আল্লাহ আকবার
মুহম্মদ আসাদের বই বা চিন্তা ভাবনা পড়ে ইসলামের প্রতি আমার নেগেটিভ ধারনাগুলি চলে যেতে থাকে। আর সেই শ্রদ্বা থেকে আসাদের বইগুলি পড়ার প্রতি আমার আগ্রহ ক্রমবর্ধমান হারে বেড়ে চলেছে। আমি আজকের পোষ্টে উনার লিখা "মক্কার পথে" বই থেকে কয়েকটি প্রসংগ উল্লেখ করব যা পড়ে হয়ত আপনাদেরও ভাল লাগতে পারে। যারা সত্যকে খোলা চোখে দেখতে চান তাদের জন্য আমার এই প্রচেষ্টা।
মুহম্মদ আসাদ প্রথমে ছিলেন চিন্তার দিক দিয়ে নাস্তিক, জন্মের দিক দিয়ে ইহুদি।
ইসলামের প্রতি অবচেতন মনে বিদ্বেষ নিয়েই মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমনে বেরিয়েছিলেন আর সেখানেই সত্য উনার চোখের সামনে প্রকাশ হয়ে পড়ে। আমি তার "মক্কার পথে" বই য়ে ইসলামের যেসব ধ্যানধারনার ব্যাপারে উনার প্রেজুডিস ভেংগে যায় তার কিছুটা তুলে ধরতে চেয়েছি।
এক
সালাত
উনার মনে প্রশ্ন ছিল সালাতে কেন শরীর কে ব্যবহার করা হয়? মানুষ মনে মনে আল্লাহর কাছে প্রাথর্না করাটাই যথেষ্ট নয়?
উনি যে জবাবটা পেলেন তা হল
আল্লাহতো দেহ আর আত্মা একসাথেই সৃষ্টি করেছেন....ইমামের কথার সার বিশেষ..." আমরা কাবার দিকে মুখ করে দাড়াই, মক্কায় অবস্হিত আল্লাহর পবিত্র ঘরের দিকে, এ সত্য উপলব্ধি করে যে দুনিয়ার সকল মুসলমানের মুখ- সে যেখানেই থাকুক না কেন- প্রার্থনায় এই ঘরের দিকেই ফেরানো হয়, আর আমরা সকলে মিলে একটি মাত্র দেহের শামিল এবং আল্লাহ হছ্ছেন আমাদের ধ্যান-ধারনার কেন্দ্র। ..
ইমামের কথাগুলিতেই ইসলামের দরজা খুলে যায় উনার সামনে প্রথমবারেরমত।
দুই
নিয়তি ও আদিপাপ
মুহম্মদ আসাদ যা বুঝলেন ধর্মের বই পড়ে...।
ধর্মকে সাধারন অর্থে লোকে যা বুঝে ইসলাম সেরকম কিছু নয়-বরং এ যেনো এক জীবন-ব্যবস্হা, শাস্ত্রবিধি এ যতোটুকু নয় তার চাইতে অনেক অনেক বেশী গুণে, এ হছ্ছে ব্যাক্তিগত ও সামাজিক আচরণের একটি কর্মসূচী, যার ভিক্তি আল্লাহর উপলব্ধির উপর প্রতিষ্ঠিত। কোরআনে কোথাও আমি কোনো উল্লেখ পেলামনা 'পরিত্রাণের' প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে। ব্যক্তি এবং তার নিয়তির মধ্যে কোনো আদি জন্মগত পাপ দাড়িয়ে নেই; ' কারণ মানুষ কিছুই পাবেনা যার জন্য সে চেষ্টা-সাধনা করে তা ছাড়া। ' পবিত্রতার কোনো গোপন প্রবেশদ্বার খোলার জন্য কোনো কৃচ্ছবত বা সন্নাসের প্রয়োজন নেই-এবং আল্লাহ যে-সব স হজাত কল্যাণকর গুণ দিয়ে সৃষ্টি করেছেন প্রতিটি মানুষকে সেগুলি থেকে বিচ্যুতিই তো পাপ।
তিন
অন্ধবিশ্বাস
আল আযহার ভ্রমন করতে গিয়ে শায়খ মুস্তফার কাছ থেকে যা শুনলেন.. "
আপনি যেসব প্রাচীন মুসলিম চিন্তাবিদের কথা উল্লেখ করলেন তারা স্বপ্নেও কখনো একথা ভাবেননি যে, ব হু শতাব্দী পর তাদের চিন্তার ধারাবাহিকতা বজায় না রেখে ও তার বিকাশ সাধন না করে, শুধু বারাবার ঘুরে ফিরে তার পুনরাবৃত্তি কররা হবে, যেন সেগুলি পরম ও অভ্রান্ত সত্য।
"
মুসলমানদের এই অন্ধবিশ্বাস তৈরী হবার জন্যই আজ তাদের এই অবস্হা। যা থেকে উনার ধারনা হয়,'" মুসলমানদের পতনের জন্য ইসলামের ক্রটি-বিচ্যুতি নয়, বরং ইসলামের আদর্শ মুতাবিক জীবন-যাপনে আমাদের ব্যর্থতাই দায়ী। "
চার
দাজ্জাল
মুহম্মদ আসাদ দাজ্জালের হাদিস ব্যাখ্যায় এই সভ্যতার অন্ধকার দিকের কথা বলতে গিয়ে বলেছেন........"এই রূপক কাহিনীটি কি আধুনিক কারিগরী সভ্যতার একটি যথোচিত বর্ণনা নয়? এ সভ্যতা হছ্ছে 'এক _চক্ষু' অর্থাৎ এ কেবল জীবলের একটি দিক, তার বৈষয়িক উন্নতির দিকে তাকায় এবং জীবনের রূহানী দিক সম্পর্কে এ বে-খবরএর কারিগরী তেলেসমাতির সাহায্যে মানুষকে দিয়েছে তার স্বাভাবিক সামর্থের বাইরে
অনেক দূরের বস্তু দেখার ও দূরের শব্দ শোনার ক্ষমতা, দিয়েছে ধারণাতীত গতিতে অসীম দূরত্ব অতিক্রম করার সামর্থ। এই সভ্যতার বৈজ্ঞানিক জ্ঞান দ্বারা 'বর্ষানো হয় বৃষ্টি এবং জন্মানো হয় তরুলতা' এবং মাটির নিচে থেকে উদঘাটত করা হয় অপ্রত্যাশিত ঐশ্বর্যের ভান্ডার। এই বিজ্ঞানের ওষুধ জীবন দেয় তাকে যার মৃত্যু মনে হয় অবশ্যম্ভাবী, অন্যদিকে এর যুদ্ব-বিগ্রহ এবং বৈজ্ঞানিক ধ্বংসলীলা ধ্বংস করে জীবনকে আর এর বৈষয়িক অগ্রগতি এতই প্রচন্ড এবং এতোই চোখ ঝলসানো যে, দুর্বল ঈমানের লোকেরা বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে, নিজের অধিকারেই এ হছ্ছে একজন 'খোদা', কিন্তু যারা তাদের স্রষ্টা সম্পর্কে সচেতন রয়েছে তারা স্পষ্টই বুঝতে পারে যে,'দজ্জালে'র পূজা করা মানে আল্লাহকে অস্বীকার করা...।
'
বইয়ের লিখা পড়ে জানা যায় কিভাবে ধাপে ধাপে ইসলামের বাকগুলি উনার কাছে দরা পড়ে। এভাবে একজন অজ্ঞেয়বাদীর কাছে আস্তে আস্তে সত্য উন্মোচিত হতে থাকে। একজন খোলামনের মানুষ হিসাবে সত্যকে মেনে নিতে উনি আর দেরী করেননি। উনার কোরআনের অসাধারন অনুবাদ, 'The Message of Quran' পড়লে বুঝা যায় ইসলাম উপলব্ধি করার ব্যাপারে উনার প্রজ্ঞা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।