* আমি খুজে বেড়াই নিজেকে *
এ বছর জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে আরও ২ হাজার মেগাওয়াট
বিদ্যুৎ খাতে আশার আলো উঁকি দিচ্ছে। গরমের তীব্রতা বেড়েছে। বেড়েছে লোডশেডিং। তবে তা গত বছরের মতো অসহনীয় পর্যায়ে যায়নি। কারণ এরই মধ্যে নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট।
আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে আরও ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হবে। আর চলতি বছরের শেষ দিকে অর্থাৎ ডিসেম্বরে নতুন আরও ১ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন বাড়বে। ফলে বলা যায়, লোডশেডিংয়ের উৎপাত কমে যাবে অনেকটাই। সরকার আগেই ঘোষণা দিয়েছে, ২০১৩ সালে লোডশেডিংমুক্ত হবে বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন, বিদ্যুৎ খাত নিয়ে সরকারের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই।
বাস্তবায়ন কাজ ধীর হলেও বর্তমান সরকারের শেষদিকে বিদ্যুৎ সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে। সরকারের ঘোষণামতে, আগামী ২০১৩ সালে চাহিদা পূরণের পরও বিদ্যুৎ কিছুটা উদ্বৃত্ত থাকবে।
সরকারি হিসাবে, ২০১৫ সাল নাগাদ ভর্তুকির পরিমাণ বছরে দাঁড়াবে ৮ হাজার কোটি টাকা; কিন্তু বেশিদিন এ ভর্তুকির বোঝা টানা সরকারের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য যা যা করা প্রয়োজন বর্তমান সরকার তার সবই করবে। বিদ্যুৎ পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতির জন্য সরকার ঝুঁকি নিয়ে বিশেষ আইন করেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, নানামুখী পদক্ষেপের ফলে বর্তমান সরকারের আমলে গত দু'বছরে গ্রিডে নতুন বিদ্যুৎ যুক্ত হয়েছে ১ হাজার ৪০৩ মেগাওয়াট। তারপরও ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতি কমে যাবে তাড়াতাড়ি। আগামী বছর গরম মৌসুমে লোডশেডিং অনেকটাই কেটে যাবে।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, বর্তমান সরকারের মেয়াদে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়বে ৬ হাজার মেগাওয়াট।
এ লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে স্বল্প ও মধ্যম মেয়াদে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে রেন্টাল (ভাড়াভিত্তিক), কুইক রেন্টাল, ক্ষুদ্র আইপিপি (বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র), বড় আইপিপি, পিকিং পাওয়ার প্লান্ট (সর্বোচ্চ চাহিদার সময় চালানোর জন্য) এবং সরকারি খাতে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র (ল্যান্ড বেইজ প্লান্ট)।
পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী জুনের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে আরও ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হবে। এতে লোডশেডিংয়ের মাত্রা ৩৫ থেকে ১৩ শতাংশে নেমে আসবে। সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে লোডশেডিং আর থাকবে না।
বরং কিছুটা বিদ্যুৎ উদ্বৃত্তই থাকবে।
ষষ্ঠবার্ষিকী পরিকল্পনা : পিডিবির পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে বছরে গড়ে ২ হাজার মেগাওয়াট করে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৬ বছরে মোট ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। গ্যাস সংকটের কারণে ডিজেল, ফার্নেস অয়েল, কয়লা এবং নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে এ বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে চায় সরকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বিগত বিএনপি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কার্যকর করতে তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।
রাতারাতি এ চাহিদা পূরণ করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। তারপরও সরকার যথাসম্ভব স্বল্প সময়ে উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। ফলে সমস্যা সমাধানের পথে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে।
যেসব কেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে : এরই মধ্যে ১ হাজার ৪০৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে। এর বেশিরভাগই এসেছে বেসরকারি খাতের রেন্টাল কেন্দ্র থেকে।
এর মধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ের ৫০, খুলনার ৫৫, ঘোড়াশালের ১৪৫, পাগলার ৫০, ভেড়ামারার ১১০, সিদ্ধিরগঞ্জের ১০০, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৭০ এবং মদনগঞ্জের ১০২ মেগাওয়াট রেন্টাল কেন্দ্র উল্লেখযোগ্য। এছাড়া উৎপাদনে আসা অন্য কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ক্ষুদ্র বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র হবিগঞ্জ ১১, ফেনী ২২, উল্লাপাড়া ১১, মহিপাল ১১, মাওনা ৩৩, বারবকুণ্ড ২২, রূপগঞ্জ ৩৩, জাঙ্গালিয়া ৩৩ রেন্টাল কেন্দ্র, শাহজীবাজার ৮৮, কুমারগাঁও ১০, ভোলা ৩৩, ফেঞ্চুগঞ্জ ৫১, শিকলবাহা ৫৫, আশুগঞ্জ ৫৫ এবং পিকিং কেন্দ্র শিকলবাহা ১৫০ ও সিদ্ধিরগঞ্জ দ্বিতীয় ইউনিট ১০৫ মেগাওয়াটের।
চলতি বছর চালু হবে : সবমিলিয়ে চলতি বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়বে ২ হাজার ২৮৭ মেগাওয়াট। তবে দ্রুত উৎপাদনে আসার জন্য সরকারের বারবার তাগিদ সত্ত্বেও কয়েকটি রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল কেন্দ্র নির্ধারিত সময়ের এক থেকে দু'মাস পর উৎপাদনে আসবে। এসব কেন্দ্রের কাজের অগ্রগতি দেখে পিডিবির কর্মকর্তারাই এমনটি ধারণা করছেন।
মেঘনাঘাট (এইচপিজিএল) ১০০ মেগাওয়াট কেন্দ্রের ২০১১ সালের জুলাইয়ে উৎপাদনে আসার কথা। ৭৮ মেগাওয়াটের ঘোড়াশাল (ম্যাক্স পাওয়ার) কেন্দ্রটির চলতি মাসে উৎপাদনে আসার কথা। কিন্তু এখনও ২৫ শতাংশ কাজ বাকি। ১০০ মেগাওয়াট মেঘনাঘাট (আইইএল) এবং ১১৫ মেগাওয়াট খুলনা (কেপিসিএল) কেন্দ্রের গত মার্চে উৎপাদনে আসার কথা ছিল। ১০০ মেগাওয়াট কেরানীগঞ্জ (পাওয়ার প্যাক) কেন্দ্রের ৫০, ৫৩ মেগাওয়াট আশুগঞ্জ (ইউনাইটেড আশুগঞ্জ পাওয়ার) কেন্দ্রের ৪৩, ৪০ মেগাওয়াট নোয়াপাড়া (খানজাহান আলী) কেন্দ্রের ৩৮ এবং আশুগঞ্জ ৫০ মেগাওয়াট কেন্দ্রের (টিএসকে লেকট্রনিকা ওয়াই) কাজ এখনও ২৩ শতাংশ বাকি রয়েছে আগামী মে মাসে উৎপাদনে আসার কথা চারটি রেন্টাল কেন্দ্রের।
এছাড়া অক্টোবরে উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে ফরিদপুর পিকিং ৫৪ ও গোপালগঞ্জ ১০৯ কেন্দ্রের। দুটি কেন্দ্রের মধ্যে একটির ৭৮ এবং অন্যটির ৫৪ শতাংশ কাজ হয়েছে। এ কারণে কেন্দ্র দুটি সময়মতো উৎপাদনে আসবে বলে পিডিবির কর্মকর্তারা আশা করছেন।
এদিকে, বরিশাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড গত বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি পিডিবির সঙ্গে চুক্তি করে।
২০১৩ সালের মধ্যে যেগুলো চালু হবে :সরকার শুধু রেন্টাল কেন্দ্রের ওপর নির্ভর করছে না।
পিকিং কেন্দ্র বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও সরকার কিছুটা এগিয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে ১২টি পিকিং কেন্দ্রের উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। এগুলোর মোট ক্ষমতা ১ হাজার ৮ মেগাওয়াট। সরকারি খাতের এসব কেন্দ্র হচ্ছে_ দোহাজারী ১০২, হাটহাজারী ৯৮, বেড়া ৭১, দাউদকান্দি ৫২, বাঘাবাড়ী ৫২, গাজীপুর ৫০, সিলেট ১৫০, কাটাখালী ৫০, সান্তাহার ৫০, চাঁদপুর ১৬৩, সিরাজগঞ্জ ১৫০ এবং রাউজান ২০ মেগাওয়াট পিকিং কেন্দ্র। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে বেড়া ও দাউদকান্দি কেন্দ্রের।
এ দুটি কেন্দ্রে নির্মাণকাজের এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়েছে ৬০ এবং ৫৮ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম কাজ হয়েছে সিরাজগঞ্জের কেন্দ্রটির। ওই কেন্দ্রের কাজ হয়েছে মাত্র ১৬ শতাংশ। পিকিং কেন্দ্র ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি খাতের আরও ৩২টি কেন্দ্রের নির্মাণ শেষে ২০১৩ সালের মধ্যে উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। প্রস্তাবিত ও প্রক্রিয়াধীন এসব কেন্দ্রের কোনোটির দরপত্র আহ্বান, দরপত্র আহ্বানের প্রস্তুতি ও মূল্যায়ন চলছে।
আবার কোনোটি পরিকল্পনা পর্যায়ে অথবা কোনোটির এখনও কোনো পর্যায়ে কোনো কাজই শুরু হয়নি। এসব কেন্দ্রের মধ্যে বেশিরভাগ সরকারি খাতের। বৃহৎ কেন্দ্রগুলোর ক্ষেত্রে কাজ তেমন এগোয়নি। ২০১৩ সালের পর আরও কিছু সংখ্যক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কয়লা আমদানিনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রও রয়েছে।
ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসি : ভারতের জাতীয় সংস্থা এনটিপিসি ও বাংলাদেশের পিডিবি যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটের রামপালে একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করবে। এটির উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে ২০১৫ সালের মধ্যে। এ কেন্দ্র থেকে পাওয়া যাবে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এছাড়া চট্টগ্রামে একই ক্ষমতার আরও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগও এগোচ্ছে।
শিল্পায়নের সুযোগ সৃষ্টি হবে : অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের হিসাবে, এখন বিদ্যুৎ সংকটে বছরে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এর সিংহভাগ ক্ষতিই হচ্ছে শিল্প খাতে। বিদ্যুতের অভাবে অনেক শিল্প-কারখানায় উৎপাদন কমে গেছে। বহু নতুন শিল্প সংযোগ পাচ্ছে না। সরকার আশা করছে, দ্রুত শিল্প সংযোগ দেওয়াও সম্ভব হবে।
শিল্পে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান করা গেলে জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৮ থেকে ১০ ভাগে উন্নীত করা সম্ভব বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন।
পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক ও বিশেষজ্ঞ বিডি রহমতউল্লাহ বলেন, দৈনিক ২ হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং ধরে এ খাতের সার্বিক অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ ক্ষতি কমতে থাকবে।
শিল্প খাতের প্রভাব সম্পর্কে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সালাম মুর্শেদী বলেন, বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে বছরে শুধু ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকার তেল কিনতে হয় জেনারেটর চালানোর জন্য। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া গেলে এ বাড়তি ব্যয় কমবে।
এতে শিল্প উৎপাদন খরচও কমবে। একাধিক ব্যবসায়ী-শিল্পপতির সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, তাদের শিল্প কারখানায় অধিক দামেও হলেও তারা চান নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ। এ জন্য বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের নেওয়া নানামুখী উদ্যোগকে তারা ইতিবাচক বলেই মনে করছেন।
সরকারি খাতের বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন পিছিয়ে : সরকারি খাতের বৃহৎ কেন্দ্র বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পিডিবি পিছিয়ে রয়েছে। নানা পরিকল্পনা থাকলেও এখন পর্যন্ত এ খাতে শুধু হরিপুর ৩৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্রটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
গত ২০ মার্চ এটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। তবে পিডিবির চেয়ারম্যান এএসএম আলমগীর কবির সমকালকে বলেন, বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বাস্তবায়ন শুরুর ক্ষেত্রে যে ছোটখাটো সমস্যা ছিল সেগুলো কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা হচ্ছে। পিডিবির পরিল্পনা অনুযায়ী, মোট ৮২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১০টি পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের যে উদ্যোগ নিয়েছিল তার একটি হচ্ছে ঘোড়াশাল ২০০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পিকিং কেন্দ্র। বারবার দরপত্র আহ্বান এবং সিদ্ধান্তহীনতার কারণে এটির বাস্তবায়নও পিছিয়ে পড়ছে। একই অবস্থা সিদ্ধিরগঞ্জের একটি পিকিং কেন্দ্রের।
বিবিয়ানা ও মেঘনাঘাটে প্রতিটি ৩০০ থেকে ৪৫০ মেগাওয়াটের মোট তিনটি কেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়াও এগোচ্ছে না। এ কেন্দ্রগুলো স্থাপনের চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ছিল গত ডিসেম্বরের মধ্যভাগে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা হয়নি। মেঘনাঘাট কেন্দ্রটি হবে দ্বৈত জ্বালানি (ডুয়েল ফুয়েল) ভিত্তিক। এক্ষেত্রে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি ও আনুষঙ্গিক কিছু বিষয় সরকারকে বিশেষভাবে ভাবতে হচ্ছে।
ফলে এ কেন্দ্রগুলো স্থাপনও পিছিয়ে যাচ্ছে। সিরাজগঞ্জে একটি বৃহৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ২০০১ সালের পর থেকে তিনবার দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু প্রতিবারই একজন করে দরদাতা অংশ নেওয়ায় সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। বর্তমানে এ প্রকল্পটির জন্য চতুর্থবারের মতো দরপত্র প্রক্রিয়া চলছে।
বিদ্যুৎ পরিস্থিতি উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিগত জোট সরকারের ব্যর্থতার কারণে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে ২০১১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৫ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার অঙ্গীকার করে।
একইভাবে ২০১৩ সালের মধ্যে উৎপাদন ৭ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০২১ সালে ২০ হাজার মেগাওয়াটে পেঁৗছবে বলে ইশতেহারে বলা হয়। এ লক্ষ্যে সরকার গ্রহণ করে উচ্চাভিলাষী মহাপরিকল্পনা। প্রথমে গত বছরের মধ্যে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া তীব্র বিদ্যুৎ ঘাটতি দূর করে দেশকে লোডশেডিংমুক্ত করার কথা বলা হলেও পরে পিডিবি সে অবস্থান থেকে সরে আসে। এখন বলা হচ্ছে, ২০১৩ সালের মধ্যে দেশে আর লোডশেডিং থাকবে না।
পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ভোগাচ্ছে : পিডিবি নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়ন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর দিকে নজর কম।
শীত মৌসুমের মধ্যে পুরনো কেন্দ্রগুলোর ওভারহোলিং বা প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন না করায় এখন অনেক কেন্দ্রই বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রয়োজনের সময় এসব কেন্দ্র কাজে আসছে না। এছাড়া দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে স্থাপিত রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বেশিরভাগ ইউনিটই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ রয়েছে। সব মিলিয়ে এখন সংস্কার ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ২৪টি ছোট-বড় ইউনিট বন্ধ রয়েছে। এতে গ্রিড ১ হাজার ৩১৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছে না।
এ কারণে এখন লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। তবে পিডিবি বলছে, নতুন কয়েকটি রেন্টাল কেন্দ্র উৎপাদনে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। এ জন্য আরও দু'তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে।
রও দু'তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।