আরাফাত হোসেন শিশির\জামালপুর এলজিইডির ১০ কোটি টাকার টেণ্ডারে অংশ নিতে না পারায় জেলার ঠিকাদার মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিক্ষুব্ধ ঠিকাদাররা পুনঃ দরপত্র আহ্বানের দাবি জানিয়ে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট আবেদন করেও কোন প্রতিকার পায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
জামালপুর এলজিইডির তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের অভিযোগ, সেকেণ্ড রুরাল ইনফ্রাষ্ট্রাকচার ইমপ্র“ভমেন্ট প্রজেক্ট (রিপ-২) এর আওতায় সরিষাবাড়ি উপজেলার জন্য ৪টি গ্রাডার ব্রিজের টেণ্ডার আহবান করে এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী। প্রায় ১০ কোটি টাকার ওই টেণ্ডারের সিডিউল বিক্রীর শেষ সময় ছিলো গত ১৮ এপ্রিল। এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলী একটি প্রভাবশালী ঠিকাদার মহলের যোগ সাজসে গোপনে শুধুমাত্র জেলা অফিস থেকে সিডিউল বিক্রী করে।
জামালপুর এলজিইডির ৩৯/২০১০-২০১১ নম্বরের ওই টেণ্ডারের নোটিশে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও এলজিইডির উপজেলা অফিসে সিডিউল বিতরণ ও বিক্রীর কথা উল্লেখ থাকলেও উক্ত অফিসগুলোতে সিডিউল পাঠানো হয়নি। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সিডিউল ক্রয় করতে গিয়ে অনেক ঠিকাদার ফেরত যায়। এলজিইডির কার্যালয় থেকে সিডিউল ক্রয় করতে গেলে প্রভাবশালী এক ঠিকাদার ও এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী মীর্জা তাহেরুল ইসলাম ঠিকাদারদের সিডিউল না দিয়ে তাদের কাছ থেকে সিডিউলের টাকা রেখে বিদায় করে দেয়। আইনের ৪৪ ধারামতে পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবাকার্য ও ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে ৪০ ধারা এর অধীন বিজ্ঞাপন প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ক্রয়কারী তৎকর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে ও আগ্রহী সকল দরপত্র দাতার নিকট দরপত্র দলিল বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও এলজিইডি মোটা অঙ্কের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
অন্যদিকে আগ্রহী ঠিকাদারগনের উক্ত কাজে অংশ গ্রহণের যোগ্যতা থাকা সত্বেও দরপত্র দলিল কিনতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
১৯ এপ্রিল ছিলো বিতর্কিত ওই টেণ্ডার দাখিলের শেষ দিন। বিক্ষুব্ধ ঠিকাদাররা এ ব্যাপারে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে সিডিউল বিক্রীর অনিয়মের কারন জানতে চাইলে তিনি উল্টো তাদের সাথে অসদাচারণ করেন। এ ঘটনায় জামালপুর এলজিইডির ঠিকাদার মহলে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। জামালপুর এলজিইডির তালিকাভুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসএস ট্রেডার্স, মেসার্স তুর্ষা এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স ঊষা ইঞ্জিনিয়ারিং কোং ও মেসার্স মুক্তি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ১৯ এপ্রিল উক্ত প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছে।
প্রকল্প পরিচালক ও এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী অভিযোগকারীদের হস্তগত হওয়ার পরও বিধি মোতাবেক কোন ব্যবস্থা করা হয়নি।
নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঠিকাদারদের অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা ও কমচারীর যোগসাজসে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট টেণ্ডারে মোট ২৩টি সিডিউল বিক্রী হয়েছে। তবে কাউকে সিডিউল ক্রয় করতে বাঁধা দেওয়া হয়েছে এ অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
অভিযোগ রয়েছে যে, জামালপুর এলজিইডি’র সহকারী প্রকৌশলী মির্জা তাহের উক্ত প্যাকেজটি নিজেই বাস্তবায়নের জন্য চিহ্নিত ঠিকাদারদের নিকট তার অফিস থেকে দরপত্র বিক্রি করেছে। সরিষাবাড়ী এবং মাদারগঞ্জ উপজেলা অফিস হতে সিডিউল বিক্রি হয়নি।
সরিষাবাড়ী উপজেলা অফিসে ও জেলা অফিস থেকে ক্রয়কৃত ৮টি সিডিউল ড্রপ করা হয়। #
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।