আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দাদা ভাইয়াকে (ফারুক) খুব মনে পড়ছে আজ..।

দাদা ভাইয়া, কেন জানি আজ খুব বেশি মনে পড়ছে তোমাকে। ফারুক (বড়) ভাইয়াকে ছোট বেলা থেকেই আমরা সবাই দাদা ভাইয়া বলে ডাকতাম। আজকের দিনেই (২৭মে'১৯৯৪) তুমি চলে গিয়েছিলে আমাদেরকে একা করে। স্পষ্ট আমি দেখতেছি, সবাই তোমাকে আম্বুলেঞ্চে করে নিয়ে গেল চট্রগ্রাম মেডিকেলের উদ্ধেশ্যে, তোমার কিডনি ডায়ালাইসিস করবে বলে। আমার অজানা আসংখার কারনে আমি তোমার সাথে গেলাম না।

আম্মা আমাকে বলল, "মসজিদের হুজুরদের নিয়ে আয় কোরআন খতমের জন্য"। আমি বাইরে থেকে এসে ড্রয়িং রুমে বসে বড় আপার সাথে তোমার অনেক স্মৃতি রোমন্থন করতেছিলাম। হঠাত বড় আপাকে বললাম, "আপা হুজুররা আসবে দাদা ভাইয়ার ঐ ছবিটা সরিয়ে রাখ সেলফ থেকে"। , আপা ছবিটা উল্টো করে রাখতেই আমার আসঙ্খা হল, "ভাইয়া সারা জীবনের জন্য ছবি হয়ে থাকবেনা তো"? আমার আসঙ্খাকে সত্যি করে রাত সাড়ে ৩ টার দিকে বাসার সামনে এম্বুলেন্সের আওয়াজে বড় আপা লাফ দিয়ে উঠে কাঁদতে কাঁদতে আমাকে বলল, "দাদা ভাইয়া চলে গেছে"। আজ তুমি নেই সতের বছর।

সেই তোমার কাঁধে ভর করে, হাটিহাটি পা পা করে আজ আমার এই পথ চলা... সেদিন আলমারি পরিষ্কার করতে গিয়ে হটাত করে তোমার একটি পুরানো ছবি মাটিতে পড়ে যায়। মা বলল, তোমার কলেজ জীবনের ছবি। অনেক্ষন ধরে থাকালাম, তুমি যেন আমায় বলছ- "কিরে ভাল আছিস? তুই তো অনেক বড় হয়ে গেছিস রে। তোর ছেলে সাবিব সারা ঘর মাথায় নিয়া রাখে সারাদি্ন, তোর বউ তো খুব লক্ষ্মী পেয়েছিস মাশাল্লাহ... ও তো আবার মা হতে যাচ্ছে, তাই ওর দিকে খেয়াল রাখিস ভাল্ভাবে। আব্বা আম্মার বয়স হয়েছে, খেয়াল রাখিস।

আমি কেমন অভাগা দেখ, তোদের কারো দিকে নজর দেয়ার আগেই আল্লাহ আমাকে দুনিয়া থেকে নিয়ে গেল। আমি সবার বড় ছিলাম বলে বাবা মার খুব ন্যাওটা ছিলাম। ওনাদের জন্য আমি কিছুই করতে পারিনি, তোরা খেয়াল রাখিস। জানিস, আমি যেদিন মারা যাই, সেদিন আমার চাকরিতে প্রমোশন হয়। একটা অবাক ব্যাপার হল- আমি মারা যাওয়ার সপ্তাহ খানেক আগে তোর বন্ধু সাকিবের বোন জেবুর সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছিলি তোরা।

আসলে, আমি আমার প্রতি বেশ অবহেলা করতাম। আমার কিডনিতে অনেক দিন ধরে সমস্যা হলেও বাসার সবাইর কথা চিন্তা করে নিজের অসুখ নিজের মধ্যে চিবিয়ে মেরে ফেলতে চাইতাম। আমি চাইতাম, আমার অসুখের খরচের পয়সা দিয়ে তোদের সবার মুখে একটু হাসি ফুটুক। " আজ সবার মুখে হাসি, কিন্তু তোমার মুখ যে চিরদিনের মত হারিয়ে গেল ভাইয়া। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।