নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণের ২ লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকার উচ্চাভিলাষী বাজেট ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকার। বর্তমান সরকারের এটি পঞ্চম তথা শেষ বাজেট।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গতকাল ইয়াওমুল খামীসি বা বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে জাতীয় সংসদে এ বাজেট উপস্থাপন করেছেন।
আগামী ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের মোট আকার বা ব্যয়ের পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা। এটা জিডিপির ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ।
যেখানে বিদায়ী ২০১২-১৩ অর্থবছরে মূল বাজেটের আকার ছিল ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। এটা ছিল জিডিপির ১৮ দশমিক ১ শতাংশ।
এবারের বাজেটে মোট রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটে মোট রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা।
এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নিয়ন্ত্রিত কর রাজস্বের পরিমাণ হচ্ছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯০ কোটি টাকা, রাজস্ব বোর্ড বহির্ভূত রাজস্বের পরিমাণ হচ্ছে ৫ হাজার ১২৯ কোটি টাকা এবং কর ব্যতীত প্রাপ্তির পরিমাণ ধরা হয়েছে ২৬ হাজার ২৪০ কোটি টাকা।
বাজেট ঘাটতি ও অর্থায়ন: প্রস্তাবিত বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ হচ্ছে ৫৫ হাজার ৩২ কোটি টাকা। এটা জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৫২ হাজার ৬৮ কোটি টাকা টাকা। এটা ছিল জিডিপির ৫ শতাংশ।
প্রধানত চারটি উৎস থেকে এ ঘাটতি পূরণ করা হবে।
এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ বাবদ ১৪ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা, বৈদেশিক অনুদান বাবদ ৬ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা, ব্যাংকিং খাত থেকে ২৫ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা ও ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে ৭ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা নেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। ব্যাংক বহির্ভূত খাতের মধ্যে সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ৪ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা ও অন্যান্য খাত থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা নেয়া হবে।
যেখানে বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটে বৈদেশিক ঋণ বাবদ ২০ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা, বৈদেশিক অনুদান বাবদ ৬ হাজার ৪৪ কোটি টাকা, ব্যাংকিং খাত থেকে ২৩ হাজার কোটি টাকা ও ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে ১০ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ব্যাংক বহির্ভূত খাতের মধ্যে সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ও অন্যান্য খাত থেকে ৩ হাজার ৮৪ কোটি টাকা।
ব্যয়: প্রস্তাবিত বাজেটে উন্নয়ন খাতে মোট ৭২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) খাতে ৬৫ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা ও এডিপি বহির্ভূত খাতে ৩ হাজার ১৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটে উন্নয়ন খাতে ৬০ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে এডিপিতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৫৫ হাজার কোটি টাকা ও এডিপি বহির্ভূত খাতে ২ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা।
অন্যদিকে অনুন্নয়ন (রাজস্ব) খাতে মোট ১ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
বরাবরের মতো এবারও শীর্ষে রয়েছে অনুন্নয়ন খাতে ব্যয়।
মোট বাজেটের অর্ধেকেরও বেশি ব্যয় হচ্ছে এ খাতে। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ ২৬ হাজার ৩ কোটি টাকা ও বৈদেশিক ঋণের সুদ বাবদ ১ হাজার ৭৪০ কোটি টাকাসহ অনুন্নয়ন খাতে মোট ব্যয় হবে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা।
যেখানে বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটে অনুন্নয়ন খাতে মোট ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ২১ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা ও বৈদেশিক ঋণের সুদ বাবদ ১ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকাসহ অনুন্নয়ন খাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯৯ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকা।
এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে অন্যান্য খাতের মধ্যে অনুন্নয়ন মূলধন খাতে ২০ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা, কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) ও স্থানান্তর খাতে ১ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ শিক্ষাখাতে, ২৬০৯৩ কোটি টাকা:
বরাবরের মতো এবারের বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তিখাতে বরাদ্দ বেশি রাখা হয়েছে। এখাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ২৬ হাজার ৯৩ কোটি টাকা। পরে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে যোগাযোগ খাতে। এখাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২০ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।