অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া! আজ ২৬ জুন সকালে ধামরাই জামালউদ্দিন হাই স্কুলে একটি স্মার্ট ক্লাশরুম ও কম্পিউটার ল্যাবের উদ্বোধন করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান এবং আইসিটি মন্ত্রণালয়, ডি-নেট এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের সংগঠন ভলান্টিারি এসোসিয়েশন ফর বাংলাদেশ-এর অংশিদারিত্বের ভিত্তিতে সম্পন্ন হয়েছে।
ক্লাশরুমে একটি বড়ো পর্দার টেলিভিশন ও ল্যাপটপ রাখা হয়েছে আর ল্যাবগুলোতে কম্পিউটার। টেলিভিশনটা যাতে কারেন্ট না থাকলেও চলতে পারে সে জন্য সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউস্সিলের চলমান কর্মসূচীর আওতায় এমন ১০০টি ক্লাশরুম ও ল্যাব ১০০টি স্কুলে স্থাপন করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৬০টির কাজ শেষ পর্যায়ে। ধামরাই দিয়ে আনুষ্টানিকতা শুরু হলো।
উদ্বোধনীদিনে মাননীয় আইসিটি মন্ত্রীর সঙ্গে মানবদেহের পরিপাকত্রন্ত্র সংক্রান্ত একটি ক্লাশ আমরা করেছি। আমার নিজের কাছে আজকে পরিস্কার হলো কেন তাড়াতাড়ি খেলে আমরাদের হেঁচকি উঠে!!
স্মার্টক্লাশরুম বলতে যা বোঝানো হয় উন্নত বিশ্বে সেটা করতে আমাদের অনেক সময় লাগবে।
সেখানে তিনটে কম্পোনেন্ট থোকে - মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্ট ডেলিভারি, ভার্চুয়াল ইন্টারেকশন বিটউইন স্টুডন্টে এন্ড টিচার এবং পিয়ার লার্নিং ফ্যাসিলিটেশন। এর মধ্যে প্রথমটি হলো ক্লাশে টিভি বা প্রজেক্টরে কন্টেন্ট ডেলিভারি। আমরা প্রজেক্টরের পরিবর্তে টিভিতে গিয়েছি যাতে ব্রডকাস্টিং এর সুবিধা পাওয়া যায়। আমরা যে ক্লাশটি করেছি সেখানে এনিমেশনের সাহায্যে খাবার গ্রহণের পর তা কীভাবে পরিপাক হয় সেটা দেখানো হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থী মুখস্ত না করে ব্যাপারটা অনুধাবন করতে পারছে।
দ্বিতীয় যেটা সেটা আমরা এখনো করতে পারি নাই। এটা কৌন বনেগা ক্রোড়পতিতে দেখা যায় যখন পাবলিক অপিনিয়ন নেওয়া হয়। মানে সবার হাতে একটা কিছু থাকে যার মাধ্যমে সে কোন প্রশ্নের জবাব (এ বি সি না ডি) বলতে পারে। তারপর সঠিক উত্তর দেখা যায়। এত ক্লাশের জেনারেল একসেপ্টেন্স লেবেল, স্কিল লেবেল বোঝা যায সঙ্গে সঙ্গে।
ট্রাডিশনাল পদ্ধতিতে এর জন্য পরীক্ষা (সেটা ক্লাশ বা ইউনিট টেস্ট যাই হোক) পর্যন্ত অপেক্ষা করা লাগে।
তিন নম্বর হলো পিয়ার লার্নিং। এটা হলো সহপাঠীর কাছ থেকে শেখার একটা পরিবেশ করা। এটা টেকনোলজি ছাড়া বা টেকনোলজি দিয়ে করা যায়। ম্যাথ ক্যাম্পে আমরা এই কাজটা করি।
যেখানে ক্যাম্পাররা নিজেরাই অন্যদের সাহায্য করে। আমাদের দেশে প্রচলিত একটি ধারণা হল শিক্ষার্থীরা নিজেরা কিছু শিখতে পারে না। ওদেরকে শেখাতে হয়। কিন্তু দেখা গেছে শিক্ষার্থীরা তাদের জ্ঞানী বন্ধুদের কাছ থেকেই বেশি শেখে!! আমাদের ক্লাশরুমগুলোতে এ অবস্থায় আনতে আরো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।
টেকসই এর জন্য আমরা এই ল্যাবটি সরাসরি সরকার করে দেয়নি।
এখানে সরকারের অবদান ৬২%, অনেকখানি করেছে প্রবাসীরা আর স্কুলকেও বিনিয়োগ করতে হয়েছে। আমরা কমিউনিটিকে সঙ্গে রাখার চেষ্টা করেছি। তবে, শেষ পর্যন্ত কী হবে সেটা সময়ই বলবে। আমরা কেবল আমাদের চেষ্টা, একটু বেশি করে, করে যেতে চাই!
উদ্বোধন করার পর মাননীয় প্রতিমন্ত্রী যে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তা কবিতার ভাষায় বললে হয়তো এমন শোনাবে----
স্মার্টক্লাশে পড়বে শিশু
বদলে দেবে দিন,
জ্ঞানসাগরের মুক্তো সেচে
শুধবে মাটির ঋণ!
যে কোন দূরের রাস্তা ঘর হতে দুইপা ফেলে শুরু করতে হয। আমরা কনসেপ্ট আর টিভি-ল্যাপটপ এবং শিক্ষার্থীদের জন্য কম্পিউটার ল্যাব দিয়ে সেটা শুরু করেছি।
সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক্।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।