আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বড়ই চমকিত হইতে হয়

জীবনও যখনও শুকায়ে যায় করুণা ধারায় এসো.. মাগুরা জেলা তথ্য বাতায়ন ওয়েব সাইটে জেলা প্রশাসক শ্রী সুশান্ত কুমার সাহা জেলা প্রশাসকের বার্তায় লিখেছেন-কবি ফররুখ আহমদ, ডা. লুৎফর রহমান, সৈয়দ আলী আহসান, যতীন্দ্র মোহন বাগচী, কাজী কাদের নওয়াজ এবং প্রখ্যাত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এর জন্মভূমি এ মাগুরা জেলা। .......তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' গড়ার প্রত্যয়ে মাগুরা জেলাকে ডিজিটাল জেলা হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াসে জেলা প্রশাসন এ ওয়বে সাইট খোলার উদ্যোগ নিয়েছে। ......এ ওয়বে সাইটের মাধ্যমে জনগণের জন্য জেলা প্রশাসনের সেবার মান ও গতি আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছ। ’’ কিন্তু অতীব দুঃখের সঙ্গে বিস্ময় প্রকাশ করছি যে, সত্যি যদি জেলা প্রশাসকের বার্তাটিকে যদি কেউ আপ্ত বাক্য মনে করে ব্যক্তিগত জীবনে ব্যবহার করেন তাহলে তিনি কতটুক ‘ধরা খাইতে পারেন’ তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের বার্তায় যতীন্দ্র মোহন বাগচীর জন্ম স্থান হিসেবে মাগুরা ‘শোভা পাইতেছে’।

মহোদয়ের বার্তায় যতীন্দ্র মোহন বাগচীর জন্ম স্থান হিসেবে মাগুরাকে চিহ্নিত করায় বরং ‘অশোভিত হইয়াছে বলিয়া’ মনে হয়। জেলার শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরেক ধাপ উপরে আছেন। তিনি তার ওয়েব সাইটে মাগুরার শ্রীপুরে কবির জন্ম স্থান উল্লেখ করে ‘কেয়া’ ও ‘বন্ধুর দান’ নামে দুটি নাম সংযোজন করেছেন। অর্থাৎ এই দুটি তথ্য থেকে পরিস্কার বোঝা যায় যে, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় ‘কাজলা দিদি’র কবি যতিন্দ্র মোহন বাগচির কথা বোঝাতে চেয়েছেন। অতিব বিস্ময়ের সঙ্গে বলতে হচ্ছে যে, মাগুরা জেলার এই দুই সরকারি হত্যাকর্তা ব্যক্তি জানেন না যে, কাজলা দিদি’র কবি যতিন্দ্র মোহন বাগচির জন্ম স্থান ভারতের নদীয়া জেলার জামশেরপুরে।

তো ডিজিটালাইজড এই বিষয়টি জানতে পেরে ভারতে বসবাসকারী কবি পরিবারের সদস্য তরুণ কবি ইশিতা ভাদুড়ি, বাংলা একাডেমির উপ-পরিচালক কথা সাহিত্যিক তপন বাগচি, মাগুরার অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কবি পরিবার থেকে জানা যায়, কাজলা দিদির এই কবি ১৮৭৮ সালের ২৭ নভেম্বর ১২৮৫ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ মাসে নদীয়া জেলার জমশেরপুরের বিখ্যাত জমিদার বাগচি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। এ পরিবারে তখন রামপ্রাণ বাগচি, জ্ঞানেন্দনারায়ণ বাগচি ও কবি দ্বিজেন্দ্রনারায়ণ বাগিচ সাহিত্য জগতে প্রতিষ্ঠিত নাম। যতীন্দ্র মোহন বাগচির ঠাকুরদা রামগংগা ছিলেন নাসিরপুর রাজার দেওয়ান। তার বাবা হরিমোহন বাগচি ছিলেন নদীয়া জেলার সম্মানী ব্যক্তি।

যতীন্দ্রমোহন বাগচি প্রতাপশালী জমিদার পরিবারের সন্তান হলেও সাধারণের সাথে মিশেই তিনি সেখানে শৈশব পার করেছেন। তিনি রবীন্দ্রানুসারী কবিদের মধ্যে অন্যতম। ১৯০৯ সাল থেকে ১৯১৩ সাল পর্যন্ত তার সম্পাদনা ‘মানসী’ পত্রিকা বের হতো। এছাড়া ১৯২১ সাল থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত ‘যমুনা’ পত্রিকার যুগ্ম-স¤পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এক সময় তার সম্পাদনায় পূর্বাচল পত্রিকা প্রকাশিত হতো।

যোতিন্দ্রমোহন বাগচির প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, বন্ধুর দান, রেখা, লেখা, অপরাজিতা, নাগকেশর, জাগরণী, নীহারিকা, মহাভারতী ইত্যাদি। কবি যতিন্দ্র মোহন বাগচির ‘কাজলা দিদি’ সব শ্রেণীর পাঠকের কাছেই একটি প্রিয় কবিতা। পাঠকের হৃদয়ে কাজলা দিদি ¯পর্শ করে। কাজলা দিদির জন্য সবারই মন খারাপ হয়। অনেকের চোখ থেকে নীরবে জল ঝরে।

সেই কবিকে নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরির মাধ্যমে মাগুরা জেলা প্রশাসক সুশান্ত কুমার সাহা “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রত ডিজিটাল বাংলাদেশ' গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছেন তা যে কোথায় নিয়ে দাড় করাবেন সেটি বোঝায় যাচ্ছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।