দাগ খতিয়ান নাইতো আমার/ঘুরি আতাইর পাতাইর...
তৃণমূল জনগণের দোড়গোড়ায় তথ্যসেবা পৌছে দিতে জনগণের মতায়নের ল্েয সারা দেশে একযোগে ইউআইএসসি (ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র) প্রধানমন্ত্রী গত বছরের ১১ নভেম্বর টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে চালু করেন। গ্রামের মানুষকে কম সময়ে ও কম খরচে দেশে বিদেশে যোগাযোগ স্থাপনে ইন্টারনেট যোগাযোগ, ব্রাউজিং, অফলাইন ও অন লাইন তথ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিা, আইন ও মানবাধিকার, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন তথ্যসেবার জন্য সারা দেশের ন্যায় সুনামগঞ্জের ৮৪ টি ইউনিয়নেও একই ল্েয ইউনিয়ন তথ্য সেবাকন্দ্র চালু করা হয়। কিন্তু ডাকঢোল পিটিয়ে চালু করা হলেও পরবর্তী অগ্রগতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে কেউ খবর রাখছেন না। যার ফলে স্থানীয় জনগণ অবকাঠামো থাকা সত্ত্বেও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে পর্যাপ্ত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়নে কর্মরত বিভাগীয় কর্মকর্তারা নিয়মিত তথ্যকেন্দ্র গিয়ে প্রচার-প্রচারণা ও প্রশিণ দেওয়ার কথা থাকলেও তারাও তাতে অংশ নেননা।
প্রচারণা ও সচেতনতার অভাবে স্থানীয় জনগণও তথ্যকেন্দ্র সম্পর্কে কিছুই জানেন না। জেলা উপজেলা ও ইউনিয়ন ফোকাল পয়েন্ট গুলোতে নিয়মিত পাকি সভা ও অগ্রতির রিপোর্ট এনআইলজিকে পাঠানোর কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোথাও মিটিংও হয়নি। যার ফলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের ল্েয পরিচালিত এই তথ্যকেন্দ্র গুলো জনগণের তেমন উপকারে আসছেনা। তবে একই ল্েয পরিচালিত উপজেলা ই সেন্টারগুলোতে মোটামুটি কার্যক্রম চলছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১১ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ইউএনডিপির আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একযোগে বাংলাদেশে ইউনিয়ন তথ্যসেবাকেন্দ্র গুলোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এই প্রকল্প বাস্তবায়নে রয়েছে। উদ্বোধনের পর প্রতিটি ইউনিয়নে দুটি করে কম্পিউটার, প্রিন্টার, মডেমসহ ই সেবার বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে একজন পুরুষ ও একজন মহিলাকে ইউনিয়ন তথ্য সেবাকেন্দ্রে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে সেবা কেন্দ্র থেকে জনগণকে তথ্য দিয়ে যে সেবামূল্য পাওয়া যাবে তার নির্দিষ্ট অংশ অপারেটররা বন্ঠন করে নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। বিনিময়ে অপারেটররা নিয়মিত অফিসে বসে জনগণকে সেবা দেওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে জেলার ৮৪টি ইউনিয়নে বিনামূল্যে নিয়োগ পাওয়া ১৬৮জন অপারেটরদের মধ্যে ইতোমধ্যে ১২০ জনই বেতন না পেয়ে চলে গেছেন।
যেকারণে অপারেটরের অভাবে প্রায় অকার্যকর হয়ে আছে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র গুলো। যারা আছেন তারা নিজেরাই সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। দেখা গেছে অপারেটররা চলে যাওয়ায় অধিকাংশ সময়ই কেন্দ্রগুলো বন্দ থাকে। গ্রামের লোকজন কোন তথ্যের জন্য সেবাকেন্দ্রে গিয়েও কাউকে না পেয়ে তথ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যেসব ইউনিয়নে বিদ্যুৎ নেই সেখানে দুটি লেপটপ, যেখানে বিদ্যুৎ আছে সেখানে একটি লেপটপ ও একটি ডেস্কটপ এবং প্রতিটি সেন্টারেই একটি মডেম, একটি স্ক্যনার-প্রিন্টার, সোলাসিডারশিপ সাইকেল ব্যাটারী, কন্ট্রোলার ও ইনভার্টার রয়েছে।
এসব তথ্যকেন্দ্র নিয়মিত পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল অপারেটরদের প্রশিণ দিয়েছে। গত মাসে আরো দতা বৃদ্ধির জন্য সিলেটে একটি প্রশিণের আয়োজন করা হলেও সুনামগঞ্জ থেকে কোন অপারেটর যায়নি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে উপজেলা পর্যায়ে ইউআইএসসি( ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র) মনিটরিং ইউনিট থাকার কথা। একইভাবে ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পরিচালনা কমিটি রয়েছে। তথ্যকেন্দ্র গুলোতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সকল বিভাগীয় কার্যক্রম, কৃষি, শিা, স্বাস্থ্য ও দতা উন্নয়নসহ নাগরিকসেবা দেবার পাশাপশি দতা উন্নয়নের জন্য নিয়মিত প্রশিণ আয়োজনের কথা থাকলেও কোথাও এখন পর্যন্ত প্রশিণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
কেন্দ্র গুলোর চলমান কার্যক্রমের প্রচারণা টিভি রেডিও প্রোগ্রাম, সংবাদপত্রে প্রতিবেদন, সেমিনার, কর্মশালা, সভা-সমাবেশ, র্যালী, মাইকিং, হাটবাজারে প্রদর্শনী, লিফলেট, পোস্টার, স্টিকার, স্কুল কলেজ পর্যায়ে জানানোর কথা থাকলেও তাও বাস্তবায়িত হচ্ছেনা। যার ফলে সরকারের মূল ল্য ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি জনগণও তথ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অলস পড়ে আছে উচ্চ প্রযুক্তর এসব তথ্য সেবাকেন্দ্রগুলো।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্রের অপারেটর পিনাকি তালুকদার বলেন, কেন্দ্রে সকল অবকাঠামো থাকলেও জনগণ ই তথ্য সম্পর্কে তেমন কিছু জানেনা। তার কেন্দ্রে এ পর্যন্ত মাসিক ও পাকি কোন মিটিংও হযনি।
ইউনিয়নে কর্মরত সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারাও কখনো এসে সচেতনতামূলক কোন কাজে অংশ নেননি এবং এ নিয়ে কোনও কথাও বলেননি বলেও তিনি জানান। তবে কেউ তথ্যকেন্দ্র আসলে তারা তাকে সেবা দিচ্ছেন বলে জানান।
মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আঞ্জব আলী বলেন, নির্দিষ্ট দিনে অপারেটর তথ্যকেন্দ্রে আসেন। সচেতনতা ও প্রচারণা চালানো গেলে জনগণকে আরো তত্যকেন্দ্রমুখি করা যেত। ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে নিয়মিত পাকি মিটিং করা সম্ভব হচ্ছেনা বলে জানান।
তবে অপারেটরদের নির্দিষ্ট বেতন দেওয়া হলে তারা নিয়মিত অফিস করলে জনগৃণ উপকৃত হবেন। এ বিষয়টি ভাবা উচিত। না হলে মূল ল্য ব্যাহত হওয়ার আশংকা থেকে যায়।
ইউআইএসসির জেলা ফোকাল পয়েন্ট অতিরক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ কামাল উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, সুনামগঞ্জের ৮৪ ইউনিয়নেই ই তথ্য কেন্দ্র চালু আছে। তবে সচেতনতা, প্রচারণার অভাবে এখনো ব্যাপক পর্যায়ের তৃণমূলের জনগোষ্টিকে সেবার আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছেনা।
সেবার জন্য যাদের প্রশিণ দিয়ে এনেছিলাম বেতন না থাকায় তাদের অধিকাংশই ইতোমধ্যে চলে গেছে। তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শেষ হলে নতুন নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের ই তথ্য কেন্দ্রে সেবার মান বাড়ানোর জন্য কার্যক্রর ভূমিকা নিতে বলা হবে। তৃণমূলের জনগণ সহজে কৃষি, শিা, স্বাস্থ্য চাকরিসহ বিভিন্ন দিক দিয়ে সেবা পেতে পারে। তবে একই ল্েয পরিচালিত দুটি উপজেলার কমিউনটি ই সেন্টারের কার্যক্রম ভালো চলছে। এখানে প্রশিণের ব্যবস্থাসহ জনগণ ইন্টারনেটের মাধ্যমে ই সেবা পাচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।