ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ হিসাবে যেকোন ইসলামী চিন্তা চেতনা সমৃদ্ধ দেশ আজ তেমন একটা চোখে পড়ে না। সকল জাতির মৌলবাদ, ধর্মীয় গোড়ামী, অযাচিত সাম্প্রদায়িকতা, ধর্ম ব্যবসা ও রাজনীতির নামে প্রতারণা, যাবতীয় বিষয়ের কারণ বলে অবিহিত। মানুষের জন্যেই ধর্ম, ধর্মের জন্যে মানুষ নয়। তবে ধর্ম নিরপেক্ষ বলতে নানান মত আর পথের অনুসরণ করে থাকেন স্ব স্ব ধর্মের আলেম-ওলামা, ধর্ম পুরহিত, ধর্ম জাজক ও ধর্ম গুরুরা। আমাদের দেশের সনামধন্য খ্যাতনামা অনেক আলেমকে যখন বলতে শুনি যে, ধর্ম নিরপেক্ষ বলতে কেবলী ইসলাম ধর্মকেই বলা হয়েছে, পৃথিবীতে কেবল ইসলাম থাকবে আর কোন অন্য ধর্ম নয়; তখন ভাবতে হয় এমন বয়ান আসলো কোত্থেকে।
যখন বড় বড় ডিগ্রীধারী বক্তাদের ডিগ্রী অনুপাতে প্রধান বক্তা হিসাবে এমন বক্তব্য পাওয়া যায়, তখন ভাবতে হয় প্রকৃত শিক্ষার আলো ছুয়ে যেতে পারেনি সেই সব স্ব ঘোষিত টাইটেলধারী আলেম ওলামাদের অন্তর। অনেক ওলামায়ে কেরামদের বয়ান শেষে মোনাজাত (প্রার্থনা) করতেও শুনেছি ঠিক এইভাবেঃ “হে আল্লাহ্ তুমি ইহুদি খ্রীষ্টিয়ানদের ধ্বংস করে দাও”। জানিনা তারা এমন সাহস পায় কি ভাবে। এক ধর্মের অনুসারী হয়ে অন্য ধর্মের মানুষদের সরাসরী আল্লাহ্ কাছে ধ্বংস কামনা করা দেখে বোঝা যায় তারা উপ কিতাবগুলি বেশী পড়েছে বা সেই কিতাবের চর্চা করে। ইর্ষান্বিত হয়ে এমন প্রার্থনা ইসলাম স্বীকৃত নয় তা কোরআন পড়লেই স্পষ্ট বোঝা যায়।
অবশ্য যাদের অন্তরে আল্লাহ্ শীল মেরে দিয়েছে কিংবা চোখে পর্দা দিয়েছে তারা কোরআনের এইসব আয়াতগুলি চোখে দেখবেন না। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)। তিনি বলতেন: “আদ-দীন আন-নাসীহা”; অর্থ কল্যাণকামনাই ধর্ম। মানবপ্রেম আর দয়ার আদর্শ প্রচার’ই ছিলো তার মূল লক্ষ্য। তিনি কেবলী বলতেন, “শ্রেষ্ঠ মানুষ ওই ব্যক্তি, যে মানুষের কল্যাণ করে।
” আর “প্রকৃত মুসলিম সে-ই, যার হাত ও মুখ থেকে সবাই নিরাপদ”। এবার আসুন কোরআনের সূরা মায়েদার ৬৯ আয়াত দেখি আল্লাহ্ কি বলেন:
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُواْ وَالَّذِينَ هَادُواْ وَالصَّابِؤُونَ وَالنَّصَارَى مَنْ آمَنَ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وعَمِلَ صَالِحًا فَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
অর্থ: নিশ্চয় যারা মুসলমান, যারা ইহুদী, ছাবেয়ী বা খ্রীষ্টান, তাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে আল্লাহর প্রতি, কিয়ামতের প্রতি এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না।
এই আয়াতে বিধাতা ইসলাম ধর্মবাদে অন্য ধর্মালম্বীদের কথাও বলেছে। তাহলে নিরপেক্ষতা কি? আলেমরা জানেন না। এবার দেখি
সূরা বাকারা ২ঃ১৩৬ আয়াত
قُولُواْ آمَنَّا بِاللّهِ وَمَآ أُنزِلَ إِلَيْنَا وَمَا أُنزِلَ إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَقَ وَيَعْقُوبَ وَالأسْبَاطِ وَمَا أُوتِيَ مُوسَى وَعِيسَى وَمَا أُوتِيَ النَّبِيُّونَ مِن رَّبِّهِمْ لاَ نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ
অর্থঃ তোমরা বল, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের প্রতি এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তদীয় বংশধরের প্রতি এবং মূসা, ঈসা, অন্যান্য নবীকে পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা দান করা হয়েছে, তৎসমুদয়ের উপর।
আমরা তাদের মধ্যে পার্থক্য করি না। আমরা তাঁরই আনুগত্যকারী।
এমন অনেক আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় কোন কিছুর পার্থক্য সয়ং আল্লাহ্ও নিজে করেননী। পার্থক্য করেছি আমরা যারা তিনার মহিমা বুঝি না। ------- লিখা চলবে ০৯,০৪,১১
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।