আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সামু ব্লগে কিছু গুরুজী দ্বারা ব্রেইন ওয়াশ করা মানুষ আছে। কোয়ান্টাম, গুরুজী,ভাওতাবাজীসংক্রান্ত অনুসন্ধানী মন্তব্য

আলোকিত জীবনের একজন সহযাত্রী [উপরের শিরোনামে একজন ব্লগারের লেখায় মন্তব্য করতে গিয়ে আমাকে কোয়ান্টাম, গুরুজী, ভাওতাবাজী সংক্রান্ত একটি অনুসন্ধান চালাতে হয়। সত্য অনুসন্ধানের একটি খন্ডিত চিত্র সেখানে পোষ্ট করে আলোচনার ইতি টেনে এই ব্লগে যা কিছু ভালো তা সকলের সাথে শেয়ার করা অঙ্গীকারে সামান্য মন্তব্য সহযোগে হুবহু উপস্থাপন করা হলো। ] কোয়ান্টাম, গুরুজী, ভাওতাবাজী সংক্রান্ত মুল ইস্যুতে সত্যানুসন্ধানী আলোচনায় ফেরার প্রতিশ্রুতি ছিল। সে অনুযায়ী সত্য অনুসন্ধানে জানা গেল যে, কোন কোন ক্ষেত্রে সত্য আপেক্ষিক। একই ঘটনা কারো কাছে সত্য আবার অন্যের কাছে বিশ্বাস।

স্ত্রী স্বামীর কাছে জানতে চাইল, সত্য এবং বিশ্বাসের মধ্যে সম্পর্ক কি? স্বামী বল্লেন, বাবু তোমার সন্তান এটা তোমার সত্য, বাবু আমার সন্তান এটা আমার বিশ্বাস। আমার মনে হয় কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশ্বাস করে ঠকাও ভালো, অন্তত অবিশ্বাসের আগুনে পোড়ার চেয়ে। যাই হোক কোয়ান্টাম, গুরুজী, ভাওতাবাজী আলোচনায় ভাওতাবাজী শব্দটার কারনে একটু সময় নিয়ে বিষয়টা দেখার চেষ্টা করেছি। অনেকের সাথে কথা হয়েছে। যারা কোর্স করেছেন কিংবা করেননি উভয়ের সাথে আলাপ করেছি।

কোয়ান্টাম সম্পর্কে আদৌ জানেন না এমন জনের সাথেও কথা হয়েছে। ভাওতাবাজী শব্দটার উচ্চারন সেখানেও শুনেছি। কিন্তু এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোন কারন তারা দেখাতে পারেন নি বরং মনে হয়েছে বলার জন্যই বল্লাম এই আর কি। যারা কোর্স করেছেন তারা কমিশনের বিনিময়ে কাউকে কোর্সে আহবান জানাচ্ছেন কিংবা নিজের লেজ কাটা গেছে বলে অন্যদের লেজ কাটার জন্য তারা অস্থির হয়েছেন এমনটা আমার কাছে প্রমানিত হয়নি। বাংলাদেশের জীবন্ত কিংবদন্তীতূল্য একজন চিকিৎসকের নিকট আত্মীয়ার বড় ছেলে এই কোর্স করছে না বলে যত ধরনের চাপাচাপি করা যায় তারা করেছেন।

লাভ হয়নি বলে তাদের দুঃশ্চিন্তার অন্ত নেই। আমার সামনেই ফাউন্ডেশনের কয়েকজন তাঁকে ধৈর্য্য ধারন করতে এবং তার জন্য নিয়মিত দোয়া করতে বলে এ নিয়ে কোন ধরনের চাপাচাপি, পীড়াপীড়ি কিংবা বাড়াবাড়ি না করার পরামর্শ দিলেন। তথ্যানুসন্ধানে যতটুকু জেনেছি, যারা কোর্স করে তাৎক্ষনিকভাবে উপকৃত হয়েছেন বাড়াবাড়ি করলে সাধারনত তারাই করে থাকেন। ভালো লাগার সচেজ অনুভূতি তাদের ঘিরে থাকে সারাক্ষন এবং প্রিয় মানুষরাও এই ভালো লাগা উপলব্ধি করুক, উপভোগ করুক, নিরন্তর ভালো থাকুক, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফল হোক এই আকাংখা তারা পোষন করেন। অতি উৎসাহের কারনে কোর্স করার জন্য পীড়াপীড়িটা অনেক সময় বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যায় আর অনিবার্যভাবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা হিতে বিপরীত হয়।

যিনি বাড়াবাড়ির শিকার হন তিনি কোয়ান্টাম সম্পর্কে, এর সেবা মূলক কর্মকান্ড সম্পর্কে, যারা কোয়ান্টামের সাথে সম্পর্কিত তাদের সম্পর্কে একটি বিশেষ ধারনা পোষন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তার সেই বদ্ধমুল ধারনা প্রচার করতে থাকেন। কোয়ান্টামের বিরূদ্ধচারন করা তার জীবনের অনুসঙ্গ হয়ে ওঠে। আসলেও কোন কিছু নিয়ে বাড়াবাড়ি অগ্রহনযোগ্য, নিন্দনীয় এবং পরিত্যাজ্য বলে আমি মনে করি। কেউ যদি নিজেকে পরিবর্তনের তাগিদ অনুভব না করে, তাকে জোড় করে পরিবর্তন করা যায় না।

উচিৎ ও না। কেন কোর্স করা দরকার এ বিষয়ে স্বচ্ছ ধারনা না নিয়েই অধিকাংশ কোয়ান্টাম গ্র্যাজুয়েট কোয়ান্টামের কিছু খন্ডিত উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কোর্স করেছেন বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। তাই অনেকেই সামান্য সুফল পেয়েই আপনজনদের সেই সুফলের স্বাধ গ্রহনের জন্য পীড়াপীড়ি করেন যা কখনো কখনো সত্যিই পীড়াদায়ক। পারিবারিক চাপে কোর্সে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর সাথেও কথা হলো । ধূমপান সকল ড্রাগ আসক্তির গোপন দরজা।

এই বিশ্বাস বা ধারনাটা তার পরিবারের। তার ধূমপান ছাড়াতে এবং বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে ভবিষ্যতে সে যাতে মাদকাসক্ত না হয় সে জন্য কোর্স করতে বাধ্য করা হয়। বাধ্য হওয়ার কারনে পরিবারের প্রতি তার ক্ষোভ এবং অভিমানের মাত্রা ছিল আকাশ ছোঁয়া। প্রথমদিন অভিমানী এই শিক্ষার্থীর যেনতেন ভাবে দিন পার করার যে প্রতিজ্ঞা ছিল, দিন শেষে এই কোর্স তার মনযোগ আকর্ষন করে। কোর্স শেষে তার অনুভূতি প্রকাশ করলো এভাবে, সিগারেট ছেড়ে দিয়েছি, ইনশায়াল্লাহ্ মাদক কখনো স্পর্শ করতে পারবে না।

ব্রেইন কি পুরোপুরি ওয়াশ হয়ে গেছে? জবাবে হাসতে হাসতে বললো, হয়তো হয়েছে। ভাল কিছুর জন্য শুধু ব্রেইন কেন পুরো বডি ওয়াশ হলেও আপত্তি নাই। ভালো কাজে পরিবারের লোকজন কেন যে চাপাচাপি করে, ভালবাসা দিয়েও তো এটা করা যায়। তবে ওদেরকে মাফ করে দিয়েছি। অধিকাংশ মহিলা কোর্সে আসেন শুধুমাত্র শারিরীক সমস্যা এবং ব্যথা নিরাময়ের জন্য।

নিরাময় হয়ও। হতাশা, লেখাপড়ায় অমনযোগী, শারিরীক ও মানসিক সমস্যা, বিভিন্ন ব্যথা, মাদকাশক্তি, টেনশন, মেডিটেশন শিখতে, কৌতুহল বশে ইত্যাদি বহু কারনে কোর্সে আসেন অংশ গ্রহনকারীরা। কোয়ান্টাম জীবন যাপনের বিজ্ঞান এটা জানতে বা শিখতে কিংবা কোয়ান্টামের সেবামুলক কর্মকান্ডে সংম্পৃক্ত হতে এসেছেন এমন কাউকেই আমি খুজে পাইনি। আরো খুঁজলে পাওয়া যেত কিনা জানি না। আট হাজার টাকা কোর্স ফি দিয়ে নিজেকে প্রতারিত ভাবছেন এমন কারো দেখাও পাইনি।

তবে কোর্স শেষে অধিকাংশই বিশ্বাস করেন যে, কোয়ান্টাম জীবন যাপনের বিজ্ঞান। কোর্স শেষে প্রানবন্ত-আত্মবিশ্বাসী মানুষগুলোর দিকে তাকালে মনে হয় অন্তরে বাহিরে তারা উপভোগ করছেন পৃথিবীর যত সুখ, যত প্রশান্তি। কোয়ান্টাম মেথড কোর্স না করেও মানুষ সুন্দর জীবন যাপন করতে পারে। হয়তো বা করেও। তবে যারা শিখতে চায় তাদের জন্য বাংলাদেশে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মতো আর কোন প্রতিষ্ঠানে সুন্দর জীবন যাপনের এমন পদ্ধতি শেখানো হয় কিনা সে তথ্য এখনও আমার অজানা।

কোন কিছু জানার জন্য সঠিক জায়গায় নক না করলে অবস্থা হতে পারে সেই আমাশা রোগীর মতো যে তার প্রকৌশলী বন্ধুর ফোন রিসিভ করে কেমন আছ’র উত্তরে যখন বলল, দোস্ত, আমাশা! দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছি কিন্তু মনে হয় কাজ হচ্ছে না!! কি করি বলোতো? বদনা এখন হস্তসঙ্গী। ডেষ্টিনেশন বেডরুম টু টয়লেট। খুব সমস্যায় আছি। প্রকৌশলী বল্লেন, বলো কি, এ তো বিরাট সমস্যা! তোমার বাথরুম কি এটাচড্ নাকি কমন? নাকি গ্রামের বাড়ীর মতো দুরে কোথাও? আজকালকার যুগে এটাচড্ বাথরুম ছাড়া চলে? তোমরা কেন যে ভুল কর? আচ্ছা যাই হোক, দুঃশ্চিন্তার কোন কারন নাই। আমি সুন্দর ডিজাইনে এটাচড্ বাথরুমের প্লান দিচ্ছি।

কম খরচে, অধিক সুবিধায়, পরিবেশ বান্ধব, পানি সাশ্রয়ী, দুর্গন্ধমুক্ত … … … রোগী অস্থির হয়ে বল্ল, দূর ব্যাটা, আমার এ দিকে কাপড় নষ্ট হচ্ছে আর উনি আছেন পরিবেশ বান্ধব এটাচড্ বাথরুমের প্লান নিয়ে… … … আবার বাড়ী নির্মাণ করবেন এমন একজন ডাক্তার বন্ধুকে বললেন, দোস্ত, বাড়ী তৈরী করবো, কি করা যায় বলোতো? ডিজাইন, প্লান, বাজেট, এ নিয়ে খুব টেনশনে আছি। ডাক্তার বল্লেন, বলো কি? টেনশন হলেতো খুবই সমস্যা। যে কোন মূল্যে টেনশন ফ্রি থাকতে হবে। আচ্ছা বলোতো, তোমার এই বাড়ী তৈরীর বাতিক কখন কখন ওঠে? এটা ঘুমানোর আগে বেশী হয় নাকি ঘুমানোর পরে? এই বাতিক উঠলে তোমার কি ক্ষুধা মন্দা হয়? পেটে গ্যাস হয়? মাথা কি গরম হয়, শির শির করে? … … … তবে চিন্তার কোন কারন নেই। তোমার এই বাতিক ঠান্ডা করা যাবে।

কিছু টেষ্ট দিচ্ছি, কোন ক্লিনিকে করবা সেটাও লেখা আছে এখানে … … … এখন বুঝুন ঠ্যালা। সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সঠিক জায়গা না হলে আমাদের জানার আকাংখা, প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির কি করুণ অবস্থা হয় সেটা উপড়ের দুটো ঘটনায় সহজেই অনুধাবন করা যায়। আসলে আমাশা রোগীর উচিৎ ছিল ডাক্তারের সাথে তার সমস্যা নিয়ে আলাপ করার আর যিনি বাড়ী তৈরী করবেন তার উচিৎ ছিল প্রকৌশলীর কাছে যাওয়ার। সর্ব ক্ষেত্রেই তাই। কোন বিষয়ে জানার জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যিনি পারদর্শী তার সাথেই শেয়ার করা উচিৎ।

ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইটসহ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ওয়েব সাইটে প্রাপ্ত তথ্য এবং অংশগ্রহনকারীসহ অনেকের সাথে আলোচনায় কোয়ান্টাম সম্পর্কে জেনেছি সেই Science of Living যা বলে দেয় জীবনটাকে কীভাবে সুন্দর করা যায়, সাফল্যের সাথে কীভাবে প্রাচুর্য অর্জন করা যায়, ভুল থেকে কীভাবে দূরে থাকা যায়, পাপ কত কম করা যায়, আর ভালো বা কল্যাণ কত বেশি করা যায়। কোয়ান্টামের কার্যক্রম মূলত দুটি ধারায় পরিচালিত হচ্ছে: আত্মউন্নয়ন এবং সৃষ্টির সেবামূলক। আত্মউন্নয়নমূলক কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে এর সদস্যদের সফল জীবনের সূত্রের পাশাপাশি একজন মানুষ যাতে নৈতিক ও মানবিক গুণাবলি আয়ত্ত করে অনন্য মানুষ হয়ে উঠতে পারে সেজন্যে সারা মাসজুড়ে পরিচালিত হচ্ছে কোয়ান্টামের নানা ধরনের আত্মউন্নয়নমূলক কাজ। এর পাশাপাশি সৃষ্টির সেবার জন্যে ফাউন্ডেশন করছে সৃষ্টির সেবামূলক কার্যক্রম। স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রম, বান্দরবানের লামায় বঞ্চিত শিশুদের আলোকিত মানুষরূপে গড়ে তোলার জন্যে কোয়ান্টাম শিশুকানন, রাজশাহীতে অভিভাবকহীন শিশুদের আলোকিত মানুষরূপে গড়ে তোলার জন্যে কোয়ান্টাম শিশুসদন, খতনা কার্যক্রম, বিশুদ্ধ খাবার পানি কার্যক্রম, চিকিৎসাসেবা, এবং দুস্থদের ঋণমুক্তি ও পুনর্বাসন কার্যক্রম।

মূল কোয়ান্টাম শব্দের আভিধানিক অর্থ যাই হোক না কেন বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমার বিশ্বাস কোয়ান্টাম মেথড জীবনের কন্টকাকীর্ণ বাঁকগুলোকে পরিনত করে চলেছে পুষ্পিত সৌন্দর্যের রাজপথে। উন্মোচিত করেছে প্রশান্তি, সুস্বাস্থ্য, সাফল্য আর সবাই মিলে ভাল থাকার সীমাহীন সম্ভাবনার দ্বার। বিশ্বাস করলে প্রয়োজনে যে কেউ এই সম্ভাবনার দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারে প্রশান্তির স্বপ্নিল ভূবনে। প্রিয় ব্লগার পাকাচুল, পরিবারে মানুষটা প্যান প্যান কেন করেছিল এখন আমি বুঝতে পারি। অনেক অজানা বিষয় ছিল, জানা হোল।

কোয়ান্টামের জীবন যাপনের সূত্রগুলো আমার কাছে নতুন ছিলনা কিন্তু বিশ্বাসযোগ্য উপস্থাপনায় সেগুলো কখন যে আমার নিজের হয়ে গেলো, কোয়ান্টামের সার্থকতা মনে হয় এখানেই। কোয়ান্টাম সম্পর্কে আপনি অনেক ভালো জানেন। আমি জানার চেষ্টা করছি। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা আছে কিন্তু ভাল থাকতে চাই দুজনেই। কোয়ান্টাম কোর্স না করেও অনেকেই ভাল থাকে, আপনিও ভাল থাকবেন, বেশশ্ ভাল থাকবেন।

আন্তরিক শুভ কামনায়, খোদা হাফেজ। লিঙ্ক এখানে Click This Link [আমার অনুসন্ধানের ক্ষেত্র এবং টার্গেট ছিল মূলত আমার পরিচিত যারা কোর্স করেছেন এবং করেননি তারা। শান্তিনগর কোয়ান্টামের মূল অফিস, কোয়ান্টাম ব্লাড ব্যাংক, কাকরাইল ওয়াই এম সি এ ভবন ও আইডিইবি ভবনে কোর্সে অংশ গ্রহনকারীগন। বেশ কিছু মজার এবং চমকপ্রদ অভিজ্ঞতাও আছে। শেয়ার করার প্রতিশ্রুতি রইল।

সবাই ভাল থাকুন। ] । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.