অনেকের বাড়াবাড়ি দেখে লেখাটি না লিখে উপায় ছিলনা। পাকিস্তান ওয়েষ্ট ইন্ডিজের খেলা চলাকালীন অনেক সমর্থকই পাকিস্তানের পতাকা নিয়ে উল্লাস করেছেন। তাই অনেক পত্র-পত্রিকা এবং অনেক বিশেষ ব্যক্তিবর্গ তাদেরকে (পাকিস্তান সমর্থকদের) পাকিস্তানের দালাল এবং রাজাকার বলে সার্টিফিকেট দিয়েছেন।
আমরা অনেকেই বলে থাকি খেলার মাঝে কোন রাজনীতি নেই। এখানে যারা ভাল খেলবে তাদেরকেই মানুষ সাপোর্ট দিবে এটাই স্বাভাবিক হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তা আমাদের দেশেই এর ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয়।
আমাদের দেশে অলিখিত একটি ধারা আছে যারা আবাহনী সাপোর্ট করবে তারা আওয়ামী সমর্থক আর যারা মোহামেডান সমর্থন করবে তারা বিএনপি সাপোর্টার। যারা ভারতের সাপোর্ট করতে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি আর যারা পাকিস্তান সাপোর্ট করবে তারা দেশদ্রোহী রাজাকার। (খেলার ক্ষেত্রে)
আবারো আসছি পাকিস্তান ওয়েষ্ট ইন্ডিজের খেলা নিয়ে। আমার মনে অনেকগুলো প্রশ্ন এসেছিল আবার আমি নিজেই এর সমাধান বের করার চেষ্টা করেছি।
পাঠক আপনারাও একটু মিলিয়ে নিবেন।
একটি দেশের প্রধার হলো ঐ দেশের সরকার। সরকারীভাবে কোন উদ্যোগ নিলে সবকিছুই করা সম্ভব। যেমন আমরা দেখেছি- মুজিব হত্যাকারীদের ফাঁসির মাধ্যমে।
তাহলে ঐ সমর্থকদের দোষ না দিয়ে যদি আমরা বলি আমাদের দেশের সরকারের দোষ সবচেয়ে বেশি।
কিভাবে?
*সরকার যদি বলতো স্বাধীনতার এই মাসে আমাদের দেশে আমাদের শত্রু, যারা আমাদের দেশের লাখো মানুষের উপর অত্যাচার করেছে তাদের খেলা হতে দেবো না। যেমন ইতিমধ্যেই ভারতের শিবসেনারা হুমকি দিয়েছে 'পাকিস্তান যদি আমাদের দেশে ফাইনাল খেলে আমরা যে কোন ভাবেই তাদের প্রতিহত করবো' জানিনা তারা কতটুকু সফল হবে। কিন্তু তাদের প্রতিবাদী স্বরূপ কিন্তু প্রকাশিত হয়েছে সারা বিশ্বর কাছে। আমাদের মাঝে সেরকম কোন ছিটেফোটাও কিন্তু পরিলক্ষিত হয়নি। হয়নি কি জন্যে তাও কিন্তু আমরা জানি।
আমাদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। তাহলে ভাব রক্ষার খাতিরে দর্শকদের এতটুকু অত্যাচার মেনে নিতেই হবে।
*পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আমরা কি দেখলাম- পুরষ্কার দিলেন একটি দেশের অর্থমন্ত্রী। যিনি কিনা স্বয়ং এসবের বিরোধী। তাহলে আমার প্রশ্ন তিনি কেন আজকের খেলায় আসলেন? তিনি কি অন্য কোন খেলায় আসতে পারতেন না?
*অন্যান্য দিনের মতো আজকেও কি ক্রিকেট বোর্ডের কাউকে দিয়ে পুরষ্কার দেয়া যেতো না? অর্থমন্ত্রী যেচে এসে পুরষ্কার নাও দিতে পারতেন।
*সব কিছুই যেহেতু সরকারীভাবে হচ্ছে, সব কিছুতেই যেহেতু সরকারের ইঙ্গিত আছে সেহেতু তাহলে খামোখাই আমরা দর্শকের দোষ দেই কেন? দোষটা কি 'মাথা' দের উপর বর্তায় না?
হায় স্বদেশ প্রেম! সাপোর্টিং এর মাঝেই যারা দেশ প্রেশ খুঁজে বেড়ায়।
ইন্ডিয়া প্রসঙ্গ
যারা ইন্ডিয়ার সাপোর্ট করেন তাদেরকে কি বলব?
*উনারা আমাদের ফেলানীদের মতো মনুষ্য জীব কে মেরে আনন্দ উল্লাস করেন।
*উনারা আমাদের আকাশ সংস্কৃতিকে ডাস্টবিনে ফেলে নিজেরদের উচ্ছিস্টগুলো আমাদের দিকে ঠেলে দিয়ে আমাদের শেকড়ের সংস্কৃতিকে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিয়েছেন।
*উনারা আমাদের প্রতিভাগুলোকে টাকার বিনিময়ে কিনে নিয়ে তাদের গোলামী করতে বাধ্য করছেন।
*উনারা আমাদের দেশে তাদের যত ভেজার জিনিসপত্র আছে তা গিফট্ করে বিনিময়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি ডলার।
*উনারা আমাদের কে এতই ভালবাসনে যে তাদের বিরুদ্ধে কিছু গেলে তারা আমাদের স্বাধীন সার্বভৌমত্বকে পদদলিত করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হুমকি দিতে কুন্ঠাবোধ করেন না।
তাহলে যাদের এতগুলো বৈশিষ্ট, যারা আমাদের রক্ত নিয়ে খেলতে ভালবাসে তাদের সাপোর্ট করলেতো আমরা কাউকে কিছুই বলি না?
হায় স্বাধীনাতা!
হায় স্বদেশ প্রেম!
হায় প্রীতি!
স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও আজ পথের ডাস্টবিনে কুকুর মানুষ একসাথে খাদ্য গ্রহণ করে সেই দেশে এর প্রতিকার না করে সাপোর্ট নিয়ে কলমের কালি আর কাগজ খরচে আমরা কতটাই উদার.....!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।