সুন্দর এক সুখী সমাজ গঠনের ডাক দিয়ে যাই
ভারতে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে কোনো উৎসাহ নেই। উৎসাহ নেই পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যেও। কিন্তু আমরা বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে যেন বেশি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশকে অগ্রসর হতে হবে রবীন্দ্র-চেতনাকে নির্ভর করে। কিন্তু রবীন্দ্র-চেতনা বলতে আসলে ঠিক কী বুঝতে হবে, সেটা স্বচ্ছ হতে পারছে না তার প্রদত্ত বক্তব্য থেকে।
আমাদের জাতীয়তাবাদের একটা উপাদান হচ্ছে ভাষা। এই ভাষাটি রবীন্দ্রনাথ সৃষ্টি করেননি। যে বাংলা ভাষা এখন লিখি, তার প্রথম পরিচয় আমরা পাই মাইকেল মধুসূদন দত্তের নাটকের সংলাপে। বাংলা ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদেরও প্রথম উদগতা হলেন মধুসূদন। তিনি সুদূর ফন্সান্সে বসে তার সনেটে জয়গান করেছেন বাংলা ভাষার।
গৌরব করেছেন কপোতাক্ষ নদকে নিয়ে। মধুসূদনের মধ্যে প্রথম প্রকাশ পেয়েছে আমাদের পৃথক ভাষাভিত্তিক জাতীয় চেতনার পরিচয়, রবীন্দ্রনাথের মধ্যে নয়। কিন্তু এখন প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে, রবীন্দ্রনাথ আমাদের জাতীয় চেতনার উৎস। সেটাকে ঐতিহাসিক দিক থেকে মেনে নেয়া যেতে পারে না। আসলে রবীন্দ্রনাথ হতে চেয়েছেন বিশ্বকবি।
কোনো বিশেষ দেশের জাতীয় কবি নন। তিনি সরাসরি তার লেখায় করেছেন সর্বপ্রকার জাতীয়তাবাদের নিন্দা। রবীন্দ্রনাথকে বলা হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক। কিন্তু কিভাবে তিনি অসাম্প্রদায়িক হিসেবে বিবেচিত হতে পারছেন সেটা আমাদের কাছে মোটেও স্বচ্ছ নয়। রবীন্দ্রনাথ এক দিকে বলেছেন আন্তর্জাতিকতাবাদের কথা, অন্য দিকে আবার ফিরে যেতে চেয়েছেন ভারতীয় আর্য সংস্কৃতির দিকে।
আর্যবাদ বিংশ শতকে জন্ম দিতে পেরেছে জার্মানির ভয়াবহ নাৎসি জাতীয়তাবাদ। ডেকে এনেছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে আমি রবীন্দ্রনাথকে অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের প্রতিনিধি হিসেবে ভাবতে পারি না। এর একটা কারণ, রবীন্দ্রনাথের জমিদারি পতিসরে আমি একাধিকবার গিয়েছি। রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ির ঠিক পেছনে রয়েছে একটা বড় দীঘি।
আমি পতিসরে বয়স্ক লোকের মুখে শুনেছি, একসময় ওই দীঘিতে কোনো মুসলমানের গোসল করার অধিকার ছিল না। মুসলমান প্রজাদের রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়িতে খাজনা দিতে এসে থাকতে হয়েছে দাঁড়িয়ে। তাদের বসতে দেয়া হয়নি। যারা মনে করেন রবীন্দ্রনাথ ছিলেন অসাম্প্রদয়িক, তারা পতিসরে মুসলমান প্রজাদের এভাবে অবহেলা করার কী ব্যাখ্যা দিতে চান? রবীন্দ্রনাথের জমিদারিতে মুসলমান কৃষক প্রজারা এ রকম ব্যবহার পেয়েছেন বহু দিন ধরে। রবীন্দ্রনাথ মাঝে মধ্যে এসেছেন পতিসরে।
তিনি রাখেননি এসবের খবর।
রবীন্দ্রনাথের এক বিশেষ কীর্তি হলো বিশ্বভারতী। এখন যেখানে বিশ্বভারতী, সেখানে রবীন্দ্রনাথের বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শান্তিনিকেতন আশ্রম। পরে ১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ সেখানে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ব্রহ্মচর্যাশ্রম’ নামক বিদ্যালয়। এতে কোনো মুসলমান ছাত্রের প্রবেশাধিকার ছিল না।
রবীন্দ্রনাথ তার মুসলমান কৃষক প্রজাদের শিক্ষিত করার জন্য কোনো বিশেষ বিদ্যালয় স্খাপন করেননি। বিশ্বভারতী স্খাপন করতে গিয়ে তিনি ভারতের বিভিন্ন দেশীয় রাজন্যবর্গের কাছে চাঁদা চান। হায়দরাবাদের ‘নিজাম’ রবীন্দ্রনাথকে চাঁদা দেন এক লাখ টাকা। সেদিন এক লাখ টাকা ছিল অনেক। নিজামের এই চাঁদার জন্য বিশ্বভারতীতে ঘটে কয়েকজন মুসলমান ছাত্রের পড়ার সুযোগ।
রবীন্দ্রনাথ ইসলামী সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণার জন্য করেন কিছু বিশেষ ব্যবস্খা। নিজাম বাহাদুর যদি রবীন্দ্রনাথকে সে দিন অতটা চাঁদা না দিতেন, তবে রবীন্দ্রনাথ স্খাপিত বিশ্বভারতীতে কোনো মুসলমান ছাত্র পড়ার সুযোগ পেত কি না সেটা সন্দেহের ব্যাপার। অনেক বাস্তব সমস্যা ছিল। হিন্দু ভেবেছে মুসলমানরা অস্পৃশ্য, অশুচি। মুসলমানদের সাথে একত্রে আহার করতে চায়নি তারা।
এড়িয়ে চলতে চেয়েছে মুসলমানের ছোঁয়া। হিন্দু- মুসলমান বিরোধে এই অস্পৃশ্যতা পালন করেছে বিশেষ ভূমিকা। যেটা রবীন্দ্রনাথ তার জীবনে একপর্যায়ে অস্বীকার করতে পারেননি অথবা চাননি। বিশ্বভারতী ইংরেজ আমলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। বিশ্বভারতীর ছাত্ররা পরীক্ষা দিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বিশ্বভারতীর লেখাপড়া সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বিখ্যাত শিক্ষাবিদ ও ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘১৯২২ হইতে ১৯৪৭ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রগণ যে কৃতিত্বের পরিচয় দিয়াছেন, তাহার সহিত তুলনা করিলে ঐ সময়ের মধ্যে বিশ্বভারতীর কৃতিত্ব এ বিষয়ে নগণ্য বলিলে বিশেষ অত্যুক্তি হইবে না...। কেবল চিত্রকলা ও নৃত্যগীত অনুষ্ঠানকে ইহার ব্যতিক্রম বলা যায়। এই দুই বিষয়ে বিশ্বভারতীর অবদান অনস্বীকার্য। (বাংলাদেশের ইতিহাস, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা নম্বর ৫৩০, ১৯৭৫ সংস্করণ)। ’ এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২১ সালের জুলাই মাসে।
আর বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২২ সালের ১৬ মে। রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলে পূর্ববঙ্গে একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উদ্ভব হয়। আর এই মধ্যবিত্ত শ্রেণী চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে বাংলাভাষী মুসলমান সমাজের। আমরা জানি, পাকিস্তান হওয়ার পর, সাবেক পাকিস্তানের রাষ্ট্রিক কাঠামোর মধ্যে গড়েছিল রাষ্ট্রভাষা বাংলার আন্দোলন। যাকে বলা যায় আমাদের জাতিসত্তা- চেতনার অন্যতম ভিত্তি।
এর সাথে রবীন্দ্র-চেতনার কোনো সুদূর যোগাযোগ আছে বলে ভাবতে পারা যায় না। বাংলাভাষী হিন্দুরা নয়, ভাষা আন্দোলন করেছেন বাংলাভাষী মুসলমানেরা। এটা অনেকের কাছে মনে হতে পারে বিস্ময়কর। ভাষাতাত্ত্বিক সুনীতি কুমার চট্টপাধ্যায়ের ভারতের ভাষা সমস্যা নিয়ে লিখিত বই প্রকাশ করেছিল বিশ্বভারতী। যাতে বলা হয়েছিল ভারতের রাষ্ট্রভাষা হওয়া উচিত হিন্দি।
বইটি প্রকাশিত হয়েছিল ইংরেজ আমলে। অর্থাৎ বিশ্বভারতী ছিল হিন্দি ভাষার পক্ষে। তাই বলা চলে না, আমরা আমাদের জাতীয় চেতনা লাভ করেছি রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে। আমরা ইতিহাসের এসব কথা যেন ভুলে যেতেই চাচ্ছি।
আর বলছি, রবীন্দ্রনাথ হলেন আমাদের জাতীয় চেতনার উৎস!
আমাদের এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের রচক হলেন রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথের গানকে আমরা জাতীয় সঙ্গীত করতে চাইনি। এই গানটি জোর করে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয় ভারত সরকারের পক্ষ থেকে। আমি এ কথাও বলতে পারি, আমার নিজের জ্ঞান থেকে। আমি ১৯৭১ সালে ছিলাম কলকাতায়।
আওয়ামী লীগের একটা বড় অংশই করেছিল ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটির বিরোধিতা। এই গানটি রবীন্দ্রনাথ রচনা করেছিলেন ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সময়। তিনি এ সময় চেয়েছিলেন বঙ্গভঙ্গ রদ করতে। এখানে যে সোনার বাংলার কথা বলা হয়েছে, সে বাংলা আর বর্তমান বাংলাদেশ সমার্থক নয়। আমরা নিশ্চয় এখন ভাবছি না সাবেক বাংলাদেশ গড়ার কথা; পূর্ব ও পশ্চিম বাংলাকে এক করে দেয়ার কথা।
এই গানটি তাই হওয়া উচিত নয় আমাদের জাতীয় সঙ্গীত। তাই উঠেছিল এর বিরোধিতা। তা ছাড়া এই গানের সুর হলো বাউল। এই সুরে নেই কোনো বীরত্বব্যঞ্জনা। বাউল সুর মানুষকে বিবাগী করতে চায়।
জাগতিক করতে নয়। জীবনসংগ্রামে তা চায় না আমাদের উদ্বুদ্ধ করতে। অনেকে চেয়েছিলেন, ‘জয়বাংলা বাংলার জয়’ গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত করতে। কারণ গানটির সংযোগ ঘটেছিল ১৯৭১ সালের সংগ্রামের সাথে। এটার উদ্ভব হতে পেরেছিল আমাদেরই ভেতর থেকে।
এই গান কারো কাছ থেকে পাওয়া ছিল না। ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ‘জনগণমন- অধিনায়ক জয়হে ভারতভাগ্যবিধাতা’। গানটি রবীন্দ্রনাথ রচনা করেন ইংল্যান্ডের রাজা এবং তখনকার ভারতের সম্রাট পঞ্চম জর্জকে খুশি করার জন্য। কারণ, তিনি রদ করেন ‘বঙ্গভঙ্গ’। রবীন্দ্রনাথের এই গানে আছে দ্রাবিড়, উৎকল, বঙ্গের কথা।
আছে পাঞ্জাব ও সিìধুর কথা। কিন্তু নেই আসামের কথা। রবীন্দ্রনাথ উত্তর-পূর্ব ভারতকে বাদ দিয়েছেন তার রচিত এই গান থেকে। কারণ ১৯০৫ সালে হয় বঙ্গভঙ্গ। তদানীন্তন পূর্ববঙ্গের সবক’টি জেলা ও দার্জিলিং জেলাকে বাদ দিয়ে পুরো উত্তরবঙ্গ এবং চিফ কমিশনার শাসিত তখনকার আসামকে নিয়ে পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশ গঠিত হয়েছিল।
আর তখনকার পশ্চিমবঙ্গ, বিহার (ঝাড়খণ্ডসহ), ছোট নাগপুর ও উড়িষ্যাকে নিয়ে গঠিত হয়েছিল বঙ্গদেশ। এর ফলে বাংলাভাষী হিন্দুরা আরম্ভ করে বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলন। আন্দোলন খুব জোরালো হয়েছিল। রদ করতে হয়েছিল বঙ্গভঙ্গ। মুজফ্ফর আহ্মদের মতে ‘পূর্ববঙ্গের বড় হিন্দু জমিদাররা বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধ আন্দোলনে প্রচুর সাহায্য করছিলেন।
জমিদাররা ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন যে, মুসলিম কৃষক প্রজা প্রধান পূর্ববঙ্গে না জমিদারি প্রথা বিলোপ হয়ে যায়। (আমার জীবন ও ভারতে কমিউনিস্ট পার্টি; পৃষ্ঠা- ৭; ১৯৭৭, ঢাকা সংস্করণ)। যাকে বলা হয় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন, তা আসলে ছিল ইংরেজ আমলের ‘বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি’র বিভাজন। বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি বলতে বুঝাত ছোট নাগপুর, বিহার, উড়িষ্যা ও বাংলাকে একত্রে। ইংরেজ আমলে বাংলা বলতে বুঝিয়েছে বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলকে।
যাকে নিুবঙ্গও বলা হতো। বঙ্গভঙ্গ রদ হয়, কিন্তু তখনকার বিহার, ছোট নাগপুর ও উড়িষ্যা নিয়ে গঠন করা হয় একটা ভিন্ন প্রদেশ। এতে বেশ কিছু বাংলা ভাষাভাষী মানুষ থেকে যায় নতুন গঠিত বিহার-উড়িষ্যা প্রদেশে। একইভাবে আসামে থেকে যায় অনেক বাংলা ভাষাভাষী মানুষ। তখনকার আসাম ছিল জনবিরল অঞ্চল।
এর সাথে যুক্ত করা হয় সিলেট, কাছাড় ও গোয়ালপাড়া অঞ্চল, যেখানে মানুষ কথা বলে বাংলা ভাষায়। রবীন্দ্রনাথ এর কোনো প্রতিবাদ করেননি। তিনি খুশি হন নতুন বাংলা প্রদেশ নিয়ে। এ থেকে মনে হয়, রবীন্দ্রনাথ চেয়েছিলেন তার জমিদারি রক্ষা করতে। ঠিক বাংলা সংস্কৃতি রক্ষা করা তার লক্ষ্য ছিল না।
তা যদি তার লক্ষ্য হতো তবে তিনি ডাক দিতেন সমগ্র বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলকে এক করে একটি প্রদেশ গঠন করার। কিন্তু সেটা তিনি করেননি। অথচ আমরা এখন বলতে চাচ্ছি, রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বিশুদ্ধ বাঙালি জাতীয়তাবাদী। বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলন এ দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে। কিন্তু যেটা ভুলে যাওয়া হচ্ছে, তা হলো ১৯০৫ সালে যে হিন্দুসমাজ বঙ্গভঙ্গ রদের জন্য প্রবল আন্দোলন করেছিল, সেই হিন্দুসমাজ ১৯৪৭ সালে করেছিল বাংলা বিভাজন সমর্থন।
তারা চায়নি শরৎচন্দ্র বসু ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর স্বাধীন বাংলা গঠনের পরিকল্পনাকে সমর্থন করতে। তাই ঘটতে পারে ১৯৪৭ সালে বঙ্গ বিভাজন। বাংলাভাষী মুসলমান চায়নি বঙ্গ বিভাজন। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, মুসলমানদের সাম্প্রদায়িকতার কারণে ইতিহাসের গতিপ্রকৃতি হতে পেরেছে ভিন্ন। মুসলমানেরা সাম্প্রদায়িক, আর তাদের ছাড়তে হবে এই মনোভাব।
বলা হচ্ছে, রবীন্দ্রনাথকে করতে হবে আমাদের জাতীয় আদর্শ। কিন্তু এই আদর্শ কতটা হবে স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য সহায়ক সেটা হয়ে উঠেছে অনেকেরই ভাবনার বিষয়। এ প্রসঙ্গে কিছু বলছেন না আমাদের প্রধানমন্ত্রী। রবীন্দ্রনাথ হয়ে উঠতে চাচ্ছেন যেন এক বিশেষ ধরনের রাজনীতির হাতিয়ার, যা বাংলাদেশের স্বাধীন অস্তিত্বকে মনে হয় বিপন্ন করেই তুলবে। রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা হতে দেখা যায় না।
বাংলাদেশে রবীন্দ্র-বন্দনা করা হচ্ছে যেন এক বিশেষ লক্ষ্যে বাংলাদেশকে ঠেলে নিয়ে চলার জন্য, যেটা আমাদের বাঞ্ছিত হতে পারে না। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, স্বাধীন থাকারই জন্য। বাংলাদেশের মানুষ চায় না অন্য কোনো দেশের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হতে। কিন্তু রবীন্দ্র-বন্দনা যেন ক্ষুণí করতে চাচ্ছে আমাদের স্বাধীন পৃথক জাতীয়তাবোধকে।
লেখক : এবনে গোলাম সামাদ
প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট
সুত্র: দৈনিক নয়াদিগন্ত, মে ১৭, ২০১১
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।