পাওয়ার অব পিপল স্ট্রংগার দেন দি পিপল ইন পাওয়ার। http://mhcairo.blogspot.com/ কিশোরগঞ্জের ভৈরবে র্যাবের গুলিতে গুরুতর আহত এক নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রহিমা বেগম (৪০) নামের ওই নারীর স্বজনদের দাবি, তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেছে সাদা পোশাকের র্যাব সদস্যরা। আর র্যাব বলছে, মাদক উদ্ধার অভিযানের সময় অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে 'দুর্ঘটনাবশত' গুলিবিদ্ধ হয়েছেন রহিমা।
শুক্রবার বিকালে ভৈরবে ওই ঘটনার পর ৬ সন্তানের জননী রহিমাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে।
র্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার কর্নেল আহসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "মাদক উদ্ধার অভিযানের সময় এক ব্যক্তিকে আটক করা হলে ওই মহিলা র্যাবের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। ওই সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। র্যাব কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে তার সুচিকিৎসা চলছে। "
তবে রহিমা বেগমের স্বামী ধন মিয়া বলছেন, "আমি রিকশা চালাইয়া সংসার চালাই।
আমার স্ত্রীকে কি কারণে গুলি করা হইল আমি নিজেও বুঝলাম না। আমার স্ত্রী মইরা গেলে আমার সন্তানগুলির কি হইব?"
ভৈরব পৌর শহরের পঞ্চবটি এলাকার পুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দারা জানান, সাদা পোশাকে কিছু অস্ত্রধারী লোক বিকেলে স্থানীয় আমজাদ হোসেনের বাড়িতে যান।
ওই বাড়ির মালিক আমজাদ হোসেন বলেন, "তিনটি মাইক্রোবাসে করে প্রায় ১৫/১৬ জন অস্ত্রধারী আমার বাড়িতে আসে। তারা এসেই আমার শ্যালকের বন্ধু ফারুককে মারধর শুরু করে। তার মামী রহিমা বেগম বাধা দিলে অস্ত্রধারীরা মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে।
"
আমজাদের প্রতিবেশী খাদিজা বেগম বলেন, "গুলির শব্দ শুনে আমি ঘর থেকে বাইরে আসি। তখন অস্ত্রধারীরা নিজেদের র্যাবের পরিচয় দিয়ে গুলিবিদ্ধ রহিমা বেগমকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। "
এ সময় ফারুককেও চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় বলে এলাকাবাসী জানান।
এর আগে গত ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুরে র্যাবের গুলিতে লিমন নামে এক কলেজছাত্র আহত হয়। লিমনের দাবি, র্যাব সদস্যরা তাকে ধরে নিয়ে গুলি করেছে।
পরে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়।
ওই ঘটনার পর অস্ত্র আইনে এবং সরকারি কাজে বাধা দান, হত্যা চেষ্টা ও র্যাব সদস্যদের আহত করার অভিযোগে লিমনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে র্যাব। লিমন ও তার পুরো পরিবার সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলেও দাবি করা হয়।
বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখেও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনেকেই ওই ঘটনার পর র্যাবের পক্ষে কথা বলেন।
শুক্রবার ভৈরবে রহিমা গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তার প্রতিবেশী হাবিবুর রহমান অভিযোগ করেন, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই র্যাবের কিছু সদস্য ঝালকাঠির লিমনের মতো আরেকটি ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে।
অবশ্য র্যাব-৯ ভৈরব ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার মোহাম্মদ আলী এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, রেলস্টেশনের কাছাকাছি ওই অঞ্চলটি মাদকের আস্তানা হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, "মাদকের বড় ধরনের চালান আসার খবর পেয়ে র্যাব-১১ এর সদস্যরা আমাকে জানিয়ে এ অভিযান চালিয়েছে। অভিযানে ফারুক নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। "
তবে গুলিবিদ্ধ রহিমা বেগম বা ফারুকের বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় কোনো মামলা নেই বলে জানিয়েছেন থানার ওসি মো. শাহজাহান কবীর।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রতিনিধি জানান, রহিমা বেগমকে র্যাবের তত্ত্বাবধানে প্রথমে হাসপাতালে ২০৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
কিন্তু তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।
র্যাবের মেজর বাহালুল আলম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, "আমি যতদূর শুনেছি, র্যাব-১১ এর একটি দল ভৈরবে মাদক উদ্ধার অভিযানে গিয়েছিল। ওই সময় রহিমা বেগম র্যাবের অস্ত্র ছিনিয়ে নিতে গেলে ধস্তাধস্তির সময় গুলি বেরিয়ে গিয়ে তার মাথায় লাগে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/ডিডি/জেকে/০২১২ ঘ. ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।