শফিক হাসান সরকার প্রতিবছরই বাজেট ঘোষণা করে। কিন্তু এর বাইরেও থেকে যায় অসংখ্য বাজেট, যা জনসম্মুখে উপস্থাপিত হয় না। সরকারি বাজেট মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। আলোচনা-সমালোচনা হয় দীর্ঘদিন। উপরি হিসেবে ২/৪টা হরতালও পাওয়া যায়! অন্যদিকে ব্যক্তিখাতে প্রণীত বাজেট ব্যক্তি এবং তার চারপাশের মানুষ ছাড়া অন্যরা জানে না বললেই সই।
বলার অপেক্ষা রাখে না, এ বাজেট বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্যর্থ! ব্যর্থ বাজেটে জনসাধারণ প্রায়ই বিপর্যয়ের সম্মুখে পড়ে। কী সেই বিপর্যয়, দেখা যাক।
গৃহবধূ
ষ কাজের বুয়ারা যে কী ত্যাঁদড়, ইচ্ছা করেই কাঁচের জিনিসপাতি ভেঙে ফেলে!
ষমনুর বাপ একটা ত্যাড়ার ত্যাড়া! টানা তিন মাস যাবৎ বলে যাচ্ছে শাড়ি কিনে দেবে; কিন্তু কই!
ষ পাশের বাসার ভাবি কী সুন্দর একটা গহনা কিনে ফেলল, পোড়া কপাল আমার একারই!
ষ ছেলেটা একদম খেতে চায় না! এত কম খেলে কি চলে!
ষ বাবা বলেছেন আমাকে নাইওর নিতে আসবেন। কিন্তু সুদীর্ঘ দুই দুইটা দিন তো চলেই গেল!
হলুদ সাংবাদিক
ষ শালারা অবৈধ কাজ করে বেড়াবে কিন্তু টাকা দেবে না, উল্টো বলে বসে_ নিউজ ছাপলে ছাপায়া দ্যান, আমগো কোনো ভয় নাই! আপনার ওই পত্রিকা পড়ব কে, আর আমগো দুর্নীতি কথাই বা জানব কে!
ষ একটা ইঁদুরের আচানক মৃত্যুর শোকবার্তা জানিয়ে প্রেস রিলিজ এসেছে পাঁচশ। নিউজের মধ্যেই পাঁচশ প্রেস রিলিজ পাঠানো ব্যক্তি ও সংগঠনের নাম ছেপে দিয়েছি।
এদের মধ্যে কমপক্ষে একশ জন আমাকে টাকা দিয়ে যাওয়ার কথা! কিন্তু এলো মাত্র একজন, তাও মফস্বল থেকে! আগামীতে যদি শালাগো প্রেস রিলিজ ছাপছি...!
ষ অনেকেই বলে, আমরা সাংবাদিকরা নাকি সাংঘাতিক! এদের সবার নাম-ঠিকানা পাচ্ছি না; পেলে বুঝিয়ে দিতাম সাংবাদিক কী আর সাংঘাতিকই বা কী!
ষ আমাদের পত্রিকা কোনো স্টলে বিক্রি হয় না! এটা নিশ্চয়ই সাংবাদিক হিসেবে আমার যোগ্যতাকে আরও বেশি প্রোজ্জ্বল করেছে। কারণ সংবাদকে পণ্য বানানো ঠিক নয়, যেমন ঠিক নয় বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য বানানো। যে ভুল অন্যরা করেছে সে ভুল আমরা করব কেন!
ষ নতুন পরিচয় হওয়া কোনো কোনো আহাম্মক প্রশ্ন করে বসে_ অফিস থেকে বেতন-টেতন কেমন দেয়? আরে ব্যাটা, অফিস আমাকে কী বেতন দেবে, টাকা তো আমিই দিই উল্টো! বেতন নিই না, দিই!
প্রেমিক
ষ পকেটে মাত্র ৫২ টাকা আছে। ওর আজ ভালো কোনো হোটেলে খাওয়ার খায়েশ না চাপলেই হলো!
ষ ইদানীং সমস্যা হয়ে যাচ্ছে, মলির সঙ্গে দেখা করতে গেলেই আচানক জলির ফোন চলে আসে! ও ব্যাপারটা জেনে ফেলেছে, নাকি কাকতালীয়!
ষ কিছু রোমান্টিক কবিতা মুখস্থ করে ফেলা দরকার! তাহলে জায়গামতো উগরে দেওয়া যেত! কিন্তু হচ্ছে না!
ষ বড় আপুর সুন্দরী বান্ধবীটাকে ভালো লাগে। প্রপোজ করা দরকার, করাটা ঠিক হবে?
সম্রাট শাহজাহান এবং আমার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই! দু'জনেই তো প্রেমিক! টাকাকড়ি হোক, আমিও তাজমহলের প্রজেক্ট নিয়ে মাঠে নামব!
ডাক্তার
ষ ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো আজকাল আমার পাওনা ঠিকঠাকমতো মেটাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না! কেমন যেন দুর্নীতির আভাস পাচ্ছি!
ষ ইদানীং রোগী তেমন একটা আসে না বললেই চলে! ডাক্তার হিসেবে আমার পসার কমে গেছে, নাকি মানুষের রোগ-ব্যারাম হচ্ছে না!
ষ আজ সকালে এসেছিল এক ব্যাটা জ্বর নিয়ে; ক্যান্সার হয়েছে বলে তাকে ভড়কে দিয়েছি! হা হা হা...!
ষ রোগীদের কারণে-অকারণে অনেক কিছু টেস্ট করতে দিই।
আর এই টেস্ট করতে দিলেই মনে পড়ে, টেস্ট পরীক্ষায় আমি ফেল করে বাবার হাতে কি মারটাই না খেয়েছিলাম!
ষ স্বাস্থ্যই সব সুখের মূল! এই থিওরি আমার জন্য প্রযোজ্য নয় মোটেও, বরং উল্টোটা; অস্বাস্থ্যই সকল সুখের এবং অর্থ আগমনের মূল!
রাজনীতিবিদ
ষ ভাবছি দেশপ্রেমের ওপর একটা বই লিখব! কিন্তু একটা শব্দও বের হয় না! কাউকে দিয়ে যে লিখিয়ে নেব_ ভরসা পাচ্ছি না! সে যদি ফাঁস করে দেয়!
ষ অনেকেই একটা কথা জানে না, পৃথিবীতে মিথ্যা বলে আসলে কিছু নেই! কথা দুই রকম_ একটা সাধারণ মানুষের, অন্যটা রাজনীতিকের!
ষ ব্রিজের বিলটা ভালোয় ভালোয় পাস হয়ে যাক! এমন বাঁশ দেব, যাতে মানুষ বাঁশের পুলকেও সানন্দে ব্রিজ নামে ডাকতে শুরু করে!
ষ অনেকেই অভিযোগ করে, আমরা রাজনীতিকরা নাকি মূর্খ! আইন করে যদি এ ধরনের লোকের অর্জিত সার্টিফিকেট বাতিল করা যেত! তখন বলতে পারতাম_ দ্যাখ ব্যাটারা, আমরা যা তোরাও তা-ই!
ষ লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি যে মোনালিসার আব্বা, এ তথ্য আমার জানা হয়ে গেছে। আগামী কোনো জনসভায় ভিঞ্চির কবিখ্যাতি উল্লেখ করে মোনালিসার সঙ্গে তার সম্পর্কের কথাটাও বলে দিতে হবে! জনগণ বুঝুক আমার জ্ঞান!
কাজের বুয়া
ষ হ্যারা নাকি আবার কাম করাইব! কি ডিশ লাইন আনছে হেইডাতে ইস্টার পেলাস নাই!
ষ কাইল বেগম সাবেরে কইছি, সাব আমার দিগে কেমন কইরা য্যান চায়, বালা লাগে না! না বইলা কী করমু, হেই বেডা একবারও আমার দিগে বালা কইরা তাকায় নাই! ক্যান, আমারে পছন্দ অয় না!
ষ কী অরাজক অবস্থা, এই বাসার সবাই দেহি সবখানে চাবি ফেইলা রাখে! মাগার একটা চাবিও কামে লাগে না!
ষ আগের বাসার ভাইজানের গার্ল ফেরেন্ড আইত! আওনের খবর গোপন রাখনের লাইগা হে আমারে কিছু টাকাটুকুও দিত। কিন্তু এই বাসার ভাইজান সুবিধার মানুষ না, হেরে বোধহয় কেউ পাত্তা দেয় না!
ষ কত দিন ধইরা ভাবতেছি নিখিল বঙ্গ বুয়া সমিতির সদস্য হমু, কিন্তু মাসে মাসে চাঁদা দিতে হইব মনে কইরা আর সাহস পাই না!
ছাত্র
ষ বাবাকে বললাম, বই কিনব টাকা পাঠান। বাবা উল্টো ঝাড়ি দিলেন, বই কিনবি মানে? আগের বই-ই তো এখনও পড়িসনি! আমি যে আগের বই এখনও পড়িনি, বাবা জানলেন কী করে!
ষ ক্লাস করতে ভাল্লাগে না, স্যারকে বলেছি। স্যার বললেন, বেকুবের মতো কথা বলবে না; এমন একজন মানুষ কি দেখাতে পারবে, যার ক্লাস ভালো লাগে? খুঁজে খুঁজে দুজন বেকুবকে বের করেছি যাদের ক্লাস করতে ভালো লাগে।
কিন্তু এদের স্যারের সামনে নিতে সাহস পাচ্ছি না!
ষ ছাত্র হিসেবে আমাদের জন্য বাসভাড়াসহ বেশকিছু জিনিস হাফ। কিন্তু প্রেমের বেলায় এসে দেখলাম, এখানে ছাত্রদের জন্য কোনো সুবিধাই সংরক্ষণ করা হয়নি!
ষ আগে মলিকে ভালো লাগত। কিন্তু যেই না সঙ্গে ওর বান্ধবী ডলিকে দেখলাম, এর পর থেকে ডলিরে ভালো লাগে। গতকাল ডলির সঙ্গে নতুন একটা মেয়েকে দেখলাম, ওর বান্ধবী বোধহয়। এখন ডলিকে বাদ দিয়ে নতুন মেয়েটার প্রতি ভালো-লাগা তৈরি হয়েছে! আমার চরিত্রের গতিপ্রকৃতি যে কোনদিকে মোড় নিচ্ছে!
ষ আমরা শক্তি আমরা বল/আমরা ছাত্রদল...! সেই দিন গত হয়েছে, এখন আমি সুযোগ বুঝে দুই দলই করি_ ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ! সময়মতো খোলস পাল্টে ফেললেই হলো।
আরও আগে কেন যে বুদ্ধিমান হলাম না!
ড্রাইভার (প্রাইভেটকার)
ষ গ্যাসের দাম বাইড়া আমার ইনকামডা কমায়া দিল! আগে গ্যাস খাতে যে টাকা ইনকাম করতাম, সেটা এখন অর্ধেকে নাইমা আইছে! সরকার কীভাবে পারল কামডা করতে!
ষ এগো এই অনুষ্ঠান সেই অনুষ্ঠান, স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটির ঠেলায় 'প্রাইভেট' খ্যাপ মারার উপায় নাই! সারাক্ষণ গাড়িটারে ব্যস্ত রাখে! ক্যান, হাঁইটা বা রিকশায় গেলে কোন সমস্যাডা অয়!
ষগতকাল টায়ার কিনলাম। দোকানিরে কইলাম, দামের জায়গা ফাঁকা থাক, আমিই লেইখা নিমুনে। হেই ঘাড়ত্যাড়া সঠিক দামডাই লেইখা দিল! তাইলে আমি স্যারেরে ভুজংভাজং বুঝাইয়া টায়ার কিনাইলাম ক্যান!
ষছোড আপার বান্ধবীডা হেভি! সরাসরি তাকাইতে পারি না, দুইবার তাকাইছিলাম লুকিং গ্গ্নাসের মাধ্যমে! দুইবারই চোখাচোখি হইয়া ধরা খাইছি! তবে হের হাবভাব দেইখা মনে হইল, মাইন্ড করে নাই! অবশ্য করলেও কী!
ষ গাড়ি হইলে তেলের গাড়ি হওয়াই ভালো। সুবিধামতো তেল ঢোকানো যায়, আবার বাইরও করা যায়। কিন্তু সমস্যা একটাই, এরকম গাড়ি ব্যবহারকারীরা আবার বড় খাইষ্টা! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।