জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণে
সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে
তামাক ব্যবহারজনিত কারণে রোগ, মৃত্যু এবং চিকিৎসাখাতে রাজস্ব ব্যয় হ্রাসে সরকারকে নীতি গ্রহণে কঠোর হতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণে নমনীয় নীতি তামাক ব্যবহারকে বৃদ্ধি করবে, যা সরকারের জনস্বাস্থ্য কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করবে। তামাক ব্যবহার হ্রাসে সকল তামাকজাত দ্রব্যের উপর উচ্চ কর আরোপ এবং আইন সংশোধন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। কিন্তু তামাক কোম্পানিগুলো এ সকল নীতি দূর্বল করতে বিভিন্ন বিভ্রান্তমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে, যা সম্পর্কে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে। আজ সকাল ১১ টায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট আয়োজিত ‘‘তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে তামাক কোম্পানিগুলোর কুটকৌশল রোধে করণীয়’’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ-র সভাপতিত্বে উক্ত গোলটেবিল বৈঠকে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তামাক বিরোধী নারী জোটের আহবায়ক ফরিদা আক্তার, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের হিউম্যান রাইটস এন্ড লিগ্যাল এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান, জেড আই খান পান্না। গোলটেবিল বৈঠকে সঞ্চালক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইপসার প্রোগ্রাম অফিসার নাজমুল হায়দার।
বক্তারা বলেন, তামাক কোম্পনিগুলো আইনভঙ্গ করে জনসাধারণকে তামাক ব্যবহারে উদ্ধুদ্ধ করছে। কিন্ত কোম্পানির আইনভঙ্গ বা বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধে সরকারের পদক্ষেপ তেমন জোরালো নয়। তামাক কোম্পানিগুলোর উদ্ধুদ্ধকরণ কার্যক্রমের প্রতি উদাসীনতা, কোন কোন ক্ষেত্রে নীতি প্রণয়নে নমনীয়তার কারণে কোম্পানিগুলো তাদের রোগ ও মৃত্যু সৃষ্টিকারী পণ্যের বাজার সৃষ্টির সুযোগ পাচ্ছে।
বক্তারা বলেন, কর বৃদ্ধির আলোচনা আসলেই বিড়ি কোম্পানীগুলো বলে থাকে ২৫ লক্ষ শ্রমিক কর্ম হারাবে, যার কোন সঠিক তথ্য প্রমান নেই। শ্রম আইন অনুসারে শ্রমিক নিয়োগ বা নিবন্ধের ক্ষেত্রে যে সকল বিধানগুলো থাকা উচিত, তা নেই। শুধুমাত্র কর বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হলেও কোম্পানীগুলোর পক্ষ থেকে এ ধরনের অযৌক্তিক একটি সংখ্যার অবতারনা করা হয়। ফলে প্রতিবারই নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে তাদের ছাড় দেয়া হয়। এ ধরনের নানা দোহাই দিয়ে কোম্পানিগুলো লাভের পাহাড় গড়লেও সাধারণ মানুষের ভাগ্যে আসছে মৃত্যু ও রোগ।
আমরা কর্মসংস্থান, দরিদ্র মানুষদের বিনোদনের জন্য এমন কোন সুযোগ দিতে পারিনা, যা তাদের রোগ ও মৃত্যুর কারণ।
বক্তারা বলেন একটি দেশের উন্নয়নে খাদ্য নিরাপত্তা একটি জরুরী বিষয়। কিন্ত আমাদের দেশে তামাক চাষ যেভাবে আগ্রাসী রূপ নিয়ে খাদ্য উৎপাদনের জমি দখল করছে এতে সংকট আরো প্রকট হচ্ছে। অদুর ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘিœত হবে।
বক্তারা বলেন সামাজিক দায়বদ্ধতা কোম্পানিগুলোর এমন একটি কার্যক্রম যার মাধ্যমে তারা নিজেদের অপকর্মকে আড়াল করে থাকে।
এ সকল কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা মানুষের সহনুভুতি আদায় করছে। তামাক কোম্পানীগুলো একার্র্যক্রম করেই ক্ষান্ত নয়, বিভিন্ন কুটকৌশলে নীতি নির্ধারক ও প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদেরও প্রভাবিত করছে। সরকারের কর্মকর্তাদের কোম্পানিগুলোর সাথে কিভাবে কার্যক্রম করবে সে বিষয়ে সুপষ্ট নীতি থাকা প্রয়োজন। এধরনের নীতি তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সরকারের নীতিকে কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
সভায় তামাক কোম্পানিগুলোর ভ্রান্ত প্রচারণা গ্রহণ না করে, বরং জনস্বাস্থ্যের বিষয়কে প্রধান্য দিয়ে সরকারের নীতি গ্রহণ করা, তামাক কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে নমনীয়তা পরিহার, আসন্ন বাজেটে তামাক কারখানায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে তামাকজাত দ্রব্যের উপর একটি নির্দিষ্ট কর আরোপ এবং উক্ত অর্থে একটি ফান্ড গঠন করার সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে বক্তব্য রাখেন প্রত্যাশার সেক্রেটারী জেনারেল হেলাল আহমেদ, মানবিকের রফিকুল ইসলাম মিলন, একলাবের শামছুল আলম, নিরাপদের ইবনুল সাইদ রানা, সিরাক বাংলাদেশের এএম সৈকত প্রমুখ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।