মঙ্গলবার কাদের মোল্লার মামলায় আপিল শুনানি শেষ হওয়ার পর নিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ আশার কথা বলেন সরকারের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা।
তিনি জানান, এরপর জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানিই প্রথমে হবে।
“কাদের মোল্লার আপিলে অনেকগুলো আইনগত বিষয় ছিল। সে সব বিষয়ে শুনানি হয়েছে। অ্যামিকাস কিউরিরা বক্তব্য দিয়েছেন।
আপিল বিভাগ এখন এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে। ”
এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে সাঈদী-কামরুজ্জামানসহ পরবর্তী আপিলগুলোর ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগবে না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, “সামনে সুপ্রিম কোর্টের বড় একটি ছুটি রয়েছে। এই ছুটিতেও আপিল শুনানি অব্যাহত রাখার আবেদন করা হবে কি না সে বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। ”
সুপ্রিম কোর্টের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী অগাস্ট মাসে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে মাত্র একদিন বিচার কাজ চলবে।
সেপ্টেম্বর মাসে চলবে ১২দিন, অক্টোবরে ৮ দিন, নভেম্বরে ১৯ দিন, ডিসেম্বরে ১০ দিন বিচার কাজ হবে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে।
জুলাই মাসের সাত কার্যদিবস মিলিয়ে অক্টোবর পর্যন্ত ২৭ দিন বিচার কাজ হবে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে আরো ২৯দিন ফুল কোর্টের এজলাসে বসবেন আপিল বিভাগের বিচারকরা।
মাঝে ৪ অগাস্ট থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে বার্ষিক ছুটি। এরপর অক্টোবরে ঈদ উল আজহা ও দূর্গাপূজার ছুটি।
এছাড়া ডিসেম্বরে রয়েছে শীতকালীন ছুটি।
রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আপিল শুনানি শেষে মঙ্গলবার আব্দুল কাদের মোল্লার যুদ্ধাপরাধের মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে সর্বোচ্চ আদালত।
২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় রায়ে কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল।
রায়ে বলা হয়, এই জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে এবং একটি রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পারেনি।
এর মধ্য দুটি অভিযোগে কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন এবং আরো দুটি অভিযোগে ১৫ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়।
ওই রায়ের পর কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সারা দেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হলে সরকার আইন সংশোধন করে আপিলের ক্ষেত্রে প্রসিকিউশন ও আসামি-উভয় পক্ষের সমান সুযোগ তৈরি করে।
আগে প্রসিকিউশন শুধু খালাসের ক্ষেত্রে এবং আসামিপক্ষ সব ক্ষেত্রেই আপিল করার সুযোগ পেত।
গত ২১ জানুয়ারি প্রথম রায়ে ট্রাইব্যুনাল-২ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশ দেয়। মামলার পুরো প্রক্রিয়া চলাকালে পলাতক বাচ্চু রায়ের পরও আত্মসমর্পণ করেননি বা তিনি গ্রেপ্তার হননি।
এ কারণে তার মামলাটি আপিল পর্যায়ে আসেনি।
তৃতীয় রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসি হলে জামায়াতের ঘাঁটি বলে পরিচিত এলাকাগুলোতে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি হিসেবেই পুলিশসহ নিহত হয় ৭০ জনেরও বেশি মানুষ।
এরপর গত ৯ মে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকেও মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল।
আর গত ১৫ জুলাই গোলাম আযমের ৯০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ হয়।
১৭ জুলাই দেয়া ষষ্ঠ রায়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও একাত্তরের বদরপ্রধান মুজাহিদকে ফাঁসির আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে সাঈদী ও কামরুজ্জামানের আপিল উচ্চ আদালতে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।