শুক্রবার বিকাল ৪টা ২৬ মিনিটে রেশমাকে নিরাপদে বের করে আনার পরপরই বিবিসি, সিএনএন, রয়টার্স, টেলিগ্রাফ, গার্ডিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সব গণমাধ্যমের প্রধান শিরোনাম হয়ে ওঠে ধ্বংসস্তূপের নিচে বাংলাদেশি এই তরুণীর টিকে থাকার সংগ্রাম।
‘ঢাকা বিল্ডিং কোলাপ্স: উইম্যান পুলড অ্যালাইভ ফ্রম ঢাকা রাবল’ শিরোনামে রেশমাকে উদ্ধারে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, “বাংলাদেশের রাজধানীর কাছে একটি আট তলা ভবন ধসে পড়ার ১৭ দিন পর ধ্বংসস্তুপ থেকে এক নারীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ”
উদ্ধারকর্মীদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, রানা প্লাজা নামের ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় আটকা পড়া মেয়েটি ‘আমাকে বাঁচান’ বলে চিৎকার করার সময় তাদের নজরে আসে। তাকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।
‘উইম্যান রেকিউসড আফটার ১৭ ডেজ ইন বাংলাদেশ রাবল’ শিরোনামে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে কারখানা ভবন ধসের সপ্তদশ দিন শুক্রবার উদ্ধারকর্মীরা এক নারীকে জীবিত উদ্ধার করেছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে সহস্রাধিক মৃতদেহ উদ্ধারের পর এ ধরনের জীবিত মানুষ দেখে অবাক হয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।
“ধসে পড়া ভবনের নিচের অংশে কান্না জড়িত কণ্ঠে ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ চিৎকার শোনার পর উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তাকে বের করে আনেন। রেশমা নামের ওই তরণীকে দেখে শত শত উদ্ধারকর্মী আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়েন। ”
উদ্ধারের পর রেশমার বর্ণনা দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, “ক্লান্ত, শ্রান্ত মেয়েটি শারীরিক দুর্বলতার কারণে আর হাটতে পারছিলেন না।
স্ট্রেচারে করে নিয়ে আসার পর অ্যাম্বুলেন্সে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ”
সিএনএনের শিরোনাম হয়েছে রেশমার উদ্ধৃতি দিয়ে-‘আই অ্যাম অ্যালাইভ বাংলাদেশ সারভাইভর সেইস প্লিজ রেস্কিউ মি’
তাদের খবরে বলা হয়, “শুক্রবার উদ্ধার অভিযান যখন চলছিল তখন তারা একজন জীবিত মানুষের সন্ধান পায়। ধ্বংসস্তূপ খননের পর উদ্ধারকর্মীরা ওই জীবিত ব্যক্তির বাঁচার আকুতি শুনতে পান।
উদ্ধার অভিযানে থাকা সেনা কর্মকর্তা ইব্রাহিম ইসলামের বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, “মেয়েটি বলছিল-আমি জীবিত আছি, আমাকে উদ্ধার করুন। ”
বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, বাংলাদেশে উদ্ধারকর্মীরা একটি ধসে পড়া গার্মেন্ট কমপ্লেক্স থেকে এক জীবিত ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে।
২৪ এপ্রিল ধসে পড়া ওই ভবন থেকে এতোদিন ধরে সহস্রাধিক লাশ উদ্ধার করা হয়।
একজন উদ্ধারকর্মীর বরাত দিয়ে এএফপি জানায়, “উদ্ধার হওয়া ওই নারী ধসে পড়া ভবনের একটি বিম ও কলামের মাঝামাঝিতে আটকা পড়েছিলেন। রেশমা নামের ওই মেয়েটি পানি খেয়ে বেঁচে ছিলেন। ”
‘বাংলাদেশে ভবন ধসে সহস্রাধিক মানুষ মারা যাওয়ার পর ধ্বংসস্তূপ থেকে প্রায় ১৭ দিন পর এক নারীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে’ -শিরোনাম দিয়েছে ব্রিটিশ পত্রিকা মেইল অনলাইন।
ব্রিটেনের গার্ডিয়ানের শিরোনাম হয়েছে- ‘উইম্যান ফাউন্ড অ্যালাইভ ইন রাবল অব বাংলাদেশ ফ্যাক্টরি সেভেনটিন ডেইজ আফটার কোলাপ্স’
“রেশমা বেগম নামের ওই মেয়েটি বেঁচেছিল তার সঙ্গে থাকা কিছু বিস্কুট খেয়ে, ধ্বংসস্তূপের ভিতরে একটি পাইপের মাধ্যমে তিনি শ্বাস-প্রশ্বাস চালান,” বলা হয় তাদের প্রতিবেদনে।
আল জাজিরার শিরোনাম হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ফাইন্ডস বিল্ডিং কোলাপ্স সারভাইভর’। উপশিরোনামে বলা হয়, ঢাকার ভবনধসে এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর ঘটনার ১৭ দিন পর ধ্বংসস্তূপ থেকে এক নারী পোশাককর্মীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
`মিরাকল সাইভাইভর’ ফাউন্ড ইন ঢাকা ফ্যাক্টরি-শিরোনামে টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ভবন ধসের ১৭ দিন পর অলৌকিকভাবে জীবিত উদ্ধার হলেন এক নারী।
“উদ্ধারকর্মীরা কাজের শেষ পর্যায়ে এসে কংক্রিট সরানোর কাজও যখন শেষ করার কথা ভাবছিল সে রকম একটি সময় তার এ রকম অভূতপূর্ব বেঁচে থাকার বিষয়টি নজরে আসে। ”
এ ছাড়া নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, হাফিংটন পোস্ট, সিনহুয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা ও পত্রিকার ওয়েবসাইটে ১৯ বছরের তরুণী রেশমার জীবন জয়ের খবর উঠে এসেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।