সবকিছু অন্ধকার হতে শুরু , অন্ধকারেই শেষ... লেখাটির উৎস, প্রথম আলোর চিঠিপত্র বিভাগ
সূত্র
সমুদ্র প্রহরী আমাদের ইয়াদুল
নিবেদিতপ্রাণ এক প্রকৌশলী আজ ক্যানসারে আক্রান্ত। দেশের সমুদ্রসীমার জন্য লড়াই করছিল যে ইয়াদুল, সে আজ নিজেই লড়ছে মৃত্যুর সঙ্গে। নড়াইলের লোহাগড়ার সেই চুপচাপ ছেলেটা এসএসসি ও এইচএসসিতে জায়গা করে নিয়েছিল মেধাতালিকায়। এইচএসসি পাস করে ইয়াদুল নৌবাহিনীতে যোগ দেয়। বুয়েট পাস করে দক্ষ সমুদ্রযোদ্ধা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
তার মূল পদচারণ সমুদ্র আইন নিয়ে। প্রায় তিন বছর গবেষণা করেছেন সমুদ্রসীমান্ত-সংক্রান্ত বিষয়ে। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে যে আলোচনা চলছে, সেখানে বাংলাদেশের হয়ে যাঁরা আলোচনা করবেন, তাঁদের অন্যতম ইয়াদুল।
ইয়াদুলই প্রথম ২০০৯ সালের ৬ অক্টোবর চট্টগ্রামে আয়োজিত এক সেমিনারে তার গবেষণা প্রবন্ধ থেকে জানায় যে ১৯৮২ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক নির্ধারিত সমুদ্রসীমা নির্ধারণসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক দলিলের ৭৪ ও ৮৩ অনুচ্ছেদে বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারের সমুদ্রসীমা নির্ধারণে ইকুইটেবল পদ্ধতি অবলম্বনের কথা উল্লেখ থাকলেও ভারত ও মিয়ানমার বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকা দখলের চেষ্টায় ইকুইডিসট্যান্স পদ্ধতি অবলম্বনের চেষ্টা করছে। ইকুইটেবল পদ্ধতিতে বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকার আয়তন দুই লাখ সাত হাজার বর্গকিলোমিটার হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
কিন্তু ভারত ও মিয়ানমারের বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকা দখলের চেষ্টার বাস্তবায়নস্বরূপ ইকুইডিসট্যান্স পদ্ধতি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের প্রায় এক লাখ ৩৮ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকা ওই দুটি রাষ্ট্রের দখলে চলে যাবে, যা বাংলাদেশের মোট সমুদ্র এলাকার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ। ’
সমুদ্র চলে যাওয়া মানে কিছু পানি চলে যাওয়া নয়। সমুদ্র চলে যাওয়া মানে সমুদ্রের অতলে উত্তোলনের অপেক্ষায় থাকা গ্যাস, তেলসহ আরও অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ চলে যাওয়া। সমুদ্রসীমা নির্ধারণ নিয়ে বাংলাদেশসহ এই তিনটি দেশকে সমুদ্র এলাকায় অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি উপস্থাপনের জন্য ২০১১ সালের ২৭ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে জাতিসংঘ। এই লড়াইয়ে আমাদের জেতা খুব দরকার।
আর এ জন্য আমাদের দরকার সমুদ্র আইন বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ইয়াদুল ইসলামকে। সে যেখানে দেশের জন্য কোটি কোটি টাকার সম্পদ রক্ষার লড়াইয়ে নিজের মেধা ও পরিশ্রম ঢেলে দিয়েছে, সেখানে আমরা দেশবাসী তার জীবনের জন্য নিশ্চয় কিছুটা ত্যাগ স্বীকার করতে পারি।
ইয়াদুল এখন সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল হসপিটালে শুয়ে আছে। আমাদের মহামূল্যবান সমুদ্রসম্পদ মেধা আর দক্ষতা দিয়ে রক্ষা করার জন্য সে যখন প্রস্তুত, তখন সে লড়াই করছে জীবনের সঙ্গে, ক্যানসারের সঙ্গে। মেধাবী এ মানুষটির বেঁচে থাকা দরকার শুধু তার পরিবারের জন্য নয়, দেশের জন্য, জাতির জন্য।
আমরা তার সহপাঠীরা বুয়েটের ক্লাসমেটরা, নেভির সহকর্মীরা, মার্চেন্ট নেভিসহ নাম না জানা অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী তার পাশে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু খরচের বোঝাটা যে অনেক ভারী। আরও প্রায় ২৭ লাখ টাকার প্রয়োজন, চিকিৎসা সম্পূর্ণ করতে।
অনাগত প্রজন্মের জন্য যিনি আমাদের বিশাল সমুদ্র আগলে রাখছিলেন, তার দুঃসময়ে পাশে না দাঁড়ানো হবে ক্ষমাহীন অপরাধ। আসুন, আমরা তার রোগমুক্তির জন্য দোয়া করি।
নিজ নিজ সামর্থ্যে অর্থসাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসি। যত সামান্যই হোক, টাকা পাঠানো যেতে পারে এই অ্যাকাউন্টে:
শাহিনা ইসলাম, অ্যাকাউন্ট ০০০২-০৩১৩০০০১৯৪, ট্রাস্ট ব্যাংক, প্রিন্সিপ্যাল ব্রাঞ্চ, ঢাকা সেনানিবাস। বিদেশে অবস্থানরত বন্ধুরা এই অ্যাকাউন্টে পাঠাতে পারেন: Account name: Md Hasan Iftekhar; DBS Saving Plus account number: 054-5-027108; DBS Bank; Branch code :054; BankCode:7171; Singapore.
ধরিত্রী সরকার, প্রকৌশলী। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।