আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহানবী (সাঃ) এর জন্ম এবং মক্কার ইহুদীর বেহুশ হওয়া । গীর্জায় মহানবী (সাঃ) এর ছবি ।

আল্লাহ ছাড়া আর কোন সৃষ্টিকর্তা নেই । হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল । ১. মক্কা মুকাররমায় জনৈক ইহুদী ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে অবস্হান করছিলো । যখন মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর জন্ম রজনী সমাগত হলো তখন সে কুরাইশদের মজলিসে এসে বসল এবং জিজ্ঞেস করলো আজ রাতে তোমাদের কারো কোন সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছে কি ? কুরাইশরা বললো- আমাদের জানা নাই । সে বললো- না ।

হে কুরাইশগণ ! আমার কথা মতো অনুসন্ধান করো । নিশ্চয়ই আজ রাত্রে সে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে । তিনি এই উম্মতের নবী । তার নাম আহমদ । তার দু-কাধের মাঝামাঝিতে একটি পশমাবৃত একটি চিহ্ন থাকবে ।

একথা শুনে কুরাইশরা মজলিস থেকে উঠে দাড়াল এবং ইহুদীর বক্তব্য শুনে বিস্ময় প্রকাশ করতে লাগলো । কুরাইশরা যখন সকলেই আপন আপন গৃহে ফিরে গেল তখন পরিবারের লোকদের কাছ থেকে শুনতে পেল, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল মুত্তলিবের ঘরে এক পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছেন , যার নাম রাখা হয়েছে মোহাম্মদ । এরপর তারা উক্ত ইহুদী লোকটির কাছে এসে বলল, আমাদের ওখানে একটি ছেলে জন্ম গ্রহণ করেছে । ইহুদী লোকটি কুরাইশদের কাছে এ খবর শুনার পর বলল, আমাকে সেই নবজাতক সন্তানের কাছে নিয়ে চলো । তারা তাকে হযরত আমিনার বাড়ীতে নিয়ে এলো ।

হুজুরে আকরাম (সাঃ) কে বাইরে নিয়ে আসা হলো । ইহুদী লোকটি মহানবী (সাঃ) এর পৃষ্ঠ দেশে সেই নিশানা অর্থাৎ মোহরে নবুয়ত দেখতে পেল এবং সঙ্গে সঙ্গে বেহুশ হয়ে মাটিতে পড়ে গেল । লোকটি যখন সম্বিত ফিরে পেল তখন কুরাইশরা বলল, আফসোস ! কি হলো তোমার ? ইহুদীটি বলল, বনী ইসরাঈল থেকে নবুয়তের ধারা বিদায় নিতে চলেছে এবং তৈারাত কিতাব এখন তাদের হস্তচ্যুত হয়ে গেল । এ নবজাত সন্তান বনী ইসরাঈলদেরকে মেরে ফেলবে আর তাদের আহবার ও ওলামাদেরকে কতল করবে । আরবীয়রা নবুয়তের নেয়ামত পেয়ে গেল ।

হে কুরাইশ গোত্র ! তোমাদের জন্য মোবারকবাদ । জেনে রেখো ! মাশরেক থেকে মাগরেব পর্যন্ত তোমাদের শান শওকত ছড়িয়ে পড়বে । ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন - হিশাম ইবনে উরওয়া আপন পিতা থেকে - হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) এর মাধ্যমে । ২. হযরত যুবাইর ইবনে মুতয়িম (রাঃ) থেকে বর্ণিত - তিনি বলেছেন, যে সময়ে আল্লাহতায়ালা তার নবী (সাঃ) কে প্রেরণ করলেন এবং নবুয়ত মক্কায় মশহুর হয়ে গেলো, তখন আমি শাম দেশের দিকে গেলাম । আমি যখন বসরায় পৌছলাম তখন নাসারাদের একটি জামাত এলো এবং আমাকে জিজ্ঞেস করলো , তুমি কি হেরেম মক্কা থেকে আসছো ? আমি বললাম, হ্যা ।

তারা আমাকে আবার প্রশ্ন করলো, 'তুমি কি সেই লোকটিকে চেনো যে নবুওয়তের দাবী করেছে ?' আমি বললাম, 'হ্যা, আমি তাকে চিনি । ' তখন তারা আমার হাত ধরে ফেলল এবং আমাকে একটি ইবাদত খানায় নিয়ে গেলো, যেখানে অসংখ্য ছবি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিলো । তারা বললো, এ ছবি গুলো খুব ভালো ভাবে লক্ষ্য করে দেখো দেখি , এগুলির কোনটির সাথে তার সাদৃশ্য আছে কিনা ? আমি এক এক করে প্রত্যেকটি ছবি খুব ভালো ভাবে প্রত্যক্ষ করে দেখলাম । কিন্তু কোনটির সাথে নবী করিম (সাঃ) আর আকৃতির পেলাম না । তারপর তারা আমাকে আরো একটি বড় ইবাদত খানায় নিয়ে গেলো ।

সেখানে পূর্বের তুলনায় আরো বেশী ছবি ঝুলন্ত ছিলো । তারা বললো, দেখো দেখি সমস্ত ছবির কোনটির সঙ্গে সেই মোবারক আকৃতির মিল আছে ? দেখতে দেখতে অকস্মাৎ হুজুর আকরাম (সাঃ) এবং হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) এর আকৃতি আমার দৃষ্টি গোচর হলো । দেখলাম হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) হুজুর পাক (সাঃ) এর হাটু মোবরক ধরে বসে আছেন । তখন তারা আমাকে জিজ্ঞেস করল, 'এ আকৃতি বা ছবির লোক কি কখনও তোমার দৃষ্টি গোচর হয়েছে ? আমি বললাম, হ্যা । তবে সাথে সাথেই আমার মনে একটা চিন্তা খেলে গেলো যে, এখনই সব কিছু বলা ঠিক হবে না ।

দেখা যাক, এরা আর কি বলে । তারা হুজুরে পাক (সাঃ) এর প্রশংসা ও গুণ কীর্তন করল ( যা তাদের কিতাবে লিখিত রয়েছে ) । এরপর আমি বললাম, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনিই সেই নবী যার বর্ণনা প্রদান করা হলো । অতঃপর তারা আমাকে পুনরায় প্রশ্ন করলো, তুমি কি জানো এই লোকটি কে ? যিনি তার জানু মোবারক ধরে বসে আছেন । আমি বললাম, ইনি তার খাছ সহচর এবং তার পরে ইনিই হবেন তার প্রধান খলিফা ।

তবে আমার ভয় হচ্ছে কুরাইশরা না জানি তাকে (নবী (সাঃ)) হত্যা করে ফেলে । আমার একথা শুনে তারা বললো, খোদার কসম ! কুরাইশরা তাকে কক্ষণও হত্যা করতে পারবে না । তিনি আখেরী যমানার নবী । আল্লাহতায়ালা তাকে সকলের উপর বিজয়ী করে রাখবেন । সূত্রঃ মাদরিজ - উন নবুয়ত ।

শায়েখ আব্দুল হক মোহাদ্দেছে দেহলভী । প্রথম খন্ড । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.