১)
আমি একটা ফাস্ট ফুডের দোকানে বসে বার্গার খাচ্ছি, এমন সময় ৫টা মেয়ে একটি টেবিলে বসল। কিন্তু কিছু খাওয়ার অর্ডার দিলনা। তাদের কথা-বার্তায় বুঝলাম, তারা কারো জন্য অপেক্ষা করছে।
তাদের মধ্যে একজন বলল, “মিতা, তোর বয়ফ্রেন্ড কখন আসবেরে?”
মিতা বলে, “আসবে আসবে। ধর্য্য ধর আসবে।
আর তুই শামীমকে আমার বয়ফ্রেন্ড বললি কেন? ”
“বারে বলব না। তুমি তার সাথে যা যা কর, তাতে বয়ফ্রেন্ড ছাড়া কিছু ভাবা যায় নাকি?”
“তোরা কিছু বুঝিস না। এখন হাতে কোন ভাল ছেলে নাই। তাই টাইম পাস্ করার জন্য শামীমরে ঝুলিয়ে রাখছি। যদি ভাল ছেলে পাই তাহলে তার সাথে ঝুলে পড়ব।
প্রেম করার জন্য সেই রকম ছেলে দরকার। শামীমের সাথে প্রেম প্রশ্নই উঠেনা। ”
সবাই হো হো করে হেসে উঠল।
“তুইও পারিস বটে মিতা। আল্লাহ যে কেন তোর মত সুন্দরী করল না।
মাঝে মাঝে তোকে হিংসা হয়। ”
মিতা বলে, “সুন্দর নারে, অন্য কিছু। তোকে পরে বলব। তখন বুঝবি ছেলেদের ঝুলিয়ে রাখার মজা কত!”
তাদের এসব কথা শুনে তো আমি অবাক। মেয়েরা এইরকম হয়।
আমি আরও কিছুক্ষণ বসলাম। প্রায় ১০-১২ মিনিট পর শামীম নামের ছেলেটা ঢুকল। হাতে গোলাপ ফুল।
কিছু আলাপের পর খাওয়ার অর্ডার দিল। খাওয়া শেয়ে বিল আসল ৭৬৪টাকা।
প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মের মতই শামীম নিজ পকেট থেকে বিল দিল।
এসব দেখে আমি হতবাক। ভাবলাম ছেলেটাকে সতর্ক করে দেই, কিন্তু সুযোগ করতে পারলাম না আর সতর্ক করার সাহস পেলাম না। মনে মনে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলাম, “আল্লাহ এই অুবঝ ছেলেটাকে জ্ঞান দাও। ”
আর সেদিন থেকে আমার মনে মেয়েদের প্রতি আলাদা একটা অবিশ্বাস জন্ম নিল।
২)
একদিন নদীর ধারে আমি আর সুমন বসে আছি। পাশেই একটা সুন্দর মেয়ে বসে ছিল। দেখে মনে হল সে কারও জন্য অপেক্ষা করছে। মোবাইল থেকে কল দিচ্ছে কিন্তু, যাকে কল দিচ্ছে সে ধরছে না।
সুমন আমাকে বলে, “মামা, মেয়েটা কিন্তু জোশ।
জীবনে এইরকম মেয়ে দেখি নাই। ইস মামা, এই রকম একটা মেয়ের সাথে প্রেম করতে পারলে রে মামা!!!!!!!!!!!”
আসলেই মেয়েটা অনেক সুন্দর ছিল। তার চোখে-মুখে সরলতা, নিষ্পাপ তার চেহারায় ফুটে উঠছিল।
আমি সুমনকে বললাম, “ধুর বাদ দে, ওই মেয়ের চেয়ে আমার খালাতো বোন অনেক সুন্দর। ”
আসলে কিন্তু আমার কোন খালাতো বোন নাই।
শুধু শুধুই বললাম।
কিছুক্ষণ পর একটা ছেলে আসল, এসে মেয়েটার সাথে কথা কাটা-কাটি শুরু করল।
সুমন আমাকে বলে, “দেখছ মামা, এই রকম একটা আনফিট ছেলের সাথে মেয়েটা প্রেম করে। !!! মামা, আমার কি দোষ, এই ছেলেটার চেয়ে আমি তো অনেক স্মার্ট। তাও কপালে একটা প্রেম জুটল না।
”
আমরা বসে বসে তাদের দেখতে লাগলাম। তাদের কথা কাটা-কাটি খুব ভালই লাগছিল।
কিছুক্ষণ পর মেয়েটা একা কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল। ছেলেটা মোবাইলে বলে, “জান্ তুমি কই আছো? দাড়াও আমি আসতেছি। ”
আমরা যা বুঝার তা বুঝে নিলাম।
ছেলেটা একটা ধান্দাবাজ।
সুমন বিড় বিড় করে বলে, “শালা, হারামজাদা লুইচ্চা। এই রকম মেয়ের সাথে ছলনা করলি। ”
সুমন আমাকে বলে, “মামা, তুই থাক আমি মেয়েটাকে follow করে আসি। ”
পরে সুমনের মুখে শুনলাম,
সুমন মেয়েটার পেছন পেছন তার বাসা দেখে আসছে।
অনেক দিন ঘুরছে। কিন্তু পাত্তা দেয় না। মেয়েটা সুমনকে বলেছে যে, সে ছেলেদের বিশ্বাস করে না। ছেলেরা নাকি প্রতারক, মেয়েদের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাদের নি:স্ব করে দেয়।
মনে মনে ভাবি, হায় রে যুগ, মেয়েটা আর কাউকে সত্যি ভালবাসা দিতে পারবেনা, আর ছেলেটা সত্যি ভালবাসা পেয়ে হারিয়ে দিল।
এই ২ ঘটনায় আমি কাকে দোষ দিব? কে দায়ী ছেলে না মেয়ে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।