স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি...দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি যে, আমরা আমাদের স্বপ্নের সমান বড়...
কিছু জিনিস নাকি মানুষ শেয়ার করতে চায়না, যেমন খাদ্য, প্রেমিকা,নিজের আয়ু এরকম কিছু কিন্তু কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছিল সব কিছু নিয়েই মানুষ পাগলা ষাড় এর মত ছুটেছে শেয়ার বাজার এর দিকে।
কিভাবে একটু ব্যাখ্যা দেয়া যেতে পারে, প্রেমিকার নামে বিও হিসাব খুলে শেয়ার কেনা/বেচা এখন পানিভাত এর মত, তাই এখন যার যত প্রেমিকা তার তত বিও হিসাব।
সারাদিন ষ্টক মার্কেটে থাকতে হয় বলে খাবার সাথেই থাকে এবং তা আশেপাশের অনেকের সাথেই শেয়ার করা হয়, আর যখন দাম কমে যেতে শুরু করে তখন রাস্তায় নেমে গাড়ী ভাংচুর করতে হয়, এই জন্য পুলিশের পিটুনি খেতে হয়, এতে আয়ু কিছুটা কমে। মোট কথা হিসাব টাই বদলে দিয়েছে শেয়ার বাজার।
মানুষ হুজুগে মাতে এটা নতুন কিছু নয়, কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের হুজুগ মনে হয় একটু বেশী বেশী।
কয়েকটি উদাহারন দেয়া যেতে পারে,
২০০৫ এ যখন টেলিটক নামের একটি সিম আকারের বস্তু বাজারে আসবে আসবে করছে তখন এটা হয়ে গেল একটা মহার্ঘ বস্তু। দিন নাই রাত নাই কাথা বালিশ নিয়ে মানুষ লাইন দিয়ে পড়ে থেকে একটি সিম যোগাড় করলো, কিন্তু তারপর কিছুদিন এর মধ্যে সবাই ছুড়ে ফেলে দিল আমাদের রাষ্ট্রীয় তেলেস্মাতি সিম কে। আর এখন আমরা ভালবাসাও ধার করে আনছি অন্য দেশ থেকে।
ক্রিকেট বিশ্বকাপ এর টিকিট নিয়েও বিসিবি আরেকটি হুজুগ দেখাল...এটা নিয়ে
আর কিছু নাই বা বললাম।
শেয়ার বাজার এর হুজুগ টা এখন এত বেশি যে কোন মানুষ আর এই বাজার এর বাইরে নেই!! বুঝুক আর নাই বুঝুক সবাই এখন শেয়ার বাজার এর বিনিয়োগকারী।
অনেকে আবার ফেসবুক এ লিখেও রেখেছে তার পেশা শেয়ার বিজনেস। গ্রামীণ এর শেয়ার আসার পর সবার লোভ এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে তিন লাখ বিনিয়োগ কারী থেকে এখন চল্লিশ লাখ বিনিয়োগকারী বর্তমান শেয়ার বাজারে। যাদের বিরাট এক অংশ আবার লেখাপড়াও জানেন না!!
দশ টাকা দামের একটি শেয়ার ৬০০ টাকা পর্যন্ত যায় এমন রেকর্ড আছে ভূড়ি ভুড়ি, অনেক কোম্পানী বন্ধ বছর এর পর বছর, তবুও বেড়েছে তার শেয়ার এর দাম। দাম বাড়লে তো কেউ রাস্তায় মিষ্টি বিতরন করেনা কমলে গাড়ী ভাংচুর...??
গাড়ী ভাংচুর এখন আমাদের সংস্কৃতির একটি অংশ
অতি মুল্যায়িত বাজার এ শেয়ার কেনাই যেখানে ঝুকিপুর্ন সেখানে দাম না কমার গ্যারান্টি দিতে হয় এটা কোন ব্যবসা হতে পারেনা...আর আমাদের দেশের যে কোন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঘুম থেকে জাগে ঘটনা ঘটার বছর দশেক পর,বাস্তব উদাহারণ নোবেল বিজয়ী ড.মুহম্মদ ইউনুস। তার পেছনে সরকার এমন ভাবে লেগেছে মনে হয় এটাই এখন দেশের সবচেয়ে দরকারী কাজ।
আশায় আশায় থাকুন ২০১১ সালের শেয়ার কেলেংকারীর বিচার হবে ৯৬ সালের টা শেষ হলেই। ৯৬ টা কবে শেষ হবে তা বলা যাচ্ছেনা।
অনেক্ষন ধরে প্যাচাল পারছি একটা গল্প বলে নেই...
“মৃত্যূর পর দুই লোক কথা বলছে কে কিভাবে মারা গেল এই নিয়ে।
১ম জন বলল, একদিন আমি দুপুর বেলায় অসময়ে বাসায় এসে দেখি আমার বেডরুম এর দরজা আটকানো,আমার মনে হল আমার বউ অন্য কারুর সাথে প্রেম করছে। দ্রুত দরজা খুলতে বললাম, ভেতরে গিয়ে দেখি কেউ নাই।
বউ কে অবিশ্বাস করায় মনটা খুব খারাপ হল, সাথে সাথেই আমি হার্ট এ্যাটাক করে দুম করে মরে গেলাম। তা তুমি কিভাবে মরেছ ?
২য়ঃ
জন বলল, আমি ঠান্ডায় মরে জমে মরে গেছি।
১মঃ এই কাঠফাটা গরমে ঠান্ডা !!! বুঝলাম না।
২য়ঃ আরে গাধা সেদিন তুমি যদি তোমার বেড রুম এর ডীপ ফ্রিজ টা খুজে দেখতে তাহলে তুমিও মরনা...আমিও মরিনা। তোমার ভয়ে আমি ফ্রিজে গিয়ে লুকালাম,তুমি গেলে মরে আমি আর বের হতে পারলাম না।
ঠান্ডায় জমে মরে গেলাম।
না বুঝে আমরা যদি হার্ট এ্যাটাক করতে চাই তাহলে আমাদের কেউ বাঁচাবেনা। গত কিছুদিনে শেয়ার বাজ়ারে যা হল তাতে অনেকেই সব হারিয়েছে আর কেউ হয়েছে কোটি টাকার মালিক। হয়ত এই টাকা দিয়ে তিনি খুলে বসবেন কোন পত্রিকা/ব্লগ/ওয়েব যেখানে এই আমরাই লেখা দিয়ে ওই কোম্পানীর আর তার মালিকের গূণগান করব, যেখানে মিশে থাকবে অনেক মানুষের দীর্ঘশ্বাস। কিন্তু এখানে কি শুধু ষ্টক এর দোষ না আমাদের অতি মাত্রায় লোভও এর জন্য দায়ী ??
মোট কথা আমাদের জ়ীবন টাই শেয়ারময় হয়ে গিয়েছে...একটা সময় অংক পারুক আর নাই পারুক সবাই কম্পিউটার সায়েন্স পড়বে না পড়লে মান ইজ্জত আর থাকেনা।
আর এখন কেউ যদি বলে সে শেয়ার ব্যাবসা করেনা তার ইজ্জত ফাতা ফাতা করে দেয়ার লোক এর অভাব হয় না।
সর্বশেষ এটা বলা যায় আমরা আমাদের আনন্দ গুলো শেয়ার করি দুঃখ নয়, নিজেদের আখের গোছানোর জন্য অন্য কে পথের ফকির করা থেকে বিরত থাকি...সৃষ্টিকর্তা আছেন তিনি তো একদিন সব কাজের হিসাব নিবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।