত চালান করল। তার হাত পা থেকে শুরু করে হাটু, কোমড়, বুক হয়ে সোজা মাথায় চলে গেল।
: হুজুর সর্বনাশ হয়ে গেছে।
: কি হলো বিষ মাথায় চলে গেছে?
: জ্বি
: তাহলে এখন কি করতে হবে?
(আপনাদের অনুপ্রেরনায় চলবে) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।