প্রবাসী
সোলার প্লেন।
পৃথিবীতে জালানি ফুরিয়ে আসছে। ফসিল ফুয়েল যেমন তেল বা গ্যাস ব্যাবহার যে হারে বাড়ছে তাতে করে আর খুব বেশী হলে ১০০ বছর, তারপর?আর এ গুলোর ব্যবহারে বাড়ছে কার্বন নির্গমন, পরিবেশ দুষন , ওজোন লেয়ারের ক্ষয় , পৃথিবীর তাপ মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে ইত্যাদি। সুতরাং বিকল্পের সন্ধানে নেমে পড়েছে সারা বিশ্ব। তেল, কয়লা গ্যাস পুড়িয়ে ফেললে নতুন করে আর পাওয়া যাবে না।
তাই নবায়নযোগ্য, পরিবেশ বান্ধব জালানীর সন্ধান। সুর্য এক অফুরন্ত শক্তির উৎস। সুর্য শক্তিকে কাজে লাগান যায় কিভাবে? কিভাবে তা দিয়ে গাড়ী চালানো, বিদ্যুৎ উতপাদন, ইত্যাদি সম্ভব?
এরই ধারাবাহিকতায় চিন্তা ভাবনা চলছে সুর্যের শক্তি কে কাজে লাগিয়ে বিমান চালানো। মুশকিল হল মাধ্যাকর্ষনের বিপক্ষে কাজ করে বিমান কে আকাশ পথে চালু রাখতে প্রচুর পরিমান শক্তির প্রয়োজন
২০০৩ সালে সুইজারল্যান্ডে প্রতিষ্ঠিত হয় “সোলার ইম্পালস প্রজেক্ট’ । সুইস লিফট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান শিন্ডলার এবং বেলজিয়ামের “সোলভে” কোম্পানী ১০ বছর ব্যাপী ১২৮ মিলিয়ন ডলার খরচ করে এই প্রকল্পে সোলার প্লেন উদ্ভাবনে কাজ করে চলেছে।
২০১০ সালের এপ্রিলে প্রথম সফলভাবে উড্ডয়ন শেষ করার পর তা ধাপে ধাপে এগিয়ে চলেছে। আজ তা প্রথম আন্তর্জাতিক উড্ডয়ন শেষ করল। স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় সুইজারল্যান্ডের “পায়ের্ন” থেকে রওয়ানা দিয়ে বিমানটি ১৩ ঘন্টা উড়ে বেলজিয়ামের ব্রাসেলস বিমান বন্দরে পৌছায়। এটি ছিল তাদের ৫ম সফল পরীক্ষা। ইতিমধ্যেই তা রাতে চলতে এবং এক টানা ২৬ ঘন্টা উড়তে সক্ষম হয়েছে।
তাদের উদ্ভাবিত বিমানঃ-
হালকা কার্বন ফাইবার দিয়ে তৈরী এই বিমানের ওজন মাত্র ১.৬ টন বা ১৬০০ কেজি।
১২, ০০০ সোলার সেল সুর্যের রশ্মি থেকে তৈরী করছে বৈদ্যুতিক শক্তি। প্রায় ১২ বর্গ মিটার যায়গা প্রয়োজন হয়েছে সোলার প্যানেলগুলোর জনে। শক্তি সঞ্চয়ের জন্য রয়েছে ব্যাটারী আর এটী একটি প্রধান সমস্যা কারন ওড়ার জন্য প্রয়োজনিয় শক্তি সঞ্চয় করতে ব্যবহার করতে হচ্ছে ৪০০কেজি ওজনের ব্যাটারী যা বিমানের মোট ওজনের এক তৃতীয়াংশ। ।
যে পরিমান শক্তি উতপন্ন হচ্ছে তা একটি স্কুটার বা মোটর সাইকেলের সমান। ইলেক্ট্রনিক মোটর প্রপেলারকে ঘুরাচ্ছে ওড়ার জন্য।
বিমানের গতিবেগ ৭০কি মি/ ঘন্টা। প্রচলিত যাত্রীবাহী বিমান গুলো এর চেয়ে ১০ গুনের ও বেশী বেগে চলে থাকে, বর্তমান যুগের বিমানের ১ঘন্টার দুরত্ব যেতে এই বিমান সময় নিয়েছে ১৩ ঘন্টা
ডানার দৈর্ঘ ৬৪ মিটার, এয়ারবাস বিমানের সমান। সর্বোচ্চ ২৮,০০০ ফুট উচু দিয়ে উড়তে সক্ষম
বিমানটি মাত্র একজনকে অর্থাৎ বিমানের পাইলটকে বহন করতে সক্ষম।
আরো বড় এবং অধিক যাত্রী বহনক্ষম বিমান তৈরীর পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে প্রকল্পটি। ২০১৩ সালে সোলার বিমান দিয়ে তারা পৃথিবী প্রদক্ষিনের আশা করেন ।
প্রকল্পের প্রতিষ্ঠাতা এবং বিমানের পাইলট আন্দ্রে বোর্শবার্গ বিমানটি চালিয়ে নিয়ে যান। বোর্শবার্গ বলেন “আমরা প্রমান করতে পেরেছি নির্গমন বিহিন সুর্য্য শক্তি দিয়ে বিমান ভ্রমন সম্ভন।
১৯২৭ সালে লিন্ডবার্গ যখন একাকী বিমানে আটলান্টিক অতিক্রম করেছিলেন তা ছিলো সেই সময়ে এক মেইল ফলক।
যদিও আজকার দ্রুতগতির বিমানের সমকক্ষ নয় সোলার বিমান, ভবিষ্যতে তা বিমান ভ্রমনের গ্রহনযোগ্য মাধ্যম হবে এ ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।