ইচ্ছে করে হারিয়ে যাই তোমার সীমানায়
বর্তমান সমাজে বিশ্বাস আর নৈতিকতার মান নিয়ে সম্ভবতঃ খুব সহজেই প্রশ্ন তোলা যায়। কারন আমাদের অবস্থান এ দু’টো থেকে ক্রমান্বয়ে নিম্নগামী। সততাকে ধারন করা মানুষের সংখ্যা আজ তাই নগন্য। সত্য তিনটি ঘটনা তুলে ধরলামঃ
ঘটনা একঃ সকালে বের হয়েছি ঢাকা যাব বলে। রিকশাওয়ালা ভাই নিজেই ছয় টাকা চেয়েছে বাস কাউন্টারে যাবে বলে।
নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে বললাম দশ টাকার ভাংতি দেন। বলল আমার কাছে নেই, সামনের মোড় থেকে করে আনি। মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি দিলাম, তার সততা পরীক্ষা করতে। ঘড়ি দেখলাম ৬-৩০ মিঃ। আধঘন্টা পর ঠিক সাতটায় বাস ছেড়ে দিল ঢাকার উদ্দেশ্যে।
ভাইজানের খবর নেই। আমার কাছে সে হেরে গেল মাত্র চার টাকার জন্য। ‘সততা’-রা বাস কাউন্টারের সামনের ড্রেন দিয়ে কোথায় যেন হারিয়ে গেল।
ঘটনা দুইঃ আম্মা বৃদ্ধা হলেও জ্ঞান-বুদ্ধিতে এখনও টনটনে আছেন। বাড়ীর পিছনে কয়েকটি ডাব গাছ আছে।
একজন মাঝারী বয়স্ক ডাবওয়ালা প্রায়ই অনুরোধ করে সেগুলো বিক্রির জন্যে, দু’টো টাকা লাভ করবে বলে। একদিন উনি সম্মতি দিলেন। ডাব কাটা শেষ। এমন সময় ডাব-ভাইজান বললেন, চাচী আমার কাছেতো টাকা বেশী নেই। গরীব মানুষ, বিক্রি করে আপনার ২১০ টাকা দিয়ে যাব।
মানে পরের মূলধনে ব্যবসা আর কি! তবুও উনি সানন্দে রাজী হলেন এবং একসময় উনার মনে হলো- সে যে কেন এল না.........তবে অবশ্যই তা অন্য অর্থে।
ঘটনা তিনঃ গতকাল দুপুরে চৌরাস্তার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। মৌসুমী নতুন লিচু ওঠা দেখে ছোট ছেলেটার কথা মনে পড়লো। ও আবার খুব লিচু পছন্দ করে। লিচুওয়ালাদের সঙ্গে কথা বলে জানলাম ১৪০ থেকে ২২০ টাকার মধ্যে এক’শ লিচুর দাম ওঠা-নামা করছে।
ওদের মাঝে তরুন একজন প্রলুদ্ধ করল আমাকে এই বলে- তার লাল রঙওলা লিচুগুলিই বাজারের সেরা লিচু। দাম ঠিক হলো এক’শ লিচু দুইশত টাকা। বলল গুনে গুনে আগেই আঁটি বাঁধা আছে। বিশ্বাস করলাম এবং একটি পঞ্চাশের আঁটি নিয়ে চললাম। চুপিচুপি আপনাকে বলি, বাড়ী এসে গুনে দেখি ৪১ টা।
মানে এটাই চলছে একটু ভুল করলেই এবং আপনিও সাবধান। লজ্জায় কাউকে বললাম না। খুব খারাপ লাগলো কোথায় চলেছি আমরা। মরীচের গুড়ায় ইটের গুড়া! আমাদের এই অধঃপতন আমাদের রক্ত-বীজে ঢুকে গেছে প্রায় সবক্ষেত্রে। উপরের ঘটনাগুলি উদাহরণ মাত্র।
জাতি হিসেবে আমাদের নৈতিকতার তলানিতে ঠেকতে আর কতদিন লাগবে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।