একজন মুরং যুবক
অনেকদিন হয়ে গেল বান্দরবান ঘুরতে গিয়ে ছিলাম। ভ্রমন নিয়ে একটা লেখাও দিয়েছিলাম সামুতে। তবে লেখার শেষে - 'চলবে... লেখা থাকায় বান্দরবানের ২য় পর্বের লেখাটা হাজির হয়ে গেল।
প্রথম পর্ব এখানে।
রাতে ঘুমোতে যাবার আগে দুজন মাঝির সাথে কথা পাকা করে রেখেছিলাম, তারা সকালে আমাদের ডেকে নৌকায় নিয়ে যাবে।
সকাল পার হয়ে গেলেও তাদের দেখা পেলাম না। কি আর করা। আবারো নৌকা ঠিক করতে হবে। এই দিনটা থানচিতে রয়ে গেলাম। সাঙ্গু নদীতে নৌকা ভ্রমনের একটা বিষয় আছে, এখানে ইঞ্জিন ও হাতে বাওয়া নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়।
ইঞ্জিনের নৌকা দ্রুত চলে আর হাতে টানা নৌকা ধীরে যায়, তবে শব্দ করে না এবং নৌকা ঠেলার জন্য তেমন একটা নামতে হয় না। ইঞ্জিনের নৌকা, পাথুরে সাঙ্গু নদীতের পানি কম থাকলে বারে বারে পাথরে আটকে যায় এবং তা সবাই মিলে দড়ি দিয়ে টেনে এগুতে হয়। এ ক্ষেত্রে দুই নৌকায় গন্তব্যে পৌছানোর সময় প্রায় এক। একদিকে ইঞ্জিনের নৌকার ভাড়া বেশী এবং বিকট শব্দ করে পরিবেশ দুষন করে আর অন্যদিকে হাতে বাওয়া নৌকার ভাড়া কম ও ইকো ফ্রেন্ডলী। তাছাড়া যারা বান্দরবানের প্রকৃতি আরাম করে দেখতে চায় এবং ছবি তুলতে চায়, তাদের জন্য হতে বাওয়া নৌকাই উত্তম।
যেহেতু হাতে বাওয়া নৌকা দেখতে চিকন ও লম্বা তাই একটি নৌকায় মালপত্র দিয়ে চারজন যাত্রী উঠলে আরামে ভ্রমণ করা যায়।
সাঙ্গু অভিযানে আমরা প্রথমে যাবো টিনডু, সেখানে বড়পাথর দেখবো। তারপর রেমাক্রী, সেখানে রেমাক্রী ঝরনা, ব্যাট কেভ (বাদুর গুহা) ও নাফাখুম ঝরনা দেখে চলে যাবো ছোট মদক (মধু) তারপর বড় মদক (মধু) তারপর আন্ধারমানিক। মোট ১০/১২ যে কদিন লাগে। থানচীর পরে মোবাইলের নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবেনা এবং টিনডু ও রেমাত্রীর খাবার হোটেলগুলোর স্টাইল পুরোটাই আদিবাসীদের মত হয়ে যাবে।
কারন, থানচীর পরে আর বাঙালী জনবসতি নেই।
যেহেতু আজ আর রওনা দেওয়া যাবে না তাই থানচি ঘুরে দেখার পরিকল্পনা হলো।
খানচী বান্দরবানের একটি উপজেলা। এখানে একটি সুন্দর বড় হাসপাতাল আছে। বাজারটা বেশ বড়।
বান্দরবানের ভেতরের দিকের বাজার গুলোর একটি বৈশিষ্ট আছে। সবকটি বাজারই পাহাড়ের উপরে। চারিদিকে দোকান আর মাঝখানে চার কোনা মাঠ। মাঠের ভেতর চার চালা টিনের সেড থাকবে, যেখানে প্রতিনিদের কাচাবাজার বসে। চারপাশে খাবার হোটেল, মনোহারি দোকান, চা-পানের দোকান, কামারের দোকন সহ অনেক ধরনের দোকান।
খানচি বাজারের দোকানী এবং মানুষজন বেশ হাস্যউজ্জল। অনেক আদিবাসী ও বাঙালী এখানে। তাদের সাথে আলাপ করতে করতে ঝুলন্ত ব্রিজের দিকে চলে এলাম। ঝুলন্ত ব্রীজ পার হলেই টিএনটি পাড়া। ওটাই এ অঞ্চলের বাঙালী অধিবাসীদের শেষ পাড়া।
থানচির টিএনটি পাড়ায় ঢুকেই আবুলের সাথে দেখা হলো। ওর সাথে আলাপে জানা গেল যে, সে একজন মাঝি। আমি কি করি এবং কি করতে বান্দরবান এসেছি সেটা জানতেই আবুল আমাদের গাইড হওয়ার জন্য রাজি হয়ে গেল। শুরুতেই সে আমাদেরকে মজার কিছু দেখাতে চাইলো। থানচী ঝুলন্ত ব্রীজের নিচে দিয়ে যে ঝিরিটা চলে গেছে সেই ঝিরি ধরে ২০ মিনিট হাটলেই গোল গোল পাথরের আড্ডা দেখা যাবে।
মনে মনে এমন একটা অফারই আমরা খুজছিলাম।
গোলপাথরের উপরে রাহাদ।
টিএনটি পাড়া পার হয়ে পাহাড় বেয়ে আমরা নিচে ঝিরিতে নেমে গেলাম। ঝিরির পা ভেজানো ছপাত ছপাত পানিতে হাটতে হাটতে হঠাৎ কএকটা গোল ধরনের পাথর চোখে পড়লো। এতক্ষনের সবকিছুই রাহাদ তার চলমান ক্যামরায় ধারণ করছিল, এবার তাকে বড় উৎসাহী দেখালো।
দলের অন্য সদস্যদের মধ্যে চন্দন অনেকবার থানচী এসেছে, তার ভাস্য অনুযায়ী এখানে যে এতসুন্দর প্রকৃতি আছে তা তার জানা ছিল না। এভাবে কথা চলতে চলতে আমরা আসল সৌন্দযের সামনে চলে এলাম। ওয়াও.... শত শত পাখর ঝিরির মুখ বন্ধ করে আছে। প্রাকৃতিক ভাবে পাথর গুলো গোলাকার। কোন কোনটা বিরাট আকারের লাড্ডুর মত গোল।
দুপাশে খাড়া পাহাড়। পাহাড়ে সবুজের ছাউনি। দারুন এক প্রকৃতি। বান্দরবান ট্রাকিং এ যাওয়ার আগে এই ঝিরিতে হেটে দারুন একটা প্রাকটিস হয়ে গেল আমাদের। সন্ধ্যার আগে আগে আমরা থানচী বাজারে ফিরে এলাম।
আবুল মাঝি দুটি নৌকা ঠিক করলো। আমরা ছয়জন আর মাঝি চারজন। মাঝিদের মধ্যে আবুল আর মফিজ রান্নায় পারদর্শী। একটানা সাঙ্গু অভিযানের খাবার-দাবার সহ প্রয়োজনীয় সবকিছু ঠিকঠাক করে ঘুমোতে গেলাম। কাল সকালে শুরু হবে জার্নি বাই বোট।
খুব ভোরে মাঝির ডাকে ঘুম ভাঙলো। সবকিছু গোজগাজ করে রওনা হতে সাড়ে আটটা বেজে গেল। ছপাত ছপাত লগি পড়ছে সাঙ্গু নদীর টলটলে পানিতে। এই প্রথম আমার সাঙ্গু নদীতে নৌকা ভ্রমন। দুই নৌকার সবার হতেই ক্যামেরা সোভা পাচ্ছে।
সাবাই মহা আনন্দে বান্দরবানের প্রকৃতি গিলছে। আমিও বাদ যাচ্ছি না।
যাচ্ছি।
নদীমাতৃক বাংলাদেশে আমরা সবাই কমবেশী নদী দেখেছি। তবে সাঙ্গু নদী না দেখলে এই নদী সম্পর্কে ধারনা করা যাবে না।
উচু থেকে একটা নদী কিভাবে ধাপে ধাপে সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসছে সেই দৃশ্য দেখা যাবে এই নদীতে। থানছি থেকে ১ ঘন্টা লগি মেরে আমাদের নৌকা বিশাল এক লেকের মত জায়গায় চলে এলো। এখানে সাঙ্গুর পানির গভিরতা অনেক বেশি, মাঝিরা লগি রেখে দাড় বাওয়া শুরু করল, এই জায়গাটার নাম পদ্ম। পাশের পদ্ম ঝিরি এখানে এসে সাঙ্গু নদীতে মিশেছে, শুনেছি এই পদ্ম ঝিরি ধরেই সাকাহাফ্লং ও তাজিন্দং যাওয়া যায়। পদ্মর আশে পাশে জনবসতি নেই, কিন্তু ঝিরিমুখে একটি ছোট চায়ের দোকান আছে।
নদী পথে চলাচলকারিরা এখানে যাত্রা বিরতি করে চা-বিস্কুট খায়। মাঝিরা বলল টিন্ডুর পথে এই রকম আরও কয়েকটি খাড়ি পড়বে, তাদের ভাষায় এগুলিকে ছং বলে।
প্রকৃতি।
নৌকা চলছে। ছোট ইয়াংরাই পার হয়ে দুপাশের পাহাড়গুলো আরো উচু হয়ে গেল।
বিরামহীন বালিপাথরের উচু পাহাডড়ের মাঝে বয়ে যাওয়া পাহাড়ী নদী, দুপাশে পাহাড়ী ঘন বন, বড় বড় গাছ, পাখির ডাক, বাতাসের শব্দ, কখনও কখনও তক্ষকের তক তক তক তক ফ্যাকু ডাক, নাকে বুনো ফুলের সুবাস, সাথে নৌকা বাওয়ার শব্দ। দারুন এমবিয়েন্স। আমাদের দেশে যে এত সুন্দর দৃশ্য আছে তা না দেখেলে ধারনা করা যাবে না।
দুপুর আড়াইটার দিকে আমাদের নৌকা টিনডু বাজারের ঘাটে থামলো। থানচী বাজরের মতই নদী থেকে বেশ খানিকটা উপরে চার কোনা ছোট বাজার এটা।
একই রকম চারদিকে দোকান ও ঘরবাড়ি, মাঝখানে খালি জায়গা আর চারচালা টিনের সেড। বাজারের পাশের উচু পাহাড়ের মাথায় টিনডু বিডিআর ক্যাম্প। বাজার ঘিরেই লোকালয়। টিনডুতে দুপুরের খাবার খেলাম। এখানে এন্টিনা লাগানো মোবাইল ফোনের ব্যবস্থা আছে।
আড্ডায় আড্ডায় জানতে পেলাম টিনডু ঝিরির খবর। সবাই হই হই করতে করতে ঝিরি দেখতে ছুটলো। টিনডু ঝিরিতে প্রথমেই চোখে পড়লো পরিস্কার টলটলে পানির নহর। বড়-ছোট পাখরের খাজে বেধে বেধে সেই পানি আরো বেপরোয়া দুরন্ত হয়ে উঠছে। সাক্ষাৎ প্রাকৃতিক জাকুজি।
টিনডু ঝিরির শীতল ঝরনায় গা ধুয়ে বিকেলে রওনা হলাম বড় পাথরের উদ্দেশ্যে। টিনডু রাজার নামেই এই এলাকার নাম টিনডু হয়েছে। এক সময় এখানে টিনডু রাজার রাজ্য ছিল, সে এক কাহিনী। সেই কাহিনীর টিনডু রাজ্যের রাজাই হচ্ছে টিনডু পার হয়ে সাঙ্গু নদীতে যে বড় বড় পাথরের রাজ্যে বড় পাথরটি দেখা যায়, সেটা। ওই পাথরটার নাম রাজাপাথর।
রাজা পাথরের অারেক নাম বড়পাথর। এখানে রাজা, রানী, মন্ত্রী, কলস সহ রাজার অনেক কিছুই পাথর হয়ে নদীতে সারিবেধে আছে।
বড়পাথর।
সাঙ্গুর এই পাথুরে স্থানটিকে সবাই মান্য করে। রাজা পাথরকে পুজো করা হয়।
যাতায়াতে অনেকেই এই পাথরে টাকা-পয়সা দান করে। অনেকে আগরবাতি, মোমবাতি জ্বালায়। মাঝি বললো, ভরা বর্ষাতে সব পাথর ডুবে গেলেও রাজাপাথর কখনও ডোবে না। এই পাথরগুলোর জন্যই ছইওয়ালা মানে সেড দেওয়া নৌকা সাঙ্গুর এই অংশে চলাচল করতে পারে না। পানির টানে পাথরে ধাক্কা লেগে নৌকার ছই ভেঙে যায়।
ভর সন্ধ্যায় আমরা বড়পাথর এলাকায় পৌছুলম। অদ্ভুত পাথুরে প্রকৃতি এখানে। শুনসান নিরবতার মধ্যে খুব সাবধানে নৌকা বাইছে মাঝি। নৌকায় শক্ত হয়ে চুপচাপ বসে থাকতে আগে থেকেই বলে দিয়েছে আবুল মাঝি। বড়পাথরের পাশে আসতেই পানির টান শুরু হলো।
নৌকার সামনে থেকে মফিজ মাঝি পানিতে ঝাপিয়ে পড়ে নৌকা টেনে ধরলো। পেছন থেকে আবুল লগি চেপে ধরলো পাথরে। সাধারণত যাত্রীরা বড়পাথরে নেমে যায়, নৌকা পাথরের ঝুকি এলাকা পার হলে আবার নৌকায় ওঠে। যেহেতু আমরা ছবি তুলবো তাই মাঝিরা আমাদের নিয়েই পাথর পার হওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। শুরু হলো সাঝের আলোয় আপ ষ্ট্রিমে বড়পাথর রাফটিং।
প্রায় ২ ঘন্টা ঘাড় শক্ত করে বসে মাঝিদের কসরত দেখতে দেখতে পার হলাম বড়পাথর।
বুনো বার-বি-কিউ।
সন্ধ্যার পর সাঙ্গু নদীতে নৌকা চালানো যায় না। আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিল যে, বড়পাথর পার হয়ে নদীর প্রথম যে বাঁকটি আছে, সেখানে সোনা পাহাড়ের নিচে, পাথরের চরের উপর আমাদের রাতের ক্যাম্প হবে। ডুবে যাওয়া সুয্যের শেষ আভায় আমরা নামলাম সাঙু নদীর পাড়ের দুই পাহাড়ের মাঝে, সাঙ্গু নদীর ধারে এক নির্জন জংলী পরিবেশে।
শীতের সময় এখানে অস্থায়ী চা-বিস্কুটের দোকান বসে, এখনও শীত শুরু হয়নি তাই এলাকাটি সম্পুর্ন জনমানবহীন, মানুষ বলতে আমরা কয়জন আর আমাদের গাইড কাম, কুক কাম, ফুলটাইম মাঝি। শুরু হলো লাকরি জোগাড়, তাবু টানানো, মশাল বানিয়ে জ্বালানো এবং রান্নার কাজ। কাজের ফাকে ধুমিয়ে গল্প আর শুটিং, মাঝরাত পযর্ন্ত চললো। ভিডিও ক্যামেরায় নাইটভিশন চেক করা হলো। শীতের আমেজে, সাঙ্গু নদীর বহমান পানির শ শ শব্দে, আগুনের লাল আলোয়, নির্জন এমন এক পরিবেশে, আমাদের আলোকিত তাবুগুলো দেখতে সেরকম লাগছিল।
ছোট বেলায় এমন অনেক স্বপ্ন দেখেছি। আজ আমার একটা স্বপ্ন পুরন হলো।
ক্যাম্প।
যখন ঘুম ভাঙলো তখন খুব ভোর। তাবু থেকে মাথা বের করে দেখলাম সবাই হাসিখুশি এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করছে।
গতকাল সন্ধ্যায় এই এলাকার যে দৃশ্য দেখেছিলাম, এখন তা পুরোটাই অন্য রুপ নিয়েছে। সাঙ্গু নদীটা এখানে ‘দ’-এর মত বেকে গেছে আর ‘দ’ তৈরী করেছে উচু পাহাড়ের সারি। আর সেই সারিতে আটকে আছে সাদা মেঘ। মেঘের আড়ালে পুরো পাহাড়গুলোই গায়েব হয়ে আছে। মনে হচ্ছে, কোন জাদুকরের পাহাড় গায়েব করা ট্রিক দেখছি।
ওয়াও... সবাই ঝাপিয়ে পড়লাম সাঙ্গুর শীতল পানিতে আর তখনই বুঝলাম পানির তোড় কাকে বলে। নদীর তিন-চার ফুট পানিতে দাড়িয়ে থাকলেই স্রোতে পা ভাসিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। কোন ভাবেই ভারসাম্য রাখা যাচ্ছে না। এমন স্রোতে কোন নৌকা ডুবে গেলে ভয়ংকর দুর্ঘটনা ঘটবে। ক্যাম্প গুটিয়ে, আশপাশ পরিস্কার করে, নাস্তা সেরে রওনা দিতে দিতে ১০টা বেজে গেলো।
এরমধ্যে বেশ কটা নৌকা আমাদের পাশ দিয়ে পার হয়ে গেল। সবাই কৌতুহল নিয়ে আমাদের ক্যাম্প দেখছে। হাত নাড়লে, হাত নেড়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করছে। ফুরফুরে মনে রওনা দিলাম রেমাত্রীর উদ্দেশ্যে।
নৌকা চলছে আকাবাকা সাঙ্গু নদীর পাথুরে বুক চিরে।
সাঙ্গু নদীটা তেমন চওড়া না। ঠাঠা রোদের তাপে বারবি কিউ হয়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের তেমন একটা অসুবিদা হচ্ছে না। আশপাশের দৃশ্যগুলোর মধ্যে গতদিনের থেকে তেমন পার্থক্য নেই। চলারপথে দু চারটা নৌকা এবং দু একটা জুমঘরে দুচারজন মানুষ ছাড়া মনুষ্য প্রজাতি দেখা মিলল না। বলতে গেলে সবাই অধীর আগ্রহে আছি কখন রেমক্রী আসবে।
দুপুর তিনটার দিকে চোখের সামনে ভেসে উঠলো অপুরূপ সুন্দর একটা ঝরনা। আমাদের জাতীয় সংসদভবনের সিড়ির মত ধাপে ধাপে পানি নিচে নেমে আসছে। এলাকাবাসি কয়েকজন তার আশেপশে নিজ নিজ কাজে ব্যাস্ত। সিবলি চেচিয়ে বললো এটা রেমাক্রী ঝরনা।
রেমাক্রী ঝরনায় ওসমান গনী।
ঝরনার মুখে নৌকা ভেড়ানো হলো। রাতে বেশী করে খচুড়ি রান্না করা হয়েছিলো যেন সকালে আর দুপুরের রান্নার ঝামেলা করতে না হয়। আমরা নেমে গেলাম ঝরনায় আর মাঝিরা ডিম ভাজির যোগাড় শুরু করলো।
পোলাপাইন।
রেমাক্রি ঝরনাটা কোন পাহাড় থেকে নিচে আচড়ে পড়ছে না।
একটা পানির স্রোত, আরেকটা পানির স্রোতে সিড়ির মত চার-পাচটি ধাপ ভেঙ্গে মিশে যাচ্ছে। ধাপের স্থানটি বেশ প্রসস্থ। তবে পুরো ঝরনাটাই ভিষন পিচ্ছিল এবং ছোট বড় গর্তে ভর্তি, সাথে আছে পানির পাগলা স্রোত। অনেক কসরত করে ঝরনার মাঝবরাবর গিয়ে পানিতে গা এলিয়ে ক্যামেরায় পোজ দিলাম। সে এক অন্যরকম ফিলিংস।
রেমাক্রী ঝরনার স্রোতের মধ্যে শ্যওলা পাথরে হেটে, এধরনের পরিবেশে হাটার ভাল একটা প্রাকটিস হয়ে গেল। এর মধ্যে চারটা বেজে গেছে, পেট চো চো করছে। খিচুড়ি, ডিমভাজা আর কাচামরিচ আহ্... অমৃত। আমরা যেখানে বসে খাচ্ছি, সেখান থেকে রেমাক্রি বাজার দেখা যায়। তবে হেটে যেতে হলে দুবার সাঙ্গু পার হয়ে প্রায় এক কিলোমিটার হাটতে হবে।
সন্ধ্যার আগে আগে রেমাত্রী বাজারের হেটে হেটেই পৌছে গেলাম। পাহাড়ে ঝুপ করে সন্ধ্যা নেমে যায়।
চলবে............
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।