নামের সাথে কামের কিছু মিলতো থাকবোই [লেখাটি নিতান্তই ব্যক্তিগত মতামত। যুক্তি দিয়ে না মিললে লেখক দায়ী নয়]
নেট এ ইভটিজিং দিয়ে সার্চ দিলে রেজাল্টে যা বুঝায় তা হলো এই সমস্যাটা আমাদের বাংলাদেশে ইন্ডিয়া পাকিস্তান এই জোনের নিজস্ব সমস্যা। যেটি পৃথিবীর মুটামুটি আর কোথাও দেখা যায় না। তাহলে কি অন্য দেশে ইভটিজিং হয় না?? খুব হয় কিন্তু নাম ভিন্ন।
ইভটিজিং এর জন্য দায়ী কে?
নানামুনির নানা মত চলে আসে।
কেউ বলে কুশিক্ষা, কেউ বলে মানসিকতা আবার কেউ মেয়েদের পোশাককে দায়ী করে থাকেন। ইদানিং তো দেখা যায় কেউ শতভাগ মেয়েদের পোশাককে দায়ী করে থাকেন অন্য দিয়ে আরেক দল মেয়েদের পোশাকযে সামান্যতম দায়ী তাও মানতে নারাজ।
তাহলে দায়ী কে?
কোটি টাকার প্রশ্ন। মেয়েদের পোশাক যদি দায়ী হয় তাহলে ১০ বছরের শিশু বা বোরখাওয়ালী কেন টিজিং এর শিকার হয়। আবার মেয়েদের পোশাক যদি দায়ী না হয় তাহলে এতো এতো লোক বলছে কেনো???
তাহলে????
সমস্যার কারন একক কিছু নয়? ছেলেদের মানসিকতা, সঙ্গ দোষ, মেয়েদের পোশাক, আইন না থাকা বা আইনের দুর্বলতা ইত্যাদি বড় কারন।
এর থেকেও বড় কারন আছে তা নিয়ে পরে আসছি।
ছেলেদের মানসিকতা নিয়েই প্রথমে বলি-
সঙ্গদোষে বা যেভাবেই হোক এটি হলো ইভটিজিং এর বড় কারন। ১০ বছরের একজন শিশু বা ৬০ বছরের একজন বৃদ্ধার উদ্দেশ্যে বাজে মন্তব্য বা অশ্লীল অংগভঙ্গী করা শুধুমাত্র একজন মানসিক বিকলাঙ্গ ব্যক্তির পক্ষেই সম্ভব।
মেয়েদের অশ্লীল পোশাক ছেলেদের কামভাব আনবে এটি ১০০% স্বাভাবিক বরং যার তা হবে না তাকে ডাক্তার দেখানো জরুরী। কিন্তু.. মানুষ আর পশুর পার্থক্য এখানেই।
নারীর পোশাকে আপনি উত্তেজিত হলেও তা দমন করাকেই বলে মনুষত্ব। যে নারী অশ্লীল পোশাক পরছে সে নিজেই মানসিকভাবে অসুস্থ।
আধুনিক(!) বিশ্বে মেয়েরা আজকাল কম পোশাকেই অভস্থ। সেদেশে নাকি আবার কম পোশাককারনে টিজিং হয় না। হাস্যকর কথা।
মেয়েরা যেমন তাদের শরীর প্রদর্শনে উদগ্রীব তেমনি ছেলেরা দেখতে উদগ্রীব। স্বলপবসনা একজন নারীর দিকে তাকিয়ে লোল ফেলেনা কে??? পুরুষয়েরা চোখদিয়ে চেটে খায় বা ধর্ষন করে। শুধুমাত্র আইনের শাসন থাকায় সরাসরি শারিরিকভাবে কিছু করতে পারে না।
আবার একটু মেয়েদের পোশাক নিয়ে বলি। মেয়েদের পোশাক যদি সমস্যা না হয় তাহলে ফ্যাশন শো বা সুন্দরী প্রতিযোগিতাকে আমরা কেনো খারাপ চোখে দেখছি??? স্বল্পবসনা নায়িকার ছবি কোন সিনেমা প্রেমিকের আগ্রহের বিষয় নয়????
সমস্যা কোথায়?????
মাছের পচন ধরে মাথা থেকে।
সমাজের পচন শুরু হয় পরিবারে। একজন ছেলে যদি পরিবার থেকে নারীকে সম্মান করার শিক্ষা না পায়। তাহলে বইএর নীতিকথা তার কোনো কাজে আসবে না। বাবা-মায়েরা সন্তানদের প্রতি দায়িত্ব বলতে ভালো স্কুলে ভর্তি আর বড়জোর প্রাইভেট টিউটর জোগাড় করে দেওয়া। তারা মনে করেন বিদ্যালয়ে ছেলে মেয়েরা মানুষ হবে আর যেটুকু বাকি থাকবে তা প্রাইভেট টিউটর করে দিবে।
তাদের কাছে ভালো সন্তান মানে হলো গোল্ডেন জিপিএ পাওয়া ছেলে। তাদের চাহিদার কেন্দ্র চলে গেছে গোল্ডেন জিপিএ তে। ছেলে কার সাথে মিশছে কি করছে সে খবর নেই। ঘরের শিশু সন্তানকে সু-শিক্ষা দূরের কথা হোমওয়ার্ক, নাচ-গান-আর্ট ইত্যাদি নিয়ে এতোই ব্যস্ত থাকে যে তাদের স্বাভাবিক বিনোদন বলতে রইলো শুধু ডোরেমন। বাবা ব্যস্ত চাকুরী-ব্যবসায়।
মা ব্যস্ত হিন্দী সিরিয়ালে। শিশু বয়সেই টিভির কল্যানে শিলা কি জওয়ানী দেখা। বন্ধুর পাল্লায় পড়ে বন্ধ রুমে প্রভার ভিডিও দেখা। ছোট বোনকে কেউ টিজ করলে রক্তে আগুন ধরে যায় কিন্তু নিজেই অন্য মেয়ের ওড়না ধরে টানে।
যেখানে আইনের শাসন থাকে না সেখানে ভালো কোনো কিছুই হয় না।
ইউরোপ আমেরিকার মতো জায়গাতে মেয়েরা স্বল্প বসনা হয়ে যতই চলুক তাকে কেউ টিজ করবে না এবং গায়ে হাত দেবে না। কেন??? তাদের মানসিকা উন্নত???? উহু... আইনের শাসন।
অনৈতিকার বিষ আমাদের পরিবারে ঢুকে গেছে। আর তাই ফাসকৃত প্রশ্নপত্র কেনার জন্য আজকাল মায়েরাও লাইন দেয় সন্তানদের জন্য।
পারিবারিক শিক্ষা এবং আইনের শাসন না হলে ইভটিজিং বন্ধ হবে না।
সেটা যে পদ্ধতিতেই করা হোক। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।