আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মৌসুমী করিডরে

কবিতা লিখি, প্রবন্ধ লিখি, গল্প লিখি, রম্যরচনা লিখি, মানে লেখার চেষ্টা করি আর কী!

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত্রি। কেউ মাত্রাবৃত্তের পাঁচের চালে জিজ্ঞেস করে, “অবনী বাড়ি আছো?”। আমি তো ছোট জলাশয় থেকে শিখছিলাম কীভাবে রাত গলে গলে পড়ে জলের নিশ্বাসে। আমি কী করে বলব কবিতা আগে নাকি কবিটা আগে! আমার ছন্দ শিক্ষায় কৈশোরের “এসেছে শরৎ হিমের পরশ” এই ছ’য়ের চাল যখন উঁকি মারে, আমি বুঝতে পারি অনেক দেরী হয়ে গেছে - দেরী হয়ে গেছে কারও সরল ঠোঁট বেয়ে নেমে আসা শরতের উড়ো চিঠি পড়তে! কেউ বলবে, কেন কাশফুল তো ছিল? তাকে কেন বলোনি তোমার পরিচিত আয়োজনের কথা? পাঠক, পাঠক, তোমার শব্দ আছে ছন্দজ্ঞান নাই। আমার তো “ঘরে” “ভ্রমর” এলেই তা অর্থবহ।

কিন্তু রোদ পড়ে আসা উঠোনে কে যেন আড়াল থেকে বলে যায়, ওরে, আগে ছন্দশিক্ষা কর, তবে না বুঝবি‌ কী অনায়াসে “ঘরেতে ভ্রমর” আসে “গুনগুনিয়ে”। এইসব, হ্যাঁ এইসব পথের বাঁকে আমার দেওয়াল ঘড়ির চোখগুলো ভারী কোমল দেখায়। সে তখন তার সমস্ত বইখাতা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ঝাঁপ দেয় কুয়াশার অস্ফুট পাঁজরে। ঘুম আসে না, আমার ঘুম আসে না। তবু সামান্য পুঁজিপাটা নিয়ে যখন কেঁপে ওঠে চোখের পাতারা, আবার শুনতে পাই, “খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়ালো”...।

আবার সেই মাত্রাবৃত্ত। আবার সেই পাঁচের চাল। উফ্‌, কত যে পাখি এইভাবে চশমার বয়েসের ভিতরে ঢুকে গেল কে জানে! কবিটা বলেছিল, শোনো হে পাঠক, একটা আদিম চিহ্ন, একটা টলটলে গ্লাস আর কিছু আনুগত্য - এগুলো চিলেকোঠায় জমা করলেই দেখবে তোমার পোশাকের রঙ লাল আর তোমার কবিতার ভিটেতে মুঠো খুলে দিচ্ছে সাঁতারের অদেখা মলাট। সেই কবিকে বলা হয়নি, একটা নির্দিষ্ট ব্যথার দিনে আত্মহত্যারও জন্মের দাগ দেখা যায়। সেদিন কবিতার ভিড়ে ধাক্কা খেতে খেতে ফুটপাথে নেমে এসে আমি দেখতে পাই পাখি ওড়ার শব্দে মিশে যাচ্ছে আঁতুড়ঘরের যন্ত্রণা।

এ সময় কতবার ভেবেছি কৃতজ্ঞতাগুলোকে ফিরিয়ে দিয়ে আমি সূর্যাস্তের দিকে চলে যাব। হয় না, যাওয়া হয় না। এখানেও পথ আগলে দাঁড়ায় এক প্রিয় কবির কবিতা, “না উড়ে থেমেছ পাখি, সমস্তটা ওড়ো”। হ্যাঁ, সমস্তটা...

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।