আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভার্সিটি জীবনের প্রথম এডভেঞ্চার (২০০৮)



ছোটকাল থেকে উচ্চতা ভীতি থাকলেও পাহাড়ের প্রতি সবসময় কেমন যেন একটা আকর্ষণ অনুভব করতাম। তার সাথে বন জঙ্গল হলে তো আর কথাই নাই। কপাল গুনে অনার্সে ভর্তি ও হলাম পরিবেশ বিজ্ঞানে। আমারে আর পায় কে?? ভার্সিটিতে আসার পর শুনলাম ভার্সিটির উত্তর-পশ্চিম কোণায় রব হলের পিছনে নাকি ১টা ঝরণা আছে। তো একদিন সবাই মিলে গেলাম সেটা দেখতে।

দেখার পর যা বুঝলাম তা হল ১টা পাহাড়ি ছড়া একটু উচু জায়গা থেকে নিচে পরছে। যাক তারপরও কিছু ঝাপাঝাপি করল সবাই সেখানে, কিন্তু আমি এত অল্পে সন্তুষ্ট হতে পারলাম না। পানি যেদিক থেকে আসতেছিল ওইদিকে ১টু গিয়ে উঁকি মারলাম। । পাইসি আমার মনের মত জায়গা।

অই দিনই যাইতে চাইছিলাম কিন্তু পোলাপাইন এর জালায় আর পারলাম। এর পর ১দিন দিনক্ষণ ঠিক করে কয়েকজন মিলে রওনা দিলাম। যত সামনে যাই ততো মুগ্ধ হই। চারপাশে পাহাড়, কিছু জমি, বাশবন, আর ছড়া। কোন জন মানব নাই।

মজাই মজা। আমরা পানির স্রোত ধরে যেদিক থেকে পানি আসছিল ওইদিকে যাচ্ছিলাম। মাঝে মধ্যে দেখা গেল যে পানি দুই দিক থেকে আসে, কি করি ? হঠাৎ ভাবলাম যেইদিকের পানি ঠান্ডা ঐদিকে যাই। তো এইভাবে আগাতে থাকলাম। শেষে দেখি ১ টা সুরঙ্গের মত জায়গায় এসে হাজির।

ঠান্ডা, গা ছমছম করা জায়গা। যাক অনেক সাহস জোগাড় করে গেলাম সামনে। ১টু এগোনোর পর দেখি পানির গভীরতা বাড়তে থাকলো। তারপরও সামনে এগোতে থাকলাম, যা আছে কপালে। খাড়া ১টা জায়গা দেখলাম সামনে।

তোমারেই তো আমি খুজতেছিলাম। যাই হোক অনেক কষরত করে ওটাও পার হলাম। পোলাপাইন এর excitement তখন তুঙ্গে। কিন্তু আর ১টু সামনে গিয়েই কেমন যেন দুমড়ে পড়ি। সামনে আমার প্রায় দ্বিগুণ উচ্চতার ১টা জায়গা,খাড়া।

ওটার নিচে পানি। জানিনা সাতার। সামনে কেম্নে আগাই? ওইবারের মত ওখান থেকে ফেরত আসতে হয়েছিল। এর পরেরবার আরো প্রস্তুতি নিয়ে যাই। দড়ি, দা আর সাতার জানে এমন পোলাপাইন।

তখন উপরে ওঠার সময় আরেক ঝামেলা। পানি কোমর সমান কিন্তু উপরে উঠবো কিভাবে? ধরার মত যে কিছু নাই। শেষ পর্যন্ত নিজের লম্বা দুইখান পা দিয়া কোনরকম এ উপরে উঠি, আর বাকিদেরকে দড়ি দিয়ে টেনে উপরে তুলি। কিন্তু এর সামনে ১0 মিনিট যাবার পর দেখি পাহাড় দুইদিক থেকে এসে রাস্তা বন্ধ করে দিসে। আর এগোন গেল না।

দ্বিতীয় বারের মত আবার ফেরত আসলাম ওখান থেকে। তৃতীয় বার যখন যাই তখন ওই যায়গাটা থেকে পাহাড়ের উপের ওঠার ১টা রাস্তা খুজে বের করেছিলাম আমরা। পাহাড়ের উপর উঠে দেখি সীতাকুন্ড বন বিভাগের ১টা সাইনবোর্ড। এইবার সাথে ক্যামেরা ছিল না। কপাল খারাপ আরকি।

জায়গাটা থেকে আশেপাশের প্রতিটা পাহাড় দেখা যাচ্ছে। অন্যরকম ১টা অনুভুতি কাজ করছিল তখন সবার মধ্যে। যাই হোক আমরা দক্ষিণ দিকে না গিয়ে পাহাড়ের উত্তর পাশের ট্রেইল ধরে নামতে থাকি। নামতে নামতে দেখি সেই সুরঙ্গের মত জায়গাটার কাছাকাছি ছড়াতে এসে পড়েছি। তখন ভাবলাম দক্ষিণ দিকের ট্রেইলটা ধরে মনে হয় সীতাকুন্ড গিয়ে পৌছানো যেত।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.