ঈদ কেনাকাটার ব্যস্ত এই সময়ে ইফতারের সময়টিই চোররা বেছে নেয় বলে পুলিশ বলছে। তারা বলছে, বিপণি বিতানগুলোতে রাখা গাড়িই থাকে চোরদের অন্যতম লক্ষ্য।
গোয়েন্দা পুলিশের গাড়ি চুরি প্রতিরোধ দল (উত্তর) এর প্রধান সহকারী কমিশনার মো. রায়হানুল ইসলাম বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গাড়িচোর চক্র ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠছে, এমন তথ্য রয়েছে। ”
ইফতারের সময়ে রাস্তাঘাট অনেকটা ফাঁকা থাকে বলে এই সময়টাই চুরির জন্য চোর চক্র বেছে নেয় বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কারণ, এই সময়ে পালানো যায় সহজেই।
রাজধানীর গুলশান, ধানমণ্ডি, উত্তরা, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, তেঁজগাও শিল্পাঞ্চলসহ কয়েকটি থানার তথ্য, গত কয়েক মাসে রাজধানীতে অর্ধশতাধিক গাড়ি চুরি হয়েছে।
গুলশান থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তার এলাকায় গত দুই মাসে ৮/১০টি গাড়ি চুরি হয়েছে।
উত্তরা মডেল থানার ওসি শাহাদাত হোসেন খান বলেন, কয়েকদিন আগে একটি এক্স করোলা প্রাইভেটকার চুরির অভিযোগ পান তারা। ইফতারের আগে আম কিনতে নেমে ওই ব্যক্তি তার গাড়িটি হারান।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা রায়হান বলেন, গত তিন মাসে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চুরি হওয়া ১৭টি গাড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, জিপসহ বিভিন্ন ধরনের গাড়ি রয়েছে এর মধ্যে।
গাড়িচোর চক্র অভিনব সব কৌশল খাটাচ্ছে বলেও জানান সহকারী কমিশনার রায়হান।
গোয়েন্দা পুলিশ পর্যবেক্ষণ, চোর চক্র এখন তিনটি কৌশল অবলম্বন করছে।
কয়েকমাস আগে গোয়েন্দা পুলিশ উত্তরা এলাকায় এক গাড়িচোর চক্রের সন্ধান পায়।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা রায়হান বলেন, এই চক্রের সদস্যরা প্রথমে একটি গাড়িকে লক্ষ্যবস্তু করে।
এরপর মালিকের সঙ্গে কথা বলে সে গাড়িচালকের চাকরি নেয়।
“তারপর কৌশলে গাড়ির চাবি নকল করে চাকরি ছেড়ে দেয়। হঠাৎ সে গাড়িটি উধাও হয়ে গেলেও তখন মালিক পুরোনো চালককে সন্দেহ করে না। ”
আরেকটি কৌশল হচ্ছে- চালক বা মালিক গাড়ি খেকে দূরে সরে গেলে তাকে অনুসরণ করে চোর চক্রের একটি পক্ষ, চক্রের অন্যরা গাড়ির তালা খোলার কাজে নামে। অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই তারা গাড়ি নিয়ে সটকে পড়ে।
পুরোনো মডেলের গাড়ির তালা খোলা সহজ বলেই চোরের দল তাকে লক্ষ্যবস্তু করে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।
চোর চক্র অন্য যে কৌশলটি খাটায়, তাকে ডাকাতিই বলা যায়। কোনো একটি গাড়িকে পিছু নিয়ে সুযোগ বুঝে এর সামনে গিয়ে গতিরোধ করে অস্ত্রের মুখে গাড়িটি নিয়ে যাওয়া হয়।
বাড়ির সামনে থেকেও এভাবে গাড়ি হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন।
সহকারী কমিশনার রায়হান বলেন, এয়ারপোর্ট রোড, খিলগাঁও ফ্লাইওভার, খিলক্ষেত ওভারব্রিজ এলাকায় রাতে এই ধরনের ঘটনা ঘটে বেশি।
এছাড়া লিফট চেয়ে গাড়িতে উঠে পরে চালক বা মালিককে নামিয়ে চুরির ঘটনাও ঘটে। আর লিফট চাওয়ার কাজে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দলের নারী সদস্যদের ব্যবহার করা হয় বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান।
মিরপুর মডেল থানার ওসি সালাউদ্দিন খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত কয়েকমাসে তার এলাকায় এই ধরনের চুরির কয়েকটি অভিযোগ এসেছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, চুরির পর সাধারণত পরিচিত কোনো গ্যারেজে নিয়ে যাওয়া হয় গাড়িটি। আধা ঘণ্টার মধ্যেই গাড়ির যাবতীয় যন্ত্রাংশ খুলে ফেলে সেগুলো আলাদাভাবে বিক্রি করে ফেলা হয়।
পুলিশ সজাগ থাকলেও চুরির ঘটনা এড়াতে গাড়ি মালিকদেরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সহকারী কমিশনার রায়হান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।