হতাশা আর দু;খ ব্যাথা যাদের দেখে থমকে দাঁড়ায় আজকে তাদের খুব প্রয়োজন, বিশ্ব এসে দু হাত বাড়ায়।
সপ্তাহ খানেক বেড়ায়ে বাড়ি ফিরলাম ১০ তারিখে। বন্ধু বান্ধবদের সাথে দেখা হতেই বুঝলাম চাপা উত্তেজনা, জানলাম পবিত্র কোরআন বাজেয়াপ্ত করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি পদ্মা খাস্তগীরের বেঞ্চে রিট আবেদন করেছে চান্দমল চোপড়া ও শীতল সিং। আর তার প্রতিবাদে আগামী কাল প্রতিবাদ সমাবেশ আহবান করা হয়েছে কেন্দ্রীয় ঈদগাহে।
পরদিন সেই ঐতিহাসিক ১১ই মে, ১৯৮৫ সাল।
কোরান অবমাননার প্রতিবাদ করতে হাজারো মানুষের ঢল। দল-বয়স নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষ জমা হয়েছে। আমরা যখন পৌঁছলাম, ততক্ষনে মিছিল শুরু হয়ে গেছে ঈদগাহ থেকে শহর অভিমুখে। শহর প্রদক্ষিন করে আবার মিছিল ফিরে আসে ঈদগাহ ময়দান অভিমুখে। ঈদগাহ ময়দানের একপাশে অবস্থিত দোতলা দালানের উপর তলায় অবস্থান নিয়েছিল পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লার নেতৃত্বে।
মিছিলের সম্মুখ ভাগ ঈদগাহ এর কাছে আসতেই পুলিশ গুলি চালায় মিছিলে। গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়ে অসংখ্য মানুষ।
নির্বিচারে গুলি করলেও মিছিল ছত্রভংগ করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় পুলিশ কে। সেদিন যারা গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়েছে, কতক ভাই তাকে নিয়ে রওয়ানা হয়েছে হাসপাতালের দিকে, অন্যরা সে জায়গা পুরন করছে। থানা থেকে আনতে হয় এক্সট্রা ফোর্স।
যাই হোক এক সময় শেষ হয় এই ঠান্ডা মাথার হত্যাযজ্ঞ। হাসপাতাল ভারী হয়ে ওঠে আহতদের আহাজারীতে। বাস ভর্তি করে আহতদের নেয়া হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজে। এই ঘটনায় শহীদ হন ৮ জন যাদের মধ্যে ৫ জনই স্কুল ছাত্র! হাসপাতালে দেখলাম আমাদের পাড়ার এক বড় ভাই কে, গায়ের শার্ট রক্তে ভেজা। দৌড়িয়ে গেলাম তার কাছে।
তবে তিনি আহত হন নি, শহীদ মতিন ভাইকে ধরেছিলেন যখন তিনি গুলি খান, তাই তিনিও রক্তাক্ত। তিনি আমাকে বাড়ি চলে যেতে বললেন। তিনি থেকে গেলেন আহতদের সেবা করার জন্য।
সন্ধ্যায় শহরে কারফিউ জারী করা হয়, কুখ্যাত ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লা রাতের আধারে শহর ছাড়েন।
তখন ছিল সামরিক শাসন।
জনগনের কথা বলার কেউ ছিল না। এরপর গণতান্ত্রিক শাসনে পেরিয়ে গেল কতগুলি বছর, কতগুলি সরকার। সেই ঘাতক মোল্লা প্রমোশন পেয়ে সচিব পর্যন্ত হলেন। সে হত্যাকান্ডের কোন বিচার আজো হলো না। হায় নিয়তি!!
মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, সেই শহীদদের শাহাদাত যেন তিনি কবুল করেন।
আমিন!
এই মোল্লার আরেকটি কান্ড পড়ুন
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।