আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসলামে শ্রমের মর্যাদা ও শ্রমিকের অধিকার

বলুনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। [১৭:৮১-পবিত্র কুরআন]
ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম মানবতার ধর্ম। শোষিত, অধিকার বঞ্চিত মানুষকে অধিকার দেয়ার জন্য ইসলাম।

ইসলামে ধনী দরিদ্র, উচু নিচু, জাত পাতের ভেদাভেদ নেই। ইসলাম শ্রেণী বৈষম্য সমর্থন করে না। ইসলামের দৃষ্টিতে সকল মানুষ সমান। ইসলাম এক পরিপূর্ণ জীবণব্যবস্থা। ইসলামে কোন হালাল শ্রমই অমর্যাদাকর নয়, বরং মর্যাদার বিষয়।

ইসলামই একমাত্র শ্রমিকের স্বার্থ পরিপূর্ণভাবে সংরক্ষণ করেছে এবং তাদেরকে যথাযথ মর্যাদা দিয়েছে। ইবনে মাজাহতে উল্লেখ আছে -"রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, তোমরা শ্রমিককে তার ঘাম শুকানোর আগেই পারিশ্রমিক দিয়ে দাও। " ইসলাম সবসময়ই মানুষকে হালাল শ্রমের প্রতি উৎসাহিত করেছে, যেমন পবিত্র কুরআনে উল্লেখ আছে "অতঃপর সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহ্‌কে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। " [৬২:১০-পবিত্র কুরআন] কুরআনে আরো উল্লেখ আছে "নিশ্চয় আমি মানুষকে শ্রমনির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি। " [৯০:৪-পবিত্র কুরআন], একইভাবে শ্রমিকের সম্মান ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলাম দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন - "মহান আল্লাহ বলেন, ক্বিয়ামতের দিন আমি তিন ব্যক্তির প্রতিপক্ষ হব। যে আমার নামে কোন চুক্তি করে তা বাতিল করেছে। যে ব্যক্তি কোন স্বাধীন মানুষকে বিক্রি করেছে এবং যে শ্রমিকের দ্বারা পুরোপুরি কাজ আদায় করে নিয়েছে, কিন্তু তার পারিশ্রমিক প্রদান করেনি। " [হাদীস নং ১৩২০ - বুখারী শরীফ] বর্তমান সমাজব্যবস্থায় শ্রমের মর্যাদা নির্ধারিত হয় অর্থের মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু ইসলামে কোন বৈধ শ্রমই অমর্যাদাকর নয়।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবনই যথার্থ উদাহরণ। তিনি বলেছেন- "আল্লাহ দুনিয়াতে এমন কোন নবী পাঠাননি যিনি ছাগল ও ভেড়া চরাননি। তখন সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন, হে রাসূল (সাঃ) আপনিও? রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, হ্যাঁ! আমিও কয়েক কীরাতের বিনিময়ে মক্কাবাসীদের ছাগল ও ভেড়া চরাতাম। " [হাদীস নং ১৩৪০ - বুখারী শরীফ] ইসলাম মানুষকে মর্যাদা প্রদান করে ন্যায়নীতি ও তার কার্যক্রমের ভিত্তিতে। ইসলামী সমাজ ব্যবস্থায় একজন শ্রমিকও দেশের সরকার প্রধান হতে পারেন।

হজরত আবু হোরায়রা (রাঃ) এর প্রকৃত উদাহরণ। তিনি মদিনার গভর্নর হয়েছিলেন। ইসলাম মালিককে ধৈর্য্যশীল হতে শিক্ষা দেয় এবং শ্রমিকের দোষত্রুটি ক্ষমা করে দিতে উৎসাহিত করে। শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার হাজার বছরেরও বেশী সময় পূর্বে ইসলাম শ্রমিকদের মর্যাদা দিয়েছে। তাই কোন ভ্রান্ত মতবাদের অনুসরণ না করে আমরা যদি শুধুমাত্র ইসলামী অর্থ ব্যবস্থা ও শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করি তবেই শ্রমের মর্যাদা ও শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।