অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের অস্তিত্ব কেন অবৈধ, অসাংবিধানিক ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। জাতীয় সংসদের স্পিকার ও আইন সচিবকে আগামী ১৬ই জুনের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। ওই দিন এ মামলার চূড়ান্ত শুনানির তারিখ ধার্য করেছে আদালত। ১৯৮৪ সালের আগস্টে করা একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদালত এ মামলায় আইনি সহায়তার জন্য ১১ বিশিষ্ট আইনজীবীকে এমিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
এরা হলেন টিএইচ খান, কামাল হোসেন, রফিক-উল হক, এম আমীর-উল ইসলাম, এম জহির, মাহমুদুল ইসলাম, রোকনউদ্দিন মাহমুদ, আজমালুল হোসেন কিউসি, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, এএফএম মেজবাহ উদ্দিন ও আবদুল মতিন খসরু। রিটকারীদের পক্ষে এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী আদালতে শুনানি করেন। সামরিক শাসক এইচএম এরশাদ ১৯৮৮ সালের ৯ই জুন চতুর্থ সংসদে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী আনয়ন করেন। অষ্টম সংশোধনীর অধীনে সংবিধানের ২ (এ) অনুচ্ছেদে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি এবং ১০০ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে হাইকোর্টকে বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়। পরে ১৯৯০ সালে একটি মামলায় সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ বাতিল করা হয়।
কিন্তু রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে সংবিধানে ইসলামের অস্তিত্ব থেকে যায়। ইসলামকে রাষ্ট্রধর্মের মর্যাদা দেয়ার পর থেকে এ সম্পর্কে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়ে আসছে। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের আগস্টে দেশের ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনকারীরা হলেন কবি বেগম সুফিয়া কামাল, বিচারপতি দেবেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য, বিচারপতি কেএম সোবহান, ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, কলিম শরাফী, সাবেক প্রধান বিচারপতি কামাল উদ্দিন হোসেন, অধ্যাপক ড. খান সারওয়ার মোরশেদ, জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত, অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বদরুদ্দীন উমর, সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ, বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর ও অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। এদের মধ্যে প্রথম পাঁচ আবেদনকারী মারা গেছেন।
জীবিত আবেদনকারীদের পক্ষে ফয়েজ আহমেদ আদালতে হলফনামার মাধ্যমে সম্পূরক আবেদন জমা দেন। রিটকারীদের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী ২৩ বছর পর মামলা পুনরুজ্জীবনের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, আমরা চেয়েছিলাম পরবর্তী সরকার এসে এ বিষয়ে একটি মীমাংসায় পৌঁছবে। রাষ্ট্রধর্ম সম্পর্কিত ধারা থেকে জাতিকে মুক্তি দেবে। কিন্তু পরবর্তীকালের সব সরকারই এক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলে সংবিধান সংশোধনের উদ্দেশ্যে গঠিত বিশেষ কমিটিও রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে বহাল রেখে আমাদের আশাহত করেছে।
তাই আমরা মামলা পুনরুজ্জীবনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।