দেশের বিভিন্ন স্থানের ওপর দিয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ও রাতে কালবৈশাখী বয়ে গেছে। ঝড়ে ভোলা ও কুমিল্লার দেবীদ্বারে দুজন মারা গেছেন। বিধ্বস্ত হয়েছে বেশ কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি। সাতক্ষীরায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে শুধু বোরো ধানেরই আট কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
ভোলা: দৌলতখান উপজেলায় ঘরচাপায় এক গৃহিণী মারা গেছেন।
এ ছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় ৫০টি কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে ও ঘর চাপা পড়ে ২০টি গরু মারা গেছে। উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাইনুদ্দিন জানান, ঝড়ে তাঁর ওয়ার্ডে ঘর চাপা পড়ে দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী নূরজাহান (৫৫) মারা গেছেন। এ ছাড়া মো. শাজাহান, রফিকুল ইসলাম ও আবদুর রশিদের তিনটি গরু মারা গেছে। ইউপি চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন বলেন, ঝড়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ব্র্যাক হাউসের ১০টি ঘরের চাল উড়ে গেছে। সব মিলিয়ে ১৫টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।
একই উপজেলার হাজীপুর ইউপির চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, তাঁর ইউনিয়নের পূর্ব হাজীপুর চরের পাঁচটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, সদর উপজেলার শিবপুর, পশ্চিম ইলিশা; তজুমউদ্দিন উপজেলার চর জহিরুদ্দিন; মনপুরা উপজেলার কলাতলীর চরে ৩০টি কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ১৫টি গবাদিপশু ঘর চাপা পড়ে মারা গেছে।
দেবীদ্বার (কুমিল্লা): ঝড়ে বাজেবাখর গ্রামের রোকেয়া বেগম (৫০) গাছের ডালের নিচে চাপা পড়ে মারা যান। তিনি হোসেনপুর বটতলী থেকে নাতির জন্য কেক কিনতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়েন। এ সময় বটগাছের নিচে আশ্রয় নিলে গাছের একটি ডাল ভেঙে তাঁর ওপর পড়ে।
এ ছাড়া ঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কাঁচা ও আধাপাকা ধানসহ ফসল ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সুবিল ইউনিয়নে দুটি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে, ছিঁড়ে গেছে তার। এতে বিদ্যু হীন হয়ে পড়েছে গোটা এলাকা। সাতক্ষীরা: বোরো ধান কাটার শুরুতে ঝড়ে কৃষকের স্বপ্ন লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে শহর ও শহরতলির বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বোরো ধান, পাট, আম, কাঁঠাল, পেঁপে, কলা, পটলসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
শহরের পলাশপোল এলাকার কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছিলেন। ফলনে তাঁর মন খুশিতে ভরে উঠেছিল। দু-তিন দিনের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তুলবেন বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে তাঁর খেতের সব ধানই নষ্ট হয়ে গেছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার রায় জানান, কালবৈশাখী আবারও আঘাত হানতে পারে—এ আশঙ্কায় বোরাচাষিদের ধান কাটার জন্য অযথা দেরি না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরা পৌরসভা এলাকায় তিন হাজার বিঘা জমির বোরো ফসল লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এ ছাড়া লাবসা, আলীপুর নাথপাড়া, আগড়দাঁড়ির একাংশের প্রায় দেড় হাজার বিঘার বোরোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বোরো ধানের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আট কোটি টাকা। অন্যান্য ফসলের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। শিলাবৃষ্টিতে পাটের চারা ভেঙে গেছে।
মংলা (বাগেরহাট): কাঁচা ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে ও ভেঙে পড়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছপালা। টানা ১৪ ঘণ্টা পর গতকাল শুক্রবার দুপুরে শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।