শরতের মেঘ রাজা বাগানে হাটছিলেন। অনেক সকাল। দশটা অব্দি হাটার পর একটি পেয়ারা গাছের নিচে এসে রাজার মন অানন্দে ভরে উঠল। একটা পাকা পেয়ারা ঝুলছে গাছে। পেয়ারটি দেখে রাজা মনে মনে ঠিক করে ফেললেন, এই ফলটিকে জাতীয় ফল ঘোষণা দিতে হবে।
পেয়ারাটি দেখে রাজা তার লোভ সংবরণ করতে পারলেন না, লাফ দিয়ে গাছে উঠে পরলেন, ছোট বেলার অভ্যেস, এখনো তর তর করে গাছে উঠতে পারেন। রাজার দাদাজান তাকে গেছো মানব ডাকতেন। তিনি আজ বেচে নেই। তাহলে দেখিয়ে দিতে পারতেন, রাজা সত্যিই সত্যিই গ্যাছো মানব, এই বৃদ্ধ বয়সেও গাছে উঠার মত বল পায়। গাছ থেকে নেমে পেয়ারিটি না ধুয়ে খাওয়া শুরু করলেন।
তারপর মহলে এসে বসলেন। উজিড়, মন্ত্রী এবং সভাসদগন সবাই ইতিমধ্যে এসে গেছেন। সবার মনযোগ আকর্ষণের জন্য একটু কেসে নিলেন। বললেন, আমি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি সবাইকে না জানিয়েই। আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই।
অমনি রাজার মনে হলো পেটের মধ্যে কি যেন শুরু হয়েছে। তিনি থামলেন, এবং আন্তরিক ভাবে দুঃখিত বলে বের হয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ পরই ফিরবেন বলে অাশ্বাস দিলেন।
ইতিমধ্যে সবাই জেনে গেছে যে রাজা আজ গাছে উঠেছিলেন। সবাই এই নিয়ে কানাঘুষা শুরু করেছে এর মধ্যে।
অনেকে মনে করিয়ে দিলেন, ছোট সময় রাজার নাম ছিল গ্যাছো মানব।
রাজা ফিরলেন। রাজাকে কিছুটা কাহিল মনে হচ্ছে। অসুস্থ বোধ করছেন। সিংহাসনে উঠে বসে বললেন, পিয়ারাকে আপনাদের কাছে কেমন মনে হয়।
মন্ত্রী হাসলেন, গত রাতেই পেয়ারার সাথে দেখা হয়েছে, অতি ভাল এবং কাজের মেয়ে।
বললেন, জাহাপনা, পিয়ারা অতি ভাল মেয়ে, আপনি বললে এখনি হাজির করি তাকে দরবারে।
রাজা হুংকার ছেড়ে বললেন, গর্দভ, আমি পেয়ারা ফলের কথা বলছি। এবং সাথে সাথে রাজার মনে হলো তাকে এখনি উঠতে হবে। সুতরাং সবাইকে সরি বলে রাজা উঠে পরলেন্ এবং দ্রুত প্রস্থান করলেন।
রাজার ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এলেন। রানির সাথে দেখা। রানি বললেন, ওগো, তোমার কি হয়েছে, তোমাকে এতো কাহিল মনে হচ্ছে কেন?
রাজা বললেন, কিছুই হয়নি, স্ট্যান্ডার্ড আউটপুট সিস্টেম অটো ফ্লাস করতে শুরু করছে।
রানি কিছু বুঝলেন না মনে হয়, অন্ত্যত্য মুরখা মেয়ে। বিয়ের সময় যোগত্যা হিসেবে জানানো হয়েছিলো শুধু মাত্র এইচটিএমএল এবং সিএসএস জানে।
কিন্তু তাকে ডিভ এবং স্পান কি জিজ্ঞাসা করলে পারবে না রাজা এ ব্যাপারে সিউর। তবে একটি যোগ্যতা অবশ্য আছে, সেটি হলো, ফেইসবুক। রাজা নিজে ফেইসবুকে কিভাবে ফ্রেন্ডরিকোয়েস্ট পাঠাতে হয় জানতো না। রানি শিখিয়েছে।
যাহোক, ডাক্তার ডাকা হলো, ডাক্তার চিকিৎসা করলেন।
কিন্তু রাজার অবস্থা ধীরে ধীরে খুবই খারাপ হতে লাগলো। ডাক্তার কিছু করতে পারলেন না।
অবশেষে রাণী ফেইসবুকের সরণাপন্ন হলেন, তার ফ্রেণ্ড সংখ্যা ৩২ বিটের।
স্ট্যাটাস দিলেন, যে রাজাকে বাচিয়ে তুলতে পারবে, তাকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হবে।
অনেকে কমেন্ট পরলো, কিন্তু কারো কমেন্টই তার কাছে কাজের মনে হলো না।
অবশেষে এক দরবেশ বাবা বললেন, আমি রাজাকে সুস্থ করতে দিতে পারি, বিনিময়ে আপনাকে যা দিতে হবে তা আপনাকে ইমেল এ জানিয়ে দিচ্ছি।
দরবেশ বাবা ঠিক কি চেয়েছিল, তা জানা গেলো না, কারণ বিষয়টি অতি ব্যক্তগত।
দরবেশ বাবা যা করতে বললেন, তা হলো, রাজার অতি প্রিয় হাতিটিকে কুরবানি দিতে হবে। হাতির মাংস যেহেতু মানুষ খায় না, সুতরাং বনের যত পশু পাখি আছে সবাইকে দাওয়াত দিতে হবে।
কিন্তু রাজা হাতিটিকে তার পোশা কুকুরের চেয়ে বেশি ভাল বাসে।
সে কিছুতেই রাজি হবে না। অবশেষে রানি বাধ্য করলেন। রাজাকে কিভাবে রাজি করাতে হয়, এই বিষয়ে তার দুইটা পিএইচডি আছে।
অবশেষে রাজা টুইটারে স্ট্যাটাস দিলেন, বনের সকল পশুপাখিকে দাওয়াত হাতির মাংস খাওয়ার জন্য।
বনের মধ্যে এক শিয়াল পন্ডিত বাস করতো।
গেলো কয়দিন হলো, তার সুপার কম্পিউটারে ব্যাকট্র্যাক এর লেটেস্ট ভার্সন ইনস্টল করেছে। এইটি দিয়ে যেকোনো সিকিউর্ড প্যাকেট ধরে ফেলা যায়। শিয়াল পন্ডিত এইসব ব্যপারে সিদ্ধহস্ত। রাণীর যখন দরবেশ বাবার সাথে চ্যাট হচ্ছিল, তখন সে সবগুলো ট্যাক্টই ধরে রেখেছিল।
পন্ডিতের একটি পুরুনো অভ্যেস, অন্যজন কি কথা বলে,আড়ি পেতে শুনা।
অনেক মজা পাওয়া যায়।
হঠাৎ করেই শিয়াল পন্ডিত ধরে ফেলল, রাজার স্ট্যান্ডার্ড আউটপুট সিস্টেমে সমস্য হয়েছে বলে এই আয়োজন করেছেন। সে ব্যপারটি অতি দ্রুত বনের সবাইকে জানিয়ে দিল। এতে করে যা হলো, কেও দাওয়াত এ অংশগ্রহণ করলো না। সবার বিশ্বাস এই হাতির মাংস খেলে নিজেদের সিস্টমেও সমস্যা হতে পারে।
শুধু মাত্র একদল পিপড়া গিয়ে হাজির হলো। তাদের সিস্টেম নিয়ে তার অনেক কনফিডেন্ট। তাদের ম্যামোরি সাইজ অনেক ছোট। বাফার স্পেস নাই বললেই চলে। আর সবটাই এসেমব্লিতে লেখা।
সুতরাং সমস্যা হওয়া সম্ভবনা নাই।
যাহোক পিপড়া হাতি খেতে থাকলো। বিশাল হাতি, পিপড়ার সংখ্যা মাত্র ১৬ বিটের। সুতরাং খেতে বেশ সময় লাগবে।
পিপড়া খেয়ে যাচ্ছে .......যাচ্ছে তো যাচ্ছেই .........
পিপড়া খেতে থাকুক, এই ফাকে আমরা একটি ছোট্ট কমার্শিয়াল ব্রেক নিয়ে নিই।
ফিরছি, ব্র্যাক এর পরেই, কোত্থাও যাবেন না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।